ট্রসুইডেনের নোবেল প্রাইজ মিউজিয়ামের রীতি হল প্রত্যেক পুরস্কার প্রাপকের ব্যবহার করা একটি বা দুটি জিনিস স্মারক হিসেবে রেখে দেওয়া | জিনিস মানে, যেমন তেমন কিছু নয়। সেটিকে হতে হবে এমন কিছু, যা সেই নোবেল প্রাপকের কাজ বা সৃষ্টির সঙ্গে স…
ট্র
সুইডেনের নোবেল প্রাইজ মিউজিয়ামের রীতি হল প্রত্যেক পুরস্কার প্রাপকের ব্যবহার করা একটি বা দুটি জিনিস স্মারক হিসেবে রেখে দেওয়া | জিনিস মানে, যেমন তেমন কিছু নয়। সেটিকে হতে হবে এমন কিছু, যা সেই নোবেল প্রাপকের কাজ বা সৃষ্টির সঙ্গে সম্পর্কিত । পুরস্কার প্রাপকরাই বেছে দেন সেই জিনিস । সেই মিউজিয়ামে রয়েছে একটি বাইসাইকেল | কিভাবে এল এই সাইকেলটি ?
এই সাইকেলটি ছিল নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন - এর | অমর্ত্য সেন লিখছেন,"নোবেল মিউজিয়ামে প্রর্দশনীর জন্য দীর্ঘ মেয়াদী ধার হিসেবে আমার কাজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত দুটো বস্তু নোবেল ফাউন্ডেশন আমার কাছে চাইল | কিছুটা ইতস্তত সহকারে আমি নোবেল মিউজিয়ামকে ' আর্যভটীয় ' ( ৪৯৯ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে রচিত গণিত বিষয়ক বিখ্যাত সংস্কৃত শাস্ত্র) যেটা থেকে আমি খুব উপকৃত হয়েছি সেই বইটি এবং আমার পুরোনো বাইসাইকেলটা যেটা আমার স্কুল জীবন থেকেই সঙ্গী ছিল সেটি তাদের দিলাম।
১৯৪৩ সালের বাংলার দুর্ভিক্ষ নিয়ে যখন অধ্যায়ন করছিলাম তখন অগম্য সব স্থান যেমন পুরনো খামার বাড়ি, গুদাম ঘর থেকে আমি তথ্য সংগ্রহ করতে সাইকেল ব্যবহার করতাম। এছাড়াও শান্তিনিকেতনের আশেপাশের গ্রামের পাঁচ বছর বয়স থেকে শুরু বিভিন্ন বয়স গ্রুপের বালক বালিকাদের ওজন মাপতে একটি ওজন মাপার যন্ত্র সাইকেলে বয়ে নিয়ে যেতাম। লিঙ্গ-বৈষম্যে এবং মেয়েদের আপাত বঞ্চনার পর্যায়ক্রমিক যে ছবিটি ফুটে উঠত তার অন্বেষণ চালাতাম। .....আমার উঠতি বয়সে যে সাধারণ অ্যাটলাস সাইকেলটি মা-বাবার থেকে আমি পেয়েছিলাম সেটি প্রাপ্ত বয়স্কদের সাইকেল থেকে কম উচ্চতার ছিল। কিন্তু আমি এটা পঞ্চাশ বছরের বেশি সময় ধরে ব্যবহার করেছি , 1945 -- 1998, এরপর থেকে এটি নোবেল মিউজিয়ামের অধীনে। সাইকেলটি শুধুমাত্র শান্তিনিকেতনের মধ্যে দ্রুত চলাচলের জন্য কাজে লাগেনি বরং আশেপাশের গ্রামের আদিবাসী বাচ্চাদের যাদের প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগ ছিল না তাদের জন্য নাইট স্কুল যখন আমরা শুরু করলাম তখন যাতায়াতের জন্য এটা কাজে লেগেছিল। আমার ক্লাসের কিছু বন্ধু এবং এই নাইট স্কুলটির শিক্ষক তাদের কোনো সাইকেল ছিল না। তাই তাদেরকে আমার সাইকেলের পেছনে এমনকি সামনের বারের উপর না বসিয়ে আমার সাইকেল চালানো খুব বিরল ঘটনা ছিল। "
সমাজের সবচেয়ে নিচুস্তরের নিজের গবেষণার বিষয়বস্তু বানিয়েছিলেন অমর্ত্য সেন | গবেষণার খাতিরে পুত্র সন্তান ও কন্যা সন্তানের বাহ্যিক পার্থক্য তুলে ধরার চেষ্টা করতেন মিস্টার সেন | এর জন্য একজন সহকারী নিয়োগ করেছিলেন অমর্ত্য সেন। তাঁর কাজ ছিল গ্রাম বাংলার কন্যা ও পুত্র সন্তানের ওজন পরিমাপ করে অমর্ত্য সেনকে সাহায্য করা। কিন্তু এতে প্রতিবন্ধকতাও ছিল। অনেক শিশু চাইতেন না ওজন করাতে। কামড়ে-আঁচড়ে দিত অমর্ত্য সেনের নিয়োগ করা সেই সহকারীকে। নোবেল কমিটির এক কর্তা "ইকোনমিক টাইমস" কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, "প্রথমে অমর্ত্য সেন তাঁর ছাত্রদের সহযোগিতা চেয়েছিলেন। কিন্তু ক্যাম্পাস ছেড়ে ফিল্ড ওয়ার্ক করার সেই প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছিলেন ছাত্র-ছাত্রীরা। এরপরেই নিজেও সাইকেল নিয়ে বেড়িয়ে পড়েন গ্রাম ভারত ভ্রমণে। তৃণমূল স্তর থেকে জোগাড় করেছেন গবেষণা সম্বন্ধীয় তথ্য। যে পরিসংখ্যান পরে তাঁকে মানব উন্নয়ন সূচক নির্ধারণ করতে সাহায্য
No comments