Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

কিংবদন্তি অভিনেত্রী সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিবস | আমাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য

কিংবদন্তি অভিনেত্রী সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিবস | আমাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য১০ বোনের মধ্যে ছিলেন সবথেকে ছোট | দেশভাগের পরে চলে এলেন কলকাতায় | ঠাঁই হল মেজদির শ্বশুরবাড়িতে | অভাব নিত্যসঙ্গী | একপেট খিদে আর ছেঁড়া কেডস জুতোর সঙ্গে বেড়ে…

 




কিংবদন্তি অভিনেত্রী সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিবস | আমাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য

১০ বোনের মধ্যে ছিলেন সবথেকে ছোট | দেশভাগের পরে চলে এলেন কলকাতায় | ঠাঁই হল মেজদির শ্বশুরবাড়িতে | অভাব নিত্যসঙ্গী | একপেট খিদে আর ছেঁড়া কেডস জুতোর সঙ্গে বেড়ে ওঠা মেয়েবেলা | ক্রমে সাবিত্রীর বাবা এবং পরিবারের অন্য সদস্যরাও ঢাকা থেকে চলে এলেন কলকাতায় । টালিগঞ্জের একটি এক কামরার বাড়িতে মাথা গুঁজেছিলেন পরিবারের সব সদস্য | দুইবেলা পেট ভরে খাবার জোটে না | বাধ্য হয়ে বিভিন্ন জায়গায় নাচের অনুষ্ঠান করতে লাগলেন | পয়সা উপার্জন করতেই হবে | পরিবারের পাশে দাঁড়াতে হবে | 


সে সময় ‘নতুন ইহুদি’ নাটকের জন্য নতুন মুখ খুঁজছিলেন ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় | তিনি মেয়েটিকে অভিনয়ের প্রস্তাব দিলেন | রাজি হলেন | কিন্তু নাটকের মহড়ায় যাওয়ার জন্যে একটা ভাল শাড়িও নেই | পড়শিদের কাছ থেকে ধার করা শাড়ি পরেই যেতেন নাটকের মহড়ায় | বাস ভাড়া বাঁচাতে হাঁটতেন মাইলের পর মাইল | প্রথম অভিনয়ের পরই সবাই হাততালি দিয়ে উঠল। মাসে ২০০ টাকা করে দেওয়ার কথা ছিল, তাও প্রথম তিন মাসের টাকা পাননি | এক্সট্রার কাজ করেছেন ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে | রোজ পঁচিশ টাকা | তার মধ্যে দালালের ভাগ দশ টাকা | পনেরো টাকা জুটত কোনওরকমে 

প্রথম ছবি "পাশের বাড়ী" | পরিচালক সুধীর মুখোপাধ্যায় | প্রথম ছবি থেকেই সাফল্য আসতে শুরু করে | ভাগ্য একটু হলেও বদলাতে থাকে | তারপর একে একে ‘রাতভোর’, ‘উপহার’, ‘অভয়ের বিয়ে’, ‘নূপুর’, ‘গলি থেকে রাজপথ’, ‘মরুতীর্থ হিংলাজ’, ‘কুহক’, ‘বধূ’, ‘ভ্রান্তি বিলাস’, ‘উত্তরায়ণ’, ‘জয়া’, ‘কাল তুমি আলেয়া’, ‘নিশিপদ্ম’, ‘ধন্যি মেয়ে’, ‘মাল্যদান’.....


ভালোবাসতেন উত্তমকুমারকে | কিন্তু উত্তমকুমার তখন বিবাহিত, তিনি চাননি উত্তমকুমার সংসার ছেড়ে চলে আসুক | উত্তমকুমারকে ভালোবেসে অন্য কাউকে বিয়েও করেননি | পরে নিজের বইতে লিখেছেন , “উত্তমদা আর আমি দু’টো আলাদা শরীর, কিন্তু এক প্রাণ… তখন নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দিয়েও মনে হত কিছু দিতে পারিনি মানুষটাকে… তখন সত্যিই ভেবে দেখেনি কী সম্পর্কের পরিণতি… অথচ আমি জানতাম উত্তমদা বিবাহিত, ওঁর সন্তান আছে… সেখানে আমি ওঁদের দু’জনের মধ্যে তৃতীয় ব্যক্তি ছাড়া তো কিচ্ছু না… তবু মনে হত এই যে মানুষটাকে ভালবাসি, এতেই আমি তৃপ্ত। আর কিছু দরকার নেই আমার… তাই উত্তমদা যখন কোনও দুর্বল মুহূর্তে আমাকে জোর করতেন, ‘বুড়ু তুই কথা দে। তুই আমার কাছে আসবি।’ আমি চুপ করে থাকতাম…” | 


আর উত্তমকুমার বলতেন.."সাবুর সঙ্গে অভিনয় করতে গেলে ভয় হয়.. কখন কোন সিনে আমাকে টেক্কা দিয়ে চলে যাবে বুঝে উঠতে পারব না, খুব সতর্ক হয়ে অভিনয় করতে হয় ওর সঙ্গে"....


৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি সমৃদ্ধ করেছেন অভিনয় জগতকে। আজ নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান, স্বতন্ত্র ঘরানা | আজ কিংবদন্তি অভিনেত্রী সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিবস | আমাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য |

No comments