২৪ ঘন্টা পরে হলদিয়ায় ভোজ্য তেল কারখানার শ্রমিক বিক্ষোভ উঠে গেল
শ্রমিক অন্তোষে কারখানার উৎপাদনে যাতে প্রভাব না পড়ে, হলদিয়ায় এসে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বছর না ঘুরতে পূ…
২৪ ঘন্টা পরে হলদিয়ায় ভোজ্য তেল কারখানার শ্রমিক বিক্ষোভ উঠে গেল
শ্রমিক অন্তোষে কারখানার উৎপাদনে যাতে প্রভাব না পড়ে, হলদিয়ায় এসে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বছর না ঘুরতে পূর্ব মেদিনীপুরের সেই শিল্পশহরেই উৎপাদন বন্ধ করে চলল শ্রমিক বিক্ষোভ। সোমবার ২৭ শে ফেব্রুয়ারি রাতভর ঘেরাও করে রাখা হল কারখানার আধিকারিকদের। ঘেরাও হন শ্রমিক নেতারাও। মঙ্গলবার ২৮ শে ফেব্রুয়ারি বৈঠকে অবশ্য জট কেটেছে। এই আবহে হলদিয়ায় এসে এ দিন শিল্প-পরিস্থিতি নিয়ে কটাক্ষ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
দুপুরে হলদিয়ার একটি ভোজ্য তেল কারখানায় নতুন বেতনক্রম ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকদের দৈনিক মূল বেতন (বেসিক) ১৯০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৪৪ টাকা করা হয়। অন্য সুযোগ-সুবিধা মিলিয়ে মাসিক বেতন ১১,২৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪,৫৭৫ টাকা করা হয়। কিন্তু এই বেতনক্রমে অখুশি শ্রমিকরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁদের দাবি, বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী দৈনিক মূল বেতন ৩৫০ টাকা করতে হবে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ রাজি হননি।
শ্রমিক নেতাদের এবং পুলিশে খবর দেন কর্তৃপক্ষ। সোমবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ শ্রমিক নেতারা কারখানায় যান। কিন্তু তাঁরাও ঘেরাও হয়ে পড়েন। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের অভিযোগ, মালিকপক্ষের সঙ্গে গোপনে বোঝাপড়া করছেন শ্রমিক নেতারা। পরে পৌঁছয় ভবানীপুর থানার পুলিশ। রাতভর আলোচনা চালিয়ে ভোররাত ৩টা নাগাদ ঘেরাও মুক্ত হন আধিকারিক ও নেতারা। এ দিন সকালে হলদিয়ায় ডেপুটি লেবার কমিশনারের অফিসে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়। ছিলেন ডেপুটি লেবার কমিশনার সুদীপ্ত সামন্ত, জেলার যুব তৃণমূলের-সভাপতি শেখ আসগর আলি, কারখানার আধিকারিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিরা। ঘণ্টা দেড়েকের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ১৫ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে দাবি সনদ। সন্ধ্যার পরে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন।
অভিষেকের বার্তার পরেও কেন এই পরিস্থিতি? তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। তমলুক সাংগঠনিক জেলা আইনটিটিইউসি'র সভাপতি চন্দন দে বলেন, “বৈঠক শেষে বেরিয়েছে বলেন সমস্যা মিটেছে শ্রমিকদের এবং কর্তৃপক্ষকে নিয়ে আগামীকাল অর্থাৎ পয়লা মার্চ পুনরায় সভা হবে।
শুভেন্দু ও হলদিয়ার বিজেপি বিধায়ক তাপসী মণ্ডল। বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে শুভেন্দুর কটাক্ষ, “মমতা সরকারের জমি নীতির ফলে শুধু হলদিয়া কেন, পশ্চিমবঙ্গের কোথাও নতুন শিল্প হবে না। আমি নন্দীগ্রামে বাইপাস তৈরির সময় ৩.৫ একর জমি সংগ্রহ করতে গিয়ে দেখি, ১৩২টি পরিবারের মধ্যে ১২৯টি রাজি হলেও তিনটি পরিবার বেঁকে বসেছে। কোনও শিল্পপতির পক্ষে এ ভাবে জমি সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। তাই কোনও শিল্পপতিও আসেনও না।” শুভেন্দুর দাবি, “আমার নেতৃত্বে তবুও হলদিয়া এনার্জি কারখানা তৈরির কাজ শেষ হয়। ইন্ডিয়ান অয়েলের ২০০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ডিলেড ক্র্যাকার ইউনিট চালু হয়। কিন্তু ২০২১ সাল থেকে হলদিয়ায় গুন্ডারাজ ও পুলিশরাজ চলছে। নেতারা টাকা তুলে কলকাতায় পাঠাচ্ছেন। পুলিশও টাকা তুলছে।” বিরোধী দলনেতার মতে, “আসলে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে রেফারির অভাব। একটা সময় আমি কিছুটা রেফারি করেছি।”
No comments