সরকারি টাকায় গড়ে ওঠা শৌচাগারের ছাদ দখল করে চলছে শাসক দলের হলদিয়া ব্লক পার্টি অফিস
সরকারি টাকায় গড়ে ওঠা শৌচাগারের ছাদ দখল করে চলছে তৃণমূল কংগ্রেসের হলদিয়া ব্লক পার্টি অফিস । সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হাজার লোকের আনাগোনা । কোলাহ…
সরকারি টাকায় গড়ে ওঠা শৌচাগারের ছাদ দখল করে চলছে শাসক দলের হলদিয়া ব্লক পার্টি অফিস
সরকারি টাকায় গড়ে ওঠা শৌচাগারের ছাদ দখল করে চলছে তৃণমূল কংগ্রেসের হলদিয়া ব্লক পার্টি অফিস । সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হাজার লোকের আনাগোনা । কোলাহল, ব্যস্ততা । আর তা নিয়েই জোরালো প্রতিবাদ, আপত্তি তুলেছে স্থানীয় ব্রজলালচক বাজার কমিটি । শৌচাগার দখল মুক্ত করার দাবি তুলে সরব হয়েছেন বাজার কমিটির লোকজন ।
হলদিয়া-কোলাঘাট ১১৬ নম্বর জাতীয় সড়কের গায়ে ব্রজলালচক মোড় এবং বিস্তীর্ণ বাজার । ব্রজলালচক চৌরাস্তা মোড় থেকে চৈতন্যপুরগামী রাজ্য সড়কের বাম দিকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের জায়গায় এবং তাদের আর্থিক সহযোগিতায় গড়ে উঠেছে বড় মাপের শৌচাগার । কুড়ি বছর আগে গড়ে ওঠা শৌচাগারটি বেশ কিছুদিন অযত্নে পড়েছিল । পরবর্তীকালে জেলা পরিষদের দেওয়া ৭ লাখেরও বেশি টাকায় শৌচাগারটি বছর আড়াই আগে পুনর্গঠন করা হয় । বাজারের দোকানদার, বাজারে আসা লোকজন সকলে স্বস্তি পেয়েছিলেন । কিন্তু ওই শৌচাগারের ছাদে তৃণমূল কংগ্রেসের পার্টি অফিস নির্মিত হওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছে । ব্রজলালচক বাপুজী বাজার কমিটির সভাপতি সরোজ খুঁটিয়া অভিযোগ করে বলেন, " বাজারের লোকজনের জন্য সরকারি টাকায় শৌচাগার নির্মিত হলেও তার উপরে তৃণমূলের পার্টি অফিস রয়েছে । মহিলারা যেতে পারেন না । জেলা পরিষদের জায়গায় শৌচাগার, তার উপরে পার্টি অফিস । যদিও জেলা পরিষদকে বিষয়টি জানানো হয়নি । বলতে গেলে শাসকদলের তরফ থেকে প্রত্যাঘাত আসতে পারে ।" এই শৌচাগারের প্রসঙ্গ টেনে অসন্তোষ উগরে দিলেন বাজার কমিটির সম্পাদক লালু কপাট । দাবি জানিয়েও কাজ হয়নি । তেমন হতাশা ও প্রকাশ পেল তার কথাতে । তিনি বলেন, " শৌচাগারটি সুন্দর করার জন্য ২২ বছর ধরে লড়াই করে আসছি । অনেক পরে জেলা পরিষদের টাকায় সংস্কার কাজ হলেও তার উপরে গড়ে ওঠা পার্টি অফিস অস্বস্তিকর । শাসকদলের সঙ্গে মানিয়ে চলতে হয় । তাই কষ্ট সহ্য করে চলেছি আমরা ।" তবে পার্টি অফিস গড়ার পিছনে কোন অন্যায় দেখছেন না হলদিয়া ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি, তথা হলদিয়া পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ আলোকরঞ্জন দাস । এই অফিস থেকে বিভিন্ন পরিষেবা পাওয়ার সুবিধা পান এলাকার মানুষ । সে ক্ষেত্রে শৌচাগারের ছাদে পার্টি অফিস থাকার বিষয় কোনো পক্ষের প্রশ্ন থাকতে পারে বলে তিনি মনে করেন না । আলোকবাবু জানান, " শৌচাগারের ছাদে আমাদের খরচেই আমরা পার্টি অফিস বানিয়েছি । জেলা পরিষদের কাছ থেকে লিজ সিস্টেমে এই পার্টি অফিসটি আমরা ব্যবহার করি । এর পেছনে বাজার কমিটির কোন ভূমিকা নেই । শৌচাগার নির্মাণ থেকে তার পুনর্গঠন, সবটাই আমাদের দ্বারাই হয়েছে ।" তবে জেলা পরিষদ, পার্টি অফিসের জন্য আদৌ কোন লিজ দিয়েছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাজার কমিটির বেশকিছু সদস্য । তারা সেই লিজ দেখতে চেয়েছেন । সরকারি জায়গার উপর এই পার্টি অফিস নিয়ে সরগরম স্থানীয় রাজনৈতিক মহল । বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার স্থানীয় সদস্য সনাতন মাইতি প্রতিবাদের সুরে বলেন, " সরকারি জায়গায় কোন বিশেষ রাজনৈতিক দলের পার্টি অফিস কোনভাবেই কাম্য না । অবিলম্বে ওই পার্টি অফিস ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া উচিত । " এখন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ কি করে সেটাই দেখার ।
No comments