শিল্প নিয়ে আগ্রহ দেখালেন আমেরিকার কনসাল জেনারেল মেলিন্ডা পেভাক
হলদিয়া বন্দর : হলদিয়ার শিল্প নিয়ে আগ্রহ দেখালেন আমেরিকার কনসাল জেনারেল মেলিন্ডা পেভাক। মূলত পেট্রকেমিক্যালস ভিত্তিক শিল্প এবং বন্দর বাণিজ্য নিয়ে তিনি দু'দিন ধরে শি…
শিল্প নিয়ে আগ্রহ দেখালেন আমেরিকার কনসাল জেনারেল মেলিন্ডা পেভাক
হলদিয়া বন্দর : হলদিয়ার শিল্প নিয়ে আগ্রহ দেখালেন আমেরিকার কনসাল জেনারেল মেলিন্ডা পেভাক। মূলত পেট্রকেমিক্যালস ভিত্তিক শিল্প এবং বন্দর বাণিজ্য নিয়ে তিনি দু'দিন ধরে শিল্পকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। হলদিয়ায় পেট্রোকেমিক্যালস শিল্পে নতুন কী কী ধরনের বিনিয়োগ সম্ভবনা রয়েছে সেবিষয়ে খোঁজ নেন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে হলদিয়া বন্দরের আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যের বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেছেন পেভাক। বন্দর শহরের আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ব্যবস্থার সুযোগ এবং আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য আরও কয়েকগুণ বাড়বে বলে তিনি আশাবাদী। শহরের পরিকাঠামো উন্নয়ন পরিকল্পনা, পরিবহণ ব্যবস্থা, পরিবেশ ও আধুনিক পরিষেবা নিয়েও হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে। শিল্প সংস্থাগুলির আধিকারিকরা বলেন, এর আগে হলদিয়ায় আমেরিকার কনসাল জেনারেল এলেও এই প্রথম কোনও কনসাল জেনারেল শিল্পকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন।
আমেরিকার কনসাল জেনারেল দু'দিনের সফরে হলদিয়া এসেছেন। সোম ও মঙ্গলবার দিনভর তিনি একের পর এক শিল্প সংস্থায় বৈঠক করেন। মূলত এটি তাঁর হলদিয়া শিল্প সফর। এদিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ হলদিয়া পেট্রকেমে পৌঁছন মেলিন্ডা পেভাক। সংস্থার এগজিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং প্ল্যান্ট হেড মনোজ শ্রীবাস্তব এবং অন্যান্য আধিকারিকদের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়। হলদিয়া পেট্রকেম কী কী ধরনের পণ্য তৈরি করে, দেশে তার বাজার কেমন, কী পরিমাণ রপ্তানি হয় কোন কোন দেশে তা তুলে ধরা হয়। তাঁরা বলেন, পেট্রকেমের ন্যাপথা ক্র্যাকার প্ল্যান্ট সহ সমস্ত ইউনিটগুলি সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি। প্রায় ১২০০ একর জমির উপর এটি গড়ে উঠেছে। প্রজেক্ট এলাকার মধ্যে ৫০০একর জমি রয়েছে। পেট্রকেম নিজস্ব প্রযুক্তিতে কম খরচে বিদ্যুত তৈরি করে। নতুন প্রকল্প গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, এরফলে বড় আকারে বিনিয়োগ হবে। এক আধিকারিক বলেন, হলদিয়ায় পেট্রকেম শিল্পের বিকাশ নিয়ে আমেরিকার শিল্প সংস্থাগুলির আগ্রহ রয়েছে। হলদিয়া পেট্রকেম এখন লাভজনক সংস্থা। পেট্রকেমের পর হলদিয়ার এক্সাইড ব্যাটারি কারখানা ঘুরে দেখেন আমেরিকার কনসাল। হলদিয়া বন্দরের মাধ্যমে পেট্রকেম ও এক্সাইডের পণ্য আমেরিকা রপ্তানি হয়।
এর আগে সোমবার বন্দরের সঙ্গে আমেরিকার কনসাল জেনারেলের দিনভর আলোচনা হয়েছে। তাঁকে বন্দরের বিভিন্ন জেটিতে কীভাবে পণ্য ওঠানামা করে তা দেখান হয়। লকগেটের মাধ্যমে কীভাবে জাহাজ চলাচল করে তা দেখে খুশি পেভাক। তিনি নিজে একজন সাপ্লাই চেন ম্যানেজমেন্ট বিশেষজ্ঞ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাণিজ্য নিয়ে কাজ করছেন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাণিজ্য ক্ষেত্রে হলদিয়ার অবস্থানগত গুরুত্ব সঠিকভাবে বুঝতেই দু'দিন ধরে তিনি শিল্পশহর ঘুরেছেন বলে শিল্পবিশেষজ্ঞরা জানান। এজন্য তিনি হলদিয়ার সঙ্গে সমুদ্রের যোগাযোগের পাশাপাশি নদীপথের বাণিজ্য নিয়েও বিস্তর খোঁজ নেন এবং ইনল্যান্ড ওয়াটার ওয়েজের জেটির পরিকাঠামো ঘুরে দেখেন। বাংলাদেশের সঙ্গে হলদিয়ার নদীপথে কত পরিমান বাণিজ্য হয় সেই তথ্য জানা বন্দরের আধিকারিকরা। তাঁরা বলেন, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে কলকাতা-হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষ মায়ানমারে রাখাইনে কালাদান নদীর কাছে সিত্তয়ে বন্দর গড়ে তুলেছে। সাগরে বড় জাহাজ হ্যান্ডেলিংয়ের জন্য ট্রান্সলোডার লাগানো হবে। এই কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময় কর বলেন, হলদিয়ায় শিল্পের জন্য এইচডিএ কীভাবে পরিকাঠামো গড়ছে, এখানকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, কতগুলি শিল্প রয়েছে ডিটেলে সবকিছু জানানো হয়েছে আমেরিকার কনসাল জেনারেলকে। হলদিয়ায় নতুন করে শিল্প বিনিয়োগের ক্ষেত্র ওনার এই সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
No comments