Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

কোন সাপের বিষ কেমন, তারা কতটা বিপদজনক, চিকিৎসাই বা কী, এমন নানা প্রশ্নের উত্তর দিলেন সর্পাঘাতের বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ দয়ালবন্ধু মজুমদার।

প্রতি বছরই সাপের কামড়ে প্রচুর মানুষ আক্রান্ত হন। অনেকে মারাও যান। তবে এখনও সাপের কামড়ের উপসর্গ চিনতে ভুল করেন বহু মানুষ। কোন সাপের বিষ কেমন, তারা কতটা বিপদজনক, চিকিৎসাই বা কী, এমন নানা প্রশ্নের উত্তর দিলেন সর্পাঘাতের বিশিষ্ট চিক…

 




প্রতি বছরই সাপের কামড়ে প্রচুর মানুষ আক্রান্ত হন। অনেকে মারাও যান। তবে এখনও সাপের কামড়ের উপসর্গ চিনতে ভুল করেন বহু মানুষ। কোন সাপের বিষ কেমন, তারা কতটা বিপদজনক, চিকিৎসাই বা কী, এমন নানা প্রশ্নের উত্তর দিলেন সর্পাঘাতের বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ দয়ালবন্ধু মজুমদার।

কত প্রকারের সাপ দেখা যায় রাজ্যে? 

মূলত রাজ্যে চার রকমের সাপের উপদ্রবই বেশি। কালাচ, চন্দ্রবোড়া, কেউটে এবং গোখরো। 

কোন সাপ কোন জেলায় পাওয়া যায়? 

চন্দ্রবোড়া শুধুমাত্র দক্ষিণবঙ্গে দেখা যায়। এদের অস্তিত্ব উত্তরবঙ্গে নেই। কালাচ অবশ্য রাজ্যের সর্বত্রই পাওয়া যায়। সুন্দরবনে কেউটের বেশি দেখা মেলে। এখানে আবার গোখরো নেই। তবে গ্রামের দিকে কেউটে এবং গোখরোর কামড় তুলনামুলক বেশি দেখা যায়। 

কোন সময়ে এদের উপদ্রব বেশি হয়? 

মূলত জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে সাপ গর্তেই ঢুকে থাকে। বর্ষাকালে এদের বেশি দেখা যায়। আর তখনই মানুষ বেশি আক্রান্ত হন।  

কোন সাপের বিষ কেমন?

গোখরো, কালাচ ও কেউটের বিষ হল নিউরোটক্সিক (স্নায়ুকে আক্রান্ত করে) এবং চন্দ্রবোড়ার বিষ হেমোটক্সিক (কিডনি ফেলিওর করায়)। প্রত্যেকটির ক্ষেত্রে সঠিক সময়ে চিকিৎসা যদি না হয়, তাহলে রোগীর মৃত্যু হতে পারে।  

কোন সাপের কামড়ের উপসর্গ কী? 

কালাচের কামড় সঙ্গে সঙ্গে বোঝা যাবে না। এক কথায় যাকে বলে ‘পেইনলেস বাইট’। এমনকী শরীরে কোনও দাগও হয় না। চার পাঁচ ঘণ্টা পর আক্রান্তের চোখের পাতা পড়তে শুরু করে। এই উপসর্গ দেখেই কালাচের কামড় ধরা হয়। চন্দ্রবোড়ার কামড়ের পর ধীরে ধীরে জ্বালাপোড়ার অনুভূতি হয়। কিছুক্ষণ পর থেকে শরীরের ভিতরে এবং বাইরে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। চিকিৎসায় দেরি হলে, কিডনি বিকল হতে শুরু করে। গোখরো এবং কেউটে কামড়ের পর কামড়ানোর জায়গাটি ফুলতে শুরু করে এবং সেখানে জ্বালা করে। যথাযথ সময়ে চিকিৎসা না হলে, সব সাপের বিষই মানুষের স্নায়ু পঙ্গু করে দেয়। ফলে মৃত্যু হতে পারে।  

সাপের কামড়ের চিকিৎসা কী? 

সবার ক্ষেত্রেই একই চিকিৎসা। অর্থাৎ, পলিভ্যালেন্ট অ্যান্টিভেনম দিতে হবে রোগীদের। তবে গোখরো এবং কেউটের জন্য এই ওষুধের সঙ্গে অ্যাট্রোপিন ও নিওস্টিগমিন দিতে হবে। 

সাপ কামড়ানোর পর কী করা উচিত আক্রান্তর বা তাঁর আত্মীয়ের?

চিকিৎসার পরিভাষায় ‘রুল অব হান্ড্রেড’ মানতে হবে। সেটা হল, কামড়ানোর পর থেকে ১০০ মিনিটের মধ্যে হাসপাতালে এসে ১০০ এমএল অ্যান্টিভেনম নিলে ১০০ শতাংশ প্রাণ বাঁচার সম্ভাবনা থাকে। অনেক সময় মানুষ বুঝতে পারেন না আদৌ সাপে কামড়েছে কি না। যেমন কালাচের ক্ষেত্রে কোনও দাগ থাকে না। তাহলেও সন্দেহ হলেই দ্রুত হাসপাতালে আসতে হবে। দেরি হলেই জীবনের ঝুঁকি থেকে যাবে।  

সাপে কাটা থেকে কী করে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে?

অন্ধকারে মাঠ-ঘাটে কিংবা ঝোপঝাড় দিয়ে হাঁটাচলা করা চলবে না। এটা একেবারে মেনে চলতে হবে। যদি একান্ত যেতেই হয় তাহলে হাতে লাঠি এবং টর্চ রাখতে হবে। লাঠি দিয়ে ঝোপঝাড়ে বাড়ি মারলে, সাপ সেখান থেকে চলে যাবে। আরও একটা বিষয় হল, কালাচ সাধারণত বিছানায় উঠে পড়ে। তাই মেঝেতে ঘুমানো চলবে না। বিছানায় মশারি টাঙিয়ে শুতে হবে। 

সাপের কামড়ের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের ভূমিকা কী?

সাপের কামড়ের উপসর্গ চেনা খুব জরুরি। ডাক্তারদের এই ক্ষেত্রে ভালো প্রশিক্ষণ না থাকলে সমস্যা হতে পারে। কারণ অনেক সময় সাপের কামড়ের পর রোগীরা পেট ব্যথা, বমি ইত্যাদি উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসেন। অন্যরকম চিকিৎসা হলে জীবনহানি হতে পারে। তাই চিকিৎসকদের সঠিক ও পর্যাপ্ত ধারণা থাকা অত্যন্ত আবশ্যিক।

No comments