ইমামি ভোজ্য তেল কারখানার নয়া বেতন চুক্তি স্বাক্ষরিত হল
হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদে ইমামি ভোজ্য তেল কারখানার নয়া বেতন চুক্তি স্বাক্ষরিত হল বুধবার।উপস্থিত ছিলেন এইচডিএ-এর চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময় কর,হলদিয়ার মহকুমা শাসক সুপ্রভাত চট্টোপা…
ইমামি ভোজ্য তেল কারখানার নয়া বেতন চুক্তি স্বাক্ষরিত হল
হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদে ইমামি ভোজ্য তেল কারখানার নয়া বেতন চুক্তি স্বাক্ষরিত হল বুধবার।উপস্থিত ছিলেন এইচডিএ-এর চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময় কর,হলদিয়ার মহকুমা শাসক সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায়,অতিরিক্ত শ্রম কমিশনার তীর্থঙ্কর সেনগুপ্ত । কারখানার এইচ আর শুভ্র চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আইএনটিটিইউসি জেলা সভাপতি চন্দন দে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি আজগর আলি পল্টু হলদিয়া তৃণমূল কংগ্রেস শহর সভাপতি মিলন মন্ডল প্রমূখ।
বুধবার হলদিয়ায় আদানি ও ইমামি দুটি আধিকারিক শুভ্র চক্রবর্তী প্রমুখ। গত ১১ মাস ধরে ইমামি ভোজ্যতেল কারখানায় দু'হাজারের বেশি শ্রমিকের বেতন বৃদ্ধির চুক্তি সই হল। আদানির কারখানায় প্রায় ৭০০ শ্রমিকের ৩ হাজার টাকা করে বেতন বাড়ল। অন্যদিকে, ইমামি কারখানায় ১৪০০ শ্রমিকের বেতন বেড়ে হল সর্বোচ্চ ১৪ হাজার টাকা। দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর দু'টি কারখানায় এদিন নতুন বেতনচুক্তি হয়েছে। এরমধ্যে ইমামি কারখানায় বেতন বাড়ানো নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের ঝামেলা বাধে। গত দু'দিন ধরে বিক্ষোভের জেরে কারখানায় অচলাবস্থা তৈরি হয়। সেই পরিস্থিতি সামলে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে নতুন বেতনচুক্তিতে এখন খুশির হাওয়া শ্রমিক মহলে।
কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদের দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অবশেষে বুধবার সন্ধেয় হলদিয়ার ইমামি অ্যাগ্রোটেক সংস্থার নতুন বেতনচুক্তি স্বাক্ষর হল। ইমামি হলদিয়ায় ভোজ্যতেল উৎপাদন করে। এদিন হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অফিসে ত্রিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে চূড়ান্ত ৪ বছরের জন্য বেতনচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ওই শিল্পসংস্থার প্রসেসিং, প্যাকেজিং, লোডিং ও মেন্টেনেন্স মিলিয়ে চারটি বিভাগের ১৪০০ ঠিকা শ্রমিক এর ফলে উপকৃত হবেন। এদিন কারখানা কর্তৃপক্ষ, শ্রমিক প্রতিনিধি ও শ্রমদপ্তর চূড়ান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন সবপক্ষ। বেতনচুক্তির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময় কর, অতিরিক্ত শ্রম কমিশনার তীর্থঙ্কর সেনগুপ্ত, হলদিয়ার মহকুমা শাসক সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায়, ইনসপেক্টর অব ফ্যাক্টরিজ দেবায়ন দে, উপ শ্রম কমিশনার সুদীপ্ত সামন্ত, আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি চন্দন দে,
ভোজ্যতেল কারখানায় নতুন বেতনচুক্তি নিয়ে টানাপোড়েন চলছিল। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বেতনচুক্তির খসড়া চূড়ান্ত হওয়ার পর মজুরির বেসিক পে নিয়ে ঝামেলা বাধে। সোমবার রাত থেকে শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। শ্রমিকরা বেসিক পে বাড়ানোর দাবিতে অনড় থাকেন। হলদিয়ার ডেপুটি লেবার কমিশনারের নেতৃত্বে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিক প্রতিনিধি ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দের দীর্ঘ মিটিং হয়। কিন্তু বাকবিতণ্ডায় বৈঠক ভেস্তে যায়। শেষমেশ রাতে কারখানার গেটে এসে আইএনটিটিইউসি নেতারা শ্রমিকদের আশ্বস্ত করতে তাঁরা কর্মবিরতি তুলে কাজে যোগ দেন। এরপর ফের বুধবার বিকেল থেকে এইচডিএতে তিনপক্ষ আলোচনায় বসে। বিকেল সাড়ে ৩টে থেকে ম্যারাথন মিটিংয়ের পর অবশেষে শ্রমিকদের চাপে বেসিক পে বাড়ানোর দাবি মানতে বাধ্য হয় ইমামি কর্তৃপক্ষ। আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি বলেন, শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির ফলে তাঁরা সর্বোচ্চ ১৪ হাজার টাকা পাবেন। দী এঁদের বেসিক পে ছিল ২৪৪ টাকা, তা বেড়ে হচ্ছে ৩০০ টাকা। এর ফলে শ্রমিকদের পিএফ, গ্র্যাচুইটি সবই বাড়বে। শ্রমিকরা সবাই খুশি নতুন চুক্তিতে। এইচডিএর চেয়ারম্যান বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সন্তোষজনক চুক্তি হয়েছে। শ্রমিকদের পুজোয় বোনাসও দেবে কর্তৃপক্ষ। নতুন চুক্তি অনুযায়ী প্রথম বছরই বৃদ্ধির ৮০ শতাংশ টাকা শ্রমিকদের দেওয়া হবে। বাকি ২০ শতাংশ তিন বছরে সমানুপাতে ভাগ হবে। এদিন ইমামি ছাড়াও আদানি-টু অর্থাৎ পূর্বতন গোকুল ভোজ্যতেল কারখানাতেও নতুন বেতন চুক্তি হয়েছে।
No comments