মাহেন্দ্রক্ষণের ঘোষণা হতেই মকরস্নানে রেকর্ড ছুঁল সাগরকরোনা পরিস্থিতির কারণে গত দু’বছর সেভাবে ভিড় জমেনি গঙ্গাসাগরে। এবার সেই ভীতি নেই বললেই চলে। তাই সাগরমেলায় ব্যাপক জনসমাগম আশা করেছিলেন প্রশাসনের কর্তারা। গত এক সপ্তাহে সাগরমুখী প…
মাহেন্দ্রক্ষণের ঘোষণা হতেই মকরস্নানে রেকর্ড ছুঁল সাগর
করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দু’বছর সেভাবে ভিড় জমেনি গঙ্গাসাগরে। এবার সেই ভীতি নেই বললেই চলে। তাই সাগরমেলায় ব্যাপক জনসমাগম আশা করেছিলেন প্রশাসনের কর্তারা। গত এক সপ্তাহে সাগরমুখী পুণ্যার্থীদের ঢল সেই ধারণাকে সত্যি প্রমাণ করেছে। তবে শনিবার পুণ্যস্নানের মাহেন্দ্রক্ষণ ঘোষণার প্রাকমুহূর্তে সাগরতীর্থের বেলাভূমিতে যে দৃশ্য দেখা গেল, তা অভূতপূর্ব। এদিন সন্ধ্যা ৬টা ৫৩ মিনিট থেকে পুণ্যস্নানের সময় শুরু হয়। তার কয়েক ঘণ্টা আগে থেকে মাইকে ঘোষণা চলছিল, কখন থেকে শুরু হবে পুণ্যস্নানের সময়। মাহেন্দ্রক্ষণের সূচনা ঘোষিত হতেই সাগরের জলরেখার অনতিদূরে দাঁড়িয়ে ঠান্ডায় কাঁপতে থাকা কয়েক লক্ষ মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়লেন। দু’হাত উপরে তুলে সমবেত কণ্ঠে উচ্চারিত হল ‘জয় গঙ্গা মাঈ কি, কপিলমুনি বাবা কি জয়!’ সেই উন্মাদনা আর অপর্যাপ্ত আলোয় অগুনতি মাথা বুঝিয়ে দিল, মকরস্নানের পুণ্যলগ্নে সাগরমেলার ভিড় নয়া রেকর্ড তৈরি করে ফেলেছে।
শীতের রাত যত গভীর হবে, সমুদ্রের ধারে ভিড় ততই পাতলা হবে বলে মনে করা হচ্ছিল। বাস্তবে হল ঠিক উল্টো। শনিবার সন্ধ্যা থেকে রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এবারের মকরস্নানের সময় নির্ধারিত। ফলে সারারাতই ভিড় লেগেছিল স্নানের জন্য। ২ নম্বর বিচে স্নানে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল প্রশাসন। ভিড়ের চাপে সেই নিষেধাজ্ঞা অনেক আগেই উড়ে গিয়েছে। এর মধ্যেই কয়েকজন তীর্থযাত্রীর অনুযোগ, সব ব্যবস্থা এত ভালো! জলের কাছে আরেকটু আলোর ব্যবস্থা করা গেল না! তবে যাবতীয় ‘না পাওয়া’কে ছাপিয়ে শনিবার রাতের সাগরতীর্থ যেন হয়ে ওঠে মহাভারতের মিলনস্থল। তবে জোয়ারের কারণে রাত ৯টা থেকে জলে না নামার জন্য সতর্ক করে ঘোষণা শুরু হয়। পাশাপাশি নজরদারির জন্য অতিরিক্ত বোট নামানো হয়।
বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস আগেই জানিয়েছিলেন, ৫ জানুয়ারি থেকে শুক্রবারের মধ্যে ৩১ লক্ষের বেশি মানুষ স্নান করে গিয়েছেন সাগরে। শনিবার বিকেলেই সংখ্যাটা ৪০ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে জানান তিনি। এর আগে সাগরমেলার ভিড় সর্বোচ্চ ৪০ লক্ষ মতোই ছিল বলে জানা গিয়েছে। শনিবার সারা রাত যেভাবে জনজোয়ার চলে, তাতে একটা বিষয় স্পষ্ট যে, এবারের ভিড় সেই রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানান, গঙ্গাসাগর মেলা আয়োজন করতে ১৫০ কোটি টাকা প্রাথমিক বাজেট ধরেছিল সরকার। ভিড়ের বহর দেখে অতিরিক্ত ১০টি ভেসেল ও লঞ্চকেও পরিষেবায় নামানো হয়েছে।
No comments