Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

চৈতন্যপুর বিবেকানন্দ মিশন আশ্রম আবাসিক স্কুলের ১১জন দৃষ্টিহীন পড়ুয়ার মধ্যে সাত জন ৯০শতাংশের ওপর নম্বর পেয়ে সফল হয়েছে

চৈতন্যপুর বিবেকানন্দ মিশন আশ্রম আবাসিক স্কুলের ১১জন দৃষ্টিহীন পড়ুয়ার মধ্যে সাত জন ৯০শতাংশের ওপর নম্বর পেয়ে সফল হয়েছে
 মাধ্যমিকে এবারও নজরকাড়া সাফল্য পেল সুতাহাটার চৈতন্যপুর বিবেকানন্দ মিশন আশ্রম আবাসিক দৃষ্টিহীন স্কুলের পড়ুয়ারা। স…

 



চৈতন্যপুর বিবেকানন্দ মিশন আশ্রম আবাসিক স্কুলের ১১জন দৃষ্টিহীন পড়ুয়ার মধ্যে সাত জন ৯০শতাংশের ওপর নম্বর পেয়ে সফল হয়েছে


 মাধ্যমিকে এবারও নজরকাড়া সাফল্য পেল সুতাহাটার চৈতন্যপুর বিবেকানন্দ মিশন আশ্রম আবাসিক দৃষ্টিহীন স্কুলের পড়ুয়ারা। স্কুলের ১১জন দৃষ্টিহীন পড়ুয়ার মধ্যে সাত জন ৯০শতাংশের ওপর নম্বর পেয়ে সফল হয়েছে। এদের মধ্যে অঞ্জলি মাহাত ৯৫.৫৭শতাংশ নম্বর পেয়ে রাজ্যে দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের মধ্যে সম্ভাব্য প্রথম হয়েছে। অঞ্জলির প্রাপ্ত নম্বর ৬৬৯। গত বছর আনন্দ মণ্ডল নামে এক পড়ুয়া এই স্কুল থেকেই ৬৬৪নম্বর পেয়ে রাজ্যে প্রথম হয়েছিল। অদম্য মনের জোর আর পরিশ্রম এদের সাফল্যের চাবিকাঠি। শুধু অঞ্জলি নয়, এগারো জনের মধ্যে প্রথম ৯জনই রাজ্যের বিশেষভাবে সক্ষমদের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে। মিশনের অধ্যক্ষ বিশ্বনাথানন্দ মহারাজ সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

বর্ণালী মাণ্ডি ৯৪.৮৬ শতাংশ এবং দেবাশিস মাহাত ৯৪.৪৩ শতাংশ  নম্বর পেয়ে রাজ্যে  সম্ভাব্য দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছে। টানা চার বছর ধরে এই স্কুলের পড়ুয়ারা রাজ্যে দৃষ্টিহীনদের মধ্যে সম্ভাব্য প্রথম স্থান দখল করছে। 

দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের প্রায় সকলেই অত্যন্ত পরিবারের ছেলেমেয়ে। এদের মধ্যে সাতজন ছাত্রী ও চারজন ছাত্র। মনের আলোয় দু’চোখের অন্ধকার দূর করে ওরা এখন মাধ্যমিকের উজ্জ্বল ‘তারকা’। ব্রেইলের শিক্ষকের অভাব সহ নানা সমস্যায় জর্জরিত হওয়া সত্ত্বেও মিশন স্কুলের দৃষ্টিহীনদের ধারাবাহিক সাফল্যের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে অভিনন্দন জানিয়েছে জেলা প্রশাসনও।

এবার চৈতন্যপুর মিশন দৃষ্টিহীন স্কুলে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে আঞ্জলি মাহাত। তার বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির বেতকুণ্ডারি গ্রামে। ছোটবেলাতেই বাবাকে হারিয়েছে সে। মা কৃষ্ণা মাহাত দিনমজুরি  করে সংসার চালান। জন্মগত ছানির কারণে দৃষ্টিহীন ছোট্ট অঞ্জলিকে তার পরিবার মিশন স্কুলের প্রিপ্রাইমারিতে ভর্তি করেন। তারপর থেকে সে এখানেই পড়াশোনা করে বড় হয়েছে। পড়াশোনার পাশাপাশি অঞ্জলি দারুণ নাচতে পারে। অঞ্জলি বাংলায় ৯৫, ইংরাজিতে ৯৩, অংকে ১০০, পদার্থ বিজ্ঞানে ৯৫, জীবন বিজ্ঞানে ৯৯, ইতিহাসে ৮৭ এবং ভূগোলে ১০০ অর্থাৎ মোট ৬৬৯ নম্বর পেয়েছে। উচ্চশিক্ষা নিয়ে অঞ্জলির ইচ্ছে শিক্ষক হওয়া ও দৃষ্টিহীনদের জন্য কাজ করা।

মিশন স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ১১জন দৃষ্টিহীন পড়ুয়ার বাড়ি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। এদের কারও বাড়ি পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর বা ঝাড়গ্রামের প্রত্যন্ত গ্রামে, কারও বাড়ি উত্তর ২৪পরগণা, হাওড়া বা পশ্চিম বর্ধমানের বার্নপুরে। তবে সকলেই এখানে প্রাইমারি থেকে পড়াশোনা করছে। কারও বাবা চাষবাস করেন, সাইকেল মেকানিক বা হকার, কারও বাবা মা উভয়েই দিনমজুরি করেন, কারও বাবা নেই। দারিদ্র, শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে তুচ্ছ মনের জোর, কঠোর অনুশীলনের মাধ্যমে এরা সাফল্য পেয়েছে। 

অঞ্জলি ছাড়াও বাকিরা হল বর্ণালি মাণ্ডি (প্রাপ্ত নম্বর ৬৬৪), দেবাশিস মাহাত(৬৬১), অনন্যা পাত্র(৬৬০), শর্মিষ্ঠা মাহাত (৬৫৯), সায়ন অধিকারী(৬৫৫), অনন্যা পোল্লে(৬৫৫), আফশানা খাতুন(৬২৭), ভোলা কর(৬২২), কাবেরি প্রধান(৬১১), রামরতন মাণ্ডি(৫৪৮)। এদের মধ্যে আনন্যা ও রামরতন ভাল গান গায় এবং আবৃত্তি করে। ভাল ক্রিকেট খেলে দেবাশিস। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আশিস পন্ডা ও ব্রেইল কম্পিউটার শিক্ষক শান্তনু মাইতি বলেন, দৃষ্টিহীন ছেলেমেয়েগুলির মনের জোর আমাদেরও প্রেরণা দেয়। এদের এই সাফল্য আমাদের স্কুকে গর্বিত করেছে।

No comments