Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

মার্কসবাদী-বিপ্লবী, চিকিৎসক, বুদ্ধিজীবীর এর্নেস্তো চে গেভারা প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি

মার্কসবাদী-বিপ্লবী, চিকিৎসক, বুদ্ধিজীবীর এর্নেস্তো চে গেভারা   প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি
এর্নেস্তো চে গেভারা (জন্ম : ১৪ জুন, ১৯২৮ – মৃত্যু : ৯ অক্টোবর, ১৯৬৭) ছিলেন একজন আর্জেন্টিনীয় মার্কসবাদী, বিপ্লবী, চিকিৎসক, লেখক, বুদ্ধিজীবী…

 



মার্কসবাদী-বিপ্লবী, চিকিৎসক, বুদ্ধিজীবীর এর্নেস্তো চে গেভারা   প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি


এর্নেস্তো চে গেভারা (জন্ম : ১৪ জুন, ১৯২৮ – মৃত্যু : ৯ অক্টোবর, ১৯৬৭) ছিলেন একজন আর্জেন্টিনীয় মার্কসবাদী, বিপ্লবী, চিকিৎসক, লেখক, বুদ্ধিজীবী, গেরিলা নেতা, কূটনীতিবিদ, সামরিক তত্ত্ববিদ এবং কিউবার বিপ্লবের প্রধান ব্যক্তিত্ব। তাঁর প্রকৃত নাম ছিল এর্নেস্তো গেভারা দে লা সের্না (স্পেনীয়: Ernesto Guevara de la Serna)। তবে তিনি সারা বিশ্বে 'লা চে' বা কেবলমাত্র 'চে' নামেই পরিচিত। মৃত্যুর পর তাঁর শৈল্পিক মুখচিত্রটি একটি সর্বজনীন প্রতিসাংস্কৃতিক প্রতীক এবং এক জনপ্রিয় সংস্কৃতির বিশ্বপ্রতীকে পরিণত হয়।


তরুণ বয়সে ডাক্তারি ছাত্র হিসেবে চে সমগ্র লাতিন আমেরিকা ভ্রমণ করেছিলেন। এই সময় এই ষসব অঞ্চলের সর্বব্যাপী দারিদ্র্য তাঁর মনে গভীর রেখাপাত করে। এই ভ্রমণকালে তাঁর অর্জিত অভিজ্ঞতা ও পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে তিনি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, এই অঞ্চলে বদ্ধমূল অর্থনৈতিক বৈষম্যের স্বাভাবিক কারণ হল একচেটিয়া পুঁজিবাদ, নব্য ঔপনিবেশিকতাবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ; এবং এর একমাত্র সমাধান হল বিশ্ব বিপ্লব। এই বিশ্বাসের বশবর্তী হয়ে চে রাষ্ট্রপতি জাকোবো আরবেনজ গুজমানের নেতৃত্বাধীন গুয়াতেমালার সামাজিক সংস্কার আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৫৪ সালে সিআইএ-এর ষড়যন্ত্রে গুজমানকে ক্ষমতাচ্যুত করা হলে চে-র বৈপ্লবিক আদর্শ চেতনা বদ্ধমূল হয়। পরবর্তীকালে মেক্সিকো সিটিতে বসবাসের সময় তাঁর সঙ্গে রাউল ও ফিদেল কাস্ত্রোর আলাপ হয়। চে তাঁদের ছাব্বিশে জুলাই আন্দোলনে যোগ দেন। মার্কিন-মদতপুষ্ট কিউবান একনায়ক ফুলগেনসিও বাতিস্তাকে উৎখাত করার জন্য গ্রানমায় চড়ে সমুদ্রপথে কিউবায় প্রবেশ করেন। অনতিবিলম্বেই চে বিপ্লবী সংঘের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ড পদে তাঁর পদোন্নতি হয় এবং বাতিস্তা সরকারকে উৎখাত করার লক্ষ্যে দুই বছর ধরে চলা গেরিলা সংগ্রামের সাফল্যের ক্ষেত্রে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।


কিউবার বিপ্লবের পর চে নতুন সরকারে একাধিক ভূমিকা পালন করেছিলেন। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য, বিপ্লবী আদালতে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে অভিযুক্তদের আপিল পুনর্বিবেচনা ও তোপচিদল কর্তৃক মৃত্যুদণ্ড প্রদান, শিল্পোদ্যোগ মন্ত্রী হিসেবে খামার সংস্কার আইন প্রবর্তন, কিউবার জাতীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ও সামরিক বাহিনীর ইনস্ট্রাকশনাল ডিরেক্টরের ভূমিকা পালন, এবং কিউবান সমাজতন্ত্রের প্রচারে বিশ্বপর্যটন। এই পদাধিকারের কল্যাণে তিনি মিলিশিয়া বাহিনীকে প্রশিক্ষণ প্রদানের সুযোগ পান; ফলতঃ এই বাহিনী পিগস উপসাগর আক্রমণ করে তা পুনর্দখলে সক্ষম হয়। কিউবায় সোভিয়েত পরমাণু ব্যালিস্টিক মিসাইল আনার ক্ষেত্রেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। চে ছিলেন এক বিশিষ্ট লেখক ও ডায়েরি-লেখক। গেরিলা যুদ্ধের উপর তিনি একটি প্রভাবশালী ম্যানুয়েল রচনা করেন। তরুণ বয়সে দক্ষিণ আফ্রিকায় মোটরসাইকেলে ভ্রমণের স্মৃতিকথাটিও তাঁর অত্যন্ত জনপ্রিয় রচনা। বৃহত্তর বিপ্লবে অংশ নেওয়ার উদ্দেশ্যে তিনি ১৯৬৫ সালে কিউবা ত্যাগ করেন। প্রথমে কঙ্গো-কিনসহাসায় তাঁর বিপ্লব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। এরপর তিনি বলিভিয়ায় বিপ্লবে অংশ নেন। এখানেই সিআইএ-মদতপুষ্ট বলিভীয় সেনাদের হাতে বন্দী ও নিহত হন চে।

চে গেভারা একাধারে ইতিহাসের এক নন্দিত ও নিন্দিত চরিত্র। বিভিন্ন জীবনী, স্মৃতিকথা, প্রবন্ধ, তথ্যচিত্র, গান ও চলচ্চিত্রে তাঁর চরিত্রের নানা দিক ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। 'টাইম' পত্রিকার বিংশ শতাব্দীর সর্বাপেক্ষা প্রভাবশালী ১০০ জন ব্যক্তির তালিকায় তাঁর নাম প্রকাশিত হয়। আবার গেরিইয়েরো এরোইকো নামে আলবের্তো কোর্দার তোলা চে-র বিখ্যাত আলোকচিত্রটিকে "বিশ্বের সর্বাপেক্ষা প্রসিদ্ধ আলোকচিত্র" হিসেবে ঘোষিত।



No comments