হলদিয়াতে অধিক গ্রহণ জায়গায় সাবমার্সিবল বসানো নিয়ে দ্বন্দ্বে হলদিয়া পৌরসভা ও বন্দর কর্তৃপক্ষ
স্বাধীনতার ৭৫ বৎসর পরে হলদিয়া পৌর এলাকায় বিষ্ণুরামচক ও সাঁওতালচক এলাকায় বিদ্যুতের পর এবার পানীয় জলের জন্য সাবমার্সিবল পাম্প বসানো…
হলদিয়াতে অধিক গ্রহণ জায়গায় সাবমার্সিবল বসানো নিয়ে দ্বন্দ্বে হলদিয়া পৌরসভা ও বন্দর কর্তৃপক্ষ
স্বাধীনতার ৭৫ বৎসর পরে হলদিয়া পৌর এলাকায় বিষ্ণুরামচক ও সাঁওতালচক এলাকায় বিদ্যুতের পর এবার পানীয় জলের জন্য সাবমার্সিবল পাম্প বসানো নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়াল হলদিয়া পুর কর্তৃপক্ষ ও হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষ। হলদিয়া টাউনশিপ লাগোয়া পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিষ্ণুরামচক ও সাওতানচক এলাকায় পাম্প বসাতে গিয়ে দু'পক্ষের টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। বাসিন্দাদের দাবি মেনে ওই এলাকায় পাম্প বসানোর কাজ শুরু করে হলদিয়া পুর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বন্দরের জমিতে ওই পাম্প বসাতে বন্দর কর্তৃপক্ষের কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। দু'পক্ষের টানাপোড়েনের জেরে আপাতত বন্ধ হয়ে গিয়েছে পানীয় জলের পাম্প বসানোর কাজ।
পুর কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বন্দর কর্তৃপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের রায় মানতে চাইছে না, উন্নয়নের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। এবার পুরভোটের মুখে কেন্দ্র-রাজ্যের সংঘাতের প্রভাব পড়েছে হলদিয়ায় কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের দুই সংস্থায়। ওই ঘটনায় পানীয় জলের সঙ্কটে পড়েছেন পুরসভার কয়েক হাজার বাসিন্দা।জানা গিয়েছে, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে একাধিক টিউবওয়েল খারাপ হয়ে যাওয়ায় পানীয় জলের সঙ্কট তৈরি হয়েছে কয়েক মাস ধরে। কিছুদিন আগে পুরসভা সিদ্ধান্ত নেয়, বিষ্ণুরামচক ও সাওতানচকে হাত নলকূপের বদলে বিদ্যুৎচালিত সাবমার্সিবল পাম্প বসানো হবে। প্রায় ১০ লক্ষ টাকা খরচে ৪টি সাবমার্সিবল পাম্প বসানোর কাজ শুরু হয়। কিন্তু একটি পাম্প বসানোর সময়েই দেখা দেয়। বিপত্তি। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, বন্দরের লোকজন এসে কাজে বাধা দিয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের বাধায় আপাতত পাম্প বসানোর কাজ বন্ধ রয়েছে। এরপরই বন্দর কর্তৃপক্ষ কড়া চিঠি দিয়ে পাম্প বসানোতে তাদের আপত্তির কথা জানায় পুর প্রশাসককে। বন্দর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, বিষ্ণুরামচক ও সাওতানচক এলাকার জমি বন্দর অধিগৃহীত। ওই জমিতে পুর কর্তৃপক্ষ নিযুক্ত একটি ঠিকাদার সংস্থা বন্দরের অনুমতি ছাড়াই পাম্প বসাচ্ছিল। ওই সংস্থাটি বন্দর বা রাজ্যের স্টেট ওয়াটার ইনভেস্টিগেশন ডাইরেক্টরেটের কোনও “নো অবজেকশন' সার্টিফিকেট দেখাতে পারেনি। সেজন্য পুর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার (প্রশাসন) প্রবীণকুমার দাস বলেন, বিষ্ণুরামচক ও সাওতানচক এলাকা বন্দরের অধিগৃহীত জমির মধ্যে পড়ে। হাইকোর্টের সাম্প্রতিক নির্দেশ মোতাবেক কাজ করার চেষ্টা হবে।
এলাকায় বেআইনিভাবে দখলদারদের উচ্ছেদ করতে বলা হয়েছে। সেখানে কীভাবে পুর কর্তৃপক্ষ পাম্প বসাচ্ছে? ওদের পাম্প বসানোর কাজ বন্ধ রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, জানুয়ারি মাসের প্রথমে বিষ্ণুরামচক ও সাওতানচকে রাজ্য সরকারের নির্দেশে বিদ্যুত সংযোগ দেওয়া হয়েছে প্রায় এক হাজার পরিবারকে। ৪ কোটি টাকা খরচে ১৮টি ট্রান্সফরমার বসিয়ে বিদ্যুদয়ন করা হয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় সাবমার্সিবল বসানো যাচ্ছিল না। পুর এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগের পরই পাম্প বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যেহেতু পাম্পগুলি কম ক্ষমতা সম্পন্ন, সেজন্য সুইডের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়নি। পুর কর্তৃপক্ষের যুক্তি, সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট রায় আছে, যদি কোথাও জমি নিয়ে বিতর্ক বা মামলা থাকে, সেই মামলা চলতে থাকবে। কিন্তু সেই জমিতে বসবাসকারীদের জল এবং বিদ্যুৎ পাওয়ার অধিকার রয়েছে। হলদিয়ার মহকুমা শাসক এবং পুর প্রশাসক সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, মানুষের জল ও বিদ্যুৎ পাওয়ার অধিকার রয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ একটি চিঠি পাঠিয়েছে। এনিয়ে আলোচনার মাধ্যমে ফয়সলা করার চেষ্টা হবে।
No comments