Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

এগরায় বাজি কারখানায়ভয়াবহ বিস্ফোরণ, হত ৯

এগরায় বাজি কারখানায়ভয়াবহ বিস্ফোরণ, হত ৯

জৈষ্ঠ্যের শুনশান দুপুর। ঘড়ির কাঁটা ১২টা ছুঁইছুঁই। আচমকা বিকট শব্দে কেঁপে উঠল গোটা খাদিকুল গ্রাম। আতঙ্কে পিলপিল করে বেরিয়ে এল মানুষ। কিছুক্ষণের মধ্যে তারা জানতে পারল, ভানু বাগের বাজি কারখানায়…

 




 

এগরায় বাজি কারখানায়ভয়াবহ বিস্ফোরণ, হত ৯



জৈষ্ঠ্যের শুনশান দুপুর। ঘড়ির কাঁটা ১২টা ছুঁইছুঁই। আচমকা বিকট শব্দে কেঁপে উঠল গোটা খাদিকুল গ্রাম। আতঙ্কে পিলপিল করে বেরিয়ে এল মানুষ। কিছুক্ষণের মধ্যে তারা জানতে পারল, ভানু বাগের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হয়েছে। মাঠের মধ্যে দাউ দাউ জ্বলতে থাকা বাড়িটার দিকে ছুটে গেল বহু লোক। দেখতে পেল, ঘটনাস্থলের পাশের পুকুর থেকে সংলগ্ন রাস্তায় যত্রতত্র পড়ে রয়েছে পোড়া লাশ! ধড় থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া হাত, পা পড়ে রয়েছে। মৃতদেহগুলি এতটাই বিকৃত যে শনাক্ত করাই মুশকিল। বাতাসে মাংস পোড়ার তীব্র দুর্গন্ধ।  

পুলিস জানিয়েছে, অবৈধ বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে মোট ন’জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে পাঁচজন মহিলা এবং চারজন পুরুষ। ঘটনায় আহত বেশ কয়েকজন। তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মৃত এবং জখমরা সবাই বাজি কারখানার কারিগর এবং ওই গ্রামেরই বাসিন্দা। জেলা পুলিস সুপার অমরনাথ কে বলেন, ‘আগে একাধিকবার ওই কারখানায় পুলিসি অভিযান হয়েছে। বাজি কারখানার মালিক কৃষ্ণপদ বাগ ওরফে ভানুকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল। তারপরও সেখানে বাজি তৈরি হচ্ছিল।’ বিকেলে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সিআইডি এই ঘটনার তদন্ত করছে। তবে এনআইএ তদন্তেও তাঁর আপত্তি নেই। তিনি আরও জানান, ওই কারখানার মালিককে গত বছর ১৯ অক্টোবর গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। কিন্তু কেন তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হল না, তা জানতে সংশ্লিষ্ট থানার আইসি-কে শোকজ করা হবে। ঘটনাস্থল থেকে ওড়িশা সীমানা মাত্র পাঁচ কিলোমিটার। এবারও মালিক সেখানে পালিয়েছে। তাই আন্তঃরাজ্য সীমান্তে নাকা চেকিং বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। 

বিস্ফোরণের খবর ছড়াতেই আশপাশের গ্রামের বহু মানুষ এলাকায় জড়ো হয়ে যায়। এগরা থানার আইসি মৌসম চক্রবর্তীর নেতৃত্বে পুলিস বাহিনী সেখানে পৌঁছয়। আসে দমকলের ইঞ্জিনও। তখনই বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিস। তাদের অভিযোগ, পুলিসের নাকের ডগায় অবৈধ কারবার চললেও তারা চোখ বুজে থাকে। ক্ষুব্ধ জনতার একাংশ পুলিসের উপর চড়াও হয় এবং আইসি-কে নিগ্রহ করে। ঘটনাস্থলে আসেন পুলিস সুপারও। 

ভানু বাগের বাজির চাহিদা অনেক। ৫০ থেকে ৬০ জন কারিগর ওই কারখানায় নিয়মিত কাজ করতেন। ২০০৮ সালে নির্দল হিসেবে পঞ্চায়েতে প্রার্থী হয়ে তিনি জয়ীও হন। পরে তৃণমূলে যোগ দেন। রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার কথা জানান গ্রামবাসীরা। ২০০২ সালে ওই কারখানায় বিস্ফোরণে কৃষ্ণপদর এক ভাই সহ তিনজনের মৃত্যু হয়। অভিযোগ, বোমাও তৈরি হতো এখানে। এই ঘটনায় শুরু হয়েছে চাপানউতোর। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ধনেখালিতে বলেন, ‘গোটা রাজ্যই বোমা-বন্দুকের কারখানা হয়ে উঠেছে। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি লিখে ঘটনার এনআইএ তদন্ত দাবি করেছি।’ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, ২০১৮ পর্যন্ত ভানু বাগ তাদের দল করলেও এখন তিনি বিজেপি করেন। 

No comments