বাসের ভিতরে টাকা ছিনতাইভিড় বাসে স্বর্ণকারের পায়ের উপর পা দিয়ে চেপে ব্যাগ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটল! মুহূর্তের মধ্যে বাসের জানালা দিয়ে লাফ দিয়ে নেমে একজনকে জাপটে ধরে ‘চোর চোর’ বলে চেঁচালেন স্বর্ণ ব্যবসায়ী। ওই স্বর্ণকারে…
বাসের ভিতরে টাকা ছিনতাই
ভিড় বাসে স্বর্ণকারের পায়ের উপর পা দিয়ে চেপে ব্যাগ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটল! মুহূর্তের মধ্যে বাসের জানালা দিয়ে লাফ দিয়ে নেমে একজনকে জাপটে ধরে ‘চোর চোর’ বলে চেঁচালেন স্বর্ণ ব্যবসায়ী। ওই স্বর্ণকারের নাম মিলন দণ্ডপাট। বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানার জালালপুর গ্রামে। রবিবার দুপুর ২টো নাগাদ পাঁশকুড়া থানার মেচগ্রাম-ঘাটাল সড়কে যশোড়া বাসস্টপে ওই নাটকীয় ঘটনা ঘটে। পাঁশকুড়া থানার পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে হাতেনাতে ধরে এক দুষ্কৃতীকে। ধৃতকে জেরা করে কালীপুজোর রাতেই মেদিনীপুর শহরের হোটেল থেকে আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।
পাঁশকুড়া থানার আইসি আশিস মজুমদার বলেন, মোট ছ’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মোট ১৫ লক্ষ টাকা খোয়া গিয়েছে বলে ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ী জানিয়েছেন। ধৃতদের কাছ থেকে ৯০ হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে।
মিলনবাবুর সোনার অলঙ্কার তৈরির কারখানা আছে। কলকাতার বড়বাজারে নিজের দোকান আছে। খড়্গপুরের এক ব্যবসায়ী তাঁকে গয়না তৈরির বরাত দিয়েছিলেন। রবিবার খড়্গপুর শহরে গিয়ে সেই গয়নার ডেলিভারি দেন। তারপর ১৫ লক্ষ টাকা পেমেন্ট নিয়ে খড়্গপুরের চৌরঙ্গীতে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে এসবিএসটিসি বাসে চড়েন। বেলা ১টা ১৫ মিনিট নাগাদ পাঁশকুড়ার মেচগ্রামে নামেন। এরপর দাসপুরে বাড়িতে ফেরার জন্য পাঁশকুড়া-ঘাটাল রুটে বাসের অপেক্ষায় মেচগ্রামে দাঁড়িয়েছিলেন। বাসে প্রচণ্ড ভিড় দেখে পর পর তিনটি বাস ছেড়ে দেন। পরের বাসে ভিড় কিছুটা কম দেখে তিনি উঠে পড়েন। মেচগ্রামের পরের বাসস্টপ বাঁশতলায় অবশ্য অনেক যাত্রী বাসে চড়েন। তাতে বাসে উপচে পড়া ভিড় হয়।
বাসে দাঁড়িয়েই মিলনবাবু টাকা ভর্তি ব্যাগ বুকের মধ্যে জড়িয়ে রাখছিলেন। কিন্তু, ভিড় বাসে ওই ব্যাগ বুকে আগলে রাখতে গিয়ে কারও বসে থাকা যাত্রীদের মাথায় বার বার লাগছিল। তাঁরা বিরক্ত হওয়া অগত্যা ব্যাগটিকে বাঙ্কারে রেখে হাতল ধরে রেখেছিলেন। বাস যশোড়া বাসস্টপে ঢোকার এক-দু’মিনিট আগে আচমকা মিলনবাবুর একটি পায়ে একজন পা দিয়ে সজোরে আঘাত করে। পায়ের দিকে নজর ঘোরাতেই মুহূর্তে ব্যাগ থেকে সব টাকা বের করে নেওয়া হয়। তারপর বাস স্টপ দিতেই পাঁচ-ছ’জন হুড়মুড় করে নেমে যায়। দ্রুত বাস ছেড়ে দেয়। ব্যাগের চেন টানা এবং খালি দেখে মিলনবাবু বাসের বন্ধ দরজার উপরে জানালা দিয়ে লাফ দিয়ে নেমে পড়েন। সন্দেহজনক একজনের কলার চেপে ধরে ‘চোর চোর’ চিৎকার করেন। গ্যাংয়ের বাকিরা তাকে ছাড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালায়। কিন্তু, স্থানীয়রা জড়ো হওয়ায় সেটা করতে পারেনি। স্থানীয় একটি ক্লাবের সদস্যরা পাঁশকুড়া থানায় খবর দেওয়ার পর পুলিস গিয়ে দুষ্কৃতী এবং মিলনবাবুকে থানায় নিয়ে যায়।
অভিযোগকারী স্বর্ণকার মিলন দণ্ডপাট বলেন, ছিনতাইয়ের ভয়ে পর পর ভিড় বাস ছেড়েছি। অথচ, শেষপর্যন্ত আশঙ্কাই সত্যি হল। এতগুলো টাকা না পেলে আমার বিরাট ক্ষতি হয়ে যাবে। ধৃতদের প্রত্যেকের কাছে ব্যাগ ছিল। সেই ব্যাগের মধ্যে টাকা থাকার কথা। আমি আশা করব, পুলিস সব টাকা ফেরাতে উদ্যোগী হবে।
No comments