Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

হলদিয়া বিসি রায়-এ জটিল অপারেশনে প্রাণ বাঁচাল তরুণের

হলদিয়া বিসি রায়-এ জটিল অপারেশনে প্রাণ বাঁচাল তরুণের
রাজ্যের একের পর এক মেডিকেল কলেজ ফিরিয়ে দিয়েছে। কলকাতার অন্যতম নামী মেডিকেলও। এমনকী ফিরে আসতে হয়েছে ভুবনেশ্বর এইমস থেকেও। কেউই ঝুঁকির অপারেশন করতে চায়নি। বছর কুড়ি বয়সের এক হতদরিদ্…

 




হলদিয়া বিসি রায়-এ জটিল অপারেশনে প্রাণ বাঁচাল তরুণের


রাজ্যের একের পর এক মেডিকেল কলেজ ফিরিয়ে দিয়েছে। কলকাতার অন্যতম নামী মেডিকেলও। এমনকী ফিরে আসতে হয়েছে ভুবনেশ্বর এইমস থেকেও। কেউই ঝুঁকির অপারেশন করতে চায়নি। বছর কুড়ি বয়সের এক হতদরিদ্র শবর যুবক বাঁচার আকুতি নিয়ে সরকারি হাসপাতালের দরজায় দরজায় ঘুরছে। যৌবনের শুরুতেই গত তিন বছর ধরে মৃত্যু ভয় তিল তিল করে গ্রাস করেছে তাকে। আরও ভয় পাইয়ে দিয়েছে হাসপাতালগুলি। শেষমেস অসাধ্যসাধন করলেন হলদিয়া মেডিকেল কলেজ ও ড. বিসি রায় হাসপাতালের চিকিৎসকরা। যুবকের মুখের ওপর ফুটবল আকারের একটি টিউমারের জটিল অপারেশন করে প্রাণ বাঁচালেন তাঁরা। অপারেশনের একসপ্তাহ পর সে এবার বাড়ির পথে রওনা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। 

তাকে বাড়ি ফিরতে হবে তাড়াতাড়ি। গল্পের মতো তার জীবনের কাহিনী। সংসার বলতে বাবা ও মা। বছর সাতেক আগে বাবা আগুনে পুড়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন। গ্রামে অন্যের বাড়িতে মজুর খাটে মা ও ছেলে। পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর ১ব্লকের গোপালীতে তাদের খড়ের ছোট একচালা বাড়ি। নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। মুখের ওপর ফুটবল সাইজের টিউমার নিয়েই রোদে কাজ মাঠে। মাথায় ৪০-৫০কেজি ওজন নিয়ে রাজমিস্ত্রীর হেল্পারের কাজ করে বাধ্য হয়। ডান চোখ, নাক কার্যত উধাও টিউমারের ঠেলায়। অসহনীয় যন্ত্রণা। কাজ  না করলে ভাত জুটবে না দু'বেলা। এই টিউমার অপারেশন খুবই ঝুঁকিবহুল, মৃত্যু হতে পারে। একথা শুনে মনমরা হয়ে পড়েছিলেন তরুণ মলয় মল্লিক। টাকাপয়সা নেই। চিকিৎসার খরচ কে দেবে? মজুরি থেকে জমানো আড়াই হাজার টাকা ও স্বাস্থ্যসাথী কার্ড সম্বল। হলদিয়ার ঠিকানা দিয়েছিল  তার বাড়ির পাশের লোকজনই। এখন হলদিয়া বিসি রায় হাসপাতালের চিকিৎসকরা তার কাছে 'ভগবান'।

স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের দৌলতেই চোখ ও নাকের উপর বিপজ্জনকভাবে বেড়ে ওঠা টিউমারের জটিল অপারেশনে প্রাণ বাঁচল গরীব শবর যুবকের। প্রায় দু'লক্ষ টাকার অপারেশন হল বিনা খরচে। বিসি রায় হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ৬ফেব্রুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি হয় মলয়। ১৬ফেব্রুয়ারি অপারেশন করেন চিকিৎসকদের একটি টিম। মেডিকেল কলেজের সুপার ইএনটি বিশেষজ্ঞ বিধান রায়ের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি চিকিৎসক দল ওই অপারেশন করেন। সেই দলে ছিলেন শল্য চিকিৎসক  সুকুমার মাইতি, ইএনটি বিশেষজ্ঞ রত্নদীপ ঘোষ, চক্ষু বিশেষজ্ঞ সমীর বন্দ্যোপাধ্যায়, সন্তু মাজি, অপালা লাহিড়ি, সুমাংশু চক্রবর্তী প্রমুখ। 

মেডিকেল সুপার বিধান রায় বলেন, এটি একটি হিউজ ডেন্টিজেরাস সিস্ট। প্রথমে দাঁতের উপর সিসপরে তিন বছর ধরে সেটি বাড়তে বাড়তে চোখ ও নাক ঢেকে ফেলে ফুটবলের আকার নেয়। টিউমারের ধাক্কায় ডান চোখ ব্রেনের মধ্যে ঢুকে গিয়েছিল। ব্রেন ও চোখের মাঝখানের পর্দা প্রায় ফেটে যাওয়ার অবস্থা। নাকও উধাও হয়ে গিয়েছিল। ডানদিকের চোয়াল বেঁকে গিয়েছে। পরীক্ষা করে দেখা হয় যে ব্রেনে আঘাত লেগেছে কি না। তারপরই অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেয় চিকিৎসকদের টিম। আরও ছ'মাস সময় লাগবে মুখের আকৃতি পুরনো অবস্থায় ফিরতে। তারপর আর একটি কসমেটিক সার্জারি করা হবে।

No comments