Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

নয়াচর তুমি কার?

নয়াচরে মাছচাষীদের একটি বড় অংশ এখনও ই-অকশানের বিরোধিতায় অনড়
হলদিয়া বন্দরঃ নয়াচরে মাছ চাষের জন্য ই- অকশান বা অনলাইন নিলাম প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল মাছচাষীদের একাংশ। অন্যদিকে, নয়াচরে মাছচাষীদের একটি বড় অংশ এখনও ই-অকশানের …

 



নয়াচরে মাছচাষীদের একটি বড় অংশ এখনও ই-অকশানের বিরোধিতায় অনড়


হলদিয়া বন্দরঃ নয়াচরে মাছ চাষের জন্য ই- অকশান বা অনলাইন নিলাম প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল মাছচাষীদের একাংশ। অন্যদিকে, নয়াচরে মাছচাষীদের একটি বড় অংশ এখনও ই-অকশানের বিরোধিতায় অনড়। তবে মাছ চাষীরা দু'পক্ষই একর পিছু ৩৫হাজার টাকা ন্যূনতম লিজ মূল্য কমানোর দাবিতে সরব হয়েছে। রবিবার মূলত এই দুটি বিষয় নিয়ে হলদিয়ার দু'প্রান্তে আলাদা করে বৈঠক করেন দু'পক্ষের মাছচাষীরা। নয়াচরে মাছ চাষে ই-অকশান নিয়ে কার্যত দু'ভাগ হয়ে গিয়েছেন মাছ চাষীরা। সমবায়ের গরীব মৎস্যজীবীরা কীভাবে অনলাইন নিলামে অংশ নেবেন বা কোথায় এত টাকা পাবেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ই-অকশানে নয়াচরের সমবায়ের বাইরের কেউ অংশ নেওয়ার সুযোগ পেলে সমবায়গুলির গুরুত্ব নষ্ট হবে বলে অভিযোগ মাছ চাষীদের একাংশের। তাছাড়া এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কর্পোরেট সংস্থার হাতে নয়াচরের মাছ চাষ চলে গেলে দীর্ঘদিনের অধিকার ক্ষুণ্ণ হওয়ার আশঙ্কা করছেন গরীব মৎস্যজীবী পরিবারগুলি। 

নয়াচরে মোট ৯১১৬ একর জলাশয়ে মিশ্র ও ভেনামি মাছ চাষের জন্য ই-অকশান বা অনলাইনে নিলাম ডাকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। মোট ৫৭০৪টি ছোট ছোট জলাশয়ে মাছ চাষের জন্য ন্যূনতম ৩২কোটি টাকা দর রাখা হয়। নয়াচরের মধ্যেকার সমবায়গুলিই একমাত্র এই নিলামে অংশ নিতে পারবে। কিন্ত ই-অকশানে যেতে রাজি না হওয়ায় প্রথমবারের নিলামে নয়াচরের কোনও মাছ চাষী সমবায়ই অংশ নেয়নি। গত ২৩মে প্রথমবারের নিলামের সময়সীমা শেষ। শেষে প্রশাসন বাধ্য হয়ে নয়াচরের সমবায় ছাড়াও বাইরের কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা ওই নিলামে অংশ নিতে পারবে বলে শর্ত আরোপ করে। ই-অকশানের পাশাপাশি নতুন শর্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করেছেন নয়াচরের মৎস্যজীবীরা। গত এক সপ্তাহ ধরে নয়াচরের বিভিন্ন প্রান্তে মৎস্যজীবীদের প্রতিবাদ সভা হয়েছে। ই-অকশান এবং বহিরাগতদের নিলামে অংশ নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই মাছ চাষীরা জেলাশাসকের দ্বারস্থ হয়েছেন। 

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নয়াচরে ফিশিং হাব গড়ে তোলার কথা ঘোষণার পর জেলা প্রশাসনের তরফে সমীক্ষা করে পুরো অঞ্চলটিকে ১৪০টি ইউনিটে ভাগ করা হয়েছে। এই ইউনিটগুলির কোনওটির আয়তন ৪০একর, কোনওটির ৬০একর, কোনওটি ৭০একর। নয়াচরে মোট ১১৪টি সমবায় গড়ে উঠেছে। দু'দশক আগে থেকে ছিল ১৩টি সমবায় এবং এবার নতুন করে হয়েছে ১০১টি। প্রথমে ঠিক হয়েছিল সমবায়কে ওই জমি মাছ চাষের জন্য লিজে দেওয়া হবে। পরে কেউ ই-অকশানে রাজি না হওয়ায় নয়াচরের বাইরের কেউ নিলামে অংশ নিতে পারবে বলে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। ই-অকশান বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত মাছ চাষীদের স্টিয়ারিং কমিটির দুই নেতা আবদুর রশিদ বৈদ্য ও তপনকুমার প্রামানিক বলেন, সমবায় তৈরি হলেও এখনও রেজিষ্ট্রেশন নম্বর ও কাগজপত্র হাতে পায় সিংহভাগ সমিতি। ফলে প্যান কার্ড ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়নি। তাছাড়া টেন্ডারের টেকনিক্যাল বিডে অংশ নিতে গেলে সমবায়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ১৪লক্ষ টাকা থাকতে হবে। গরীব মৎস্যজীবীদের ক্ষেত্রে কীভাবে এটা সম্ভব। ই-অকশান তারা কিছু বোঝেই না। 

তাঁদের অভিযোগ, অনলাইন নিলামের মাধ্যমে এবার কর্পোরেট সংস্থাকে নয়াচরে মাছ চাষের সুযোগ করে দেওয়া হবে। ফলে সমবায়গুলি গুরুত্ব হারাবে। যে মৎস্যজীবীরা ৩০-৪০বছর ধরে নয়াচরের উপর নির্ভরশীল তাঁরা উৎখাত হবেন। এই বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়ে জানানো হবে। এনিয়ে হলদিয়ার টাউনশিপে জেটিঘাট মাছ বাজারে বৈঠক করেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, নয়াচরের ৯০শতাংশ সমবায় তাদের সঙ্গে রয়েছে। অন্যদিকে, হলদিয়ার দুর্গাচক ক্ষুদিরাম স্কয়ারে নয়াচরের আর একদল মাছ চাষী এদিন ই-অকশানের পক্ষে সওয়াল করেন। ওই সংগঠনের নেতা সঞ্জয় কোলা বলেন, আমরা ২০টি সমবায় এদিন সিদ্ধান্ত নিয়েছি আগামী বুধবার ই-অকশানে যোগ দেব। এজন্য নিয়মকানুন জানতে সোমবার সুতাহাটা বিডিও অফিসে যাব। ই-অকশান হলে নয়াচরে জমি বণ্টনে স্বচ্ছ্বতা আসবে। নয়াচরে শ'য়ে শ'য়ে একর জমি দখল করে যারা ভেড়ি করেছে তারাই আড়ালে থেকে বিরোধিতা করছে।



No comments