পুলিশের জালে ধরা পরল এটিএম কার্ড জালিয়াতি দুই পান্ডা
দামি চারচাকা গাড়ি চড়ে এটিএম কার্ড বদলে টাকা হাতাতে এসে ধরা পড়ল প্রতারকরা। সুতাহাটা থানার চৈতন্যপুর বাজারের ঘটনা। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতদের নাম জগন্নাথ ঘরামি ও মিলন বারিক। দু’জনেই …
পুলিশের জালে ধরা পরল এটিএম কার্ড জালিয়াতি দুই পান্ডা
দামি চারচাকা গাড়ি চড়ে এটিএম কার্ড বদলে টাকা হাতাতে এসে ধরা পড়ল প্রতারকরা। সুতাহাটা থানার চৈতন্যপুর বাজারের ঘটনা। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতদের নাম জগন্নাথ ঘরামি ও মিলন বারিক। দু’জনেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা। প্রথমজনের বাড়ি রায়দিঘি এবং দ্বিতীয়জনের বাড়ি পাথরপ্রতিমা এলাকায়। এরা একটি এটিএম জালিয়াতি চক্রের অন্যতম পান্ডা। হলদিয়া, সুতাহাটা, মহিষাদল থেকে ইতিমধ্যেই বয়স্কদের এটিএম কার্ড বদলে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়েছে ধৃতরা। সুটেড বুটেড ভদ্রলোক সেজে এরা এটিএম কাউন্টারে সাহায্যের অছিলায় বয়স্কদের ফাঁদে ফেলে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিত। চৈতন্যপুরে গত ডিসেম্বরে এধরনের ঘটনার পর একই ঘটনা ঘটে মহিষাদলে। তার আগে হলদিয়াতেও পর পর এধরনের ঘটনায় এরা মোস্ট ওয়ান্টেড ছিল। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে এদের চিহ্নিত করার পর পুলিস ফাঁদ পেতেছিল। দুই জালিয়াত পুলিসের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে ধরা পড়ে শনিবার। রাতে এদের গ্রেপ্তার করে পুলিস।
গত ২৪ ও ৩০ ডিসেম্বর পর পর সুতাহাটা ও মহিষাদলে এটিএমে টাকা তোলার সময় দুই বয়স্ক ব্যক্তিকে সাহায্যের অছিলায় কার্ড বদলে তাঁদের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ধৃতদের বিরুদ্ধে। প্রথমে ওই ঘটনার তদন্তে নেমে চোখ কপালে ওঠে পুলিসের। গত ২৪ ডিসেম্বর সুতাহাটা থানার চৈতন্যপুর বাজারে স্টেট ব্যাঙ্কের এটিএম কাউন্টারে নতুন এটিএম কার্ডের পিন নম্বর জেনারেট করতে আসেন পুরুষোত্তম মণ্ডল নামে ৭৮ বছরের এক বৃদ্ধ। তাঁকে সাহায্য করার অছিলায় কৌশলে পুরুষোত্তমবাবুর কার্ড হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ। তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। পরে তিনি কার্ড ব্লক করে দেন। ঠিক একই কায়দায় গত ৩০ ডিসেম্বর মহিষাদলে এসবিআইয়ের এটিএমে পিন নম্বর জেনারেট করতে গিয়ে মহাপ্রসাদ দাস নামে এক ব্যক্তির এটিএম কার্ড খোয়া যায় এবং ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে ওই কার্ড ব্যবহার করে। পুলিস তদন্তে গিয়ে দেখে পুরুষোত্তমবাবুর কার্ড গুঁজে দেওয়া হয়েছে মহাপ্রসাদবাবুর হাতে।
গত ছ’মাস ধরে হলদিয়া এলাকায় একের পর এক এ ধরনের ঘটনা ঘটলেও পুলিস জালিয়াতদের ধরতে পারছিল না। পরে সুতাহাটা ও মহিষাদলে এই ঘটনা কম দিনের ব্যবধানে ঘটার পর নড়েচড়ে বসে পুলিস। অভিযোগ, প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে একের পর এক বয়স্ক মানুষের এটিএম কার্ড খোয়ানো এবং অ্যাকাউন্ট থেকে হাজার হাজার টাকা উধাও হওয়ার পরও প্রতারকরা ধরা না পড়ায় ক্ষোভ বাড়ছিল। দেখা যায়, হলদিয়া শহরে যে এটিএম কার্ড হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারকরা, সেটি তারা ব্যবহার করছে সুতাহাটা, মহিষাদলের গঞ্জ এলাকায়। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস জেনেছে, এরা মূলত কলকাতা ও শহরতলি এলাকায় এটিএম জালিয়াতি করে। পুলিসের নজর ঘোরাতে নদী পেরিয়ে মফস্বলে চলে যেত। সেভাবেই হলদিয়াকে টার্গেট করেছিল। এখানকার সুবিধে হল কুঁকড়াহাটিতে হুগলি নদী পেরিয়ে গেলে অন্য থানা এলাকায় সহজেই পালাতে পারত। এরা কয়েকদিন আগে সাদা জামা পরে এটিএম কার্ড হাতিয়েছিল। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখার পর পুলিস সেই ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে কলকাতা সহ বিভিন্ন থানা এলাকায় পাঠায়। সবাই একই ব্যক্তিকে চিহ্নিত করার পর সুতাহাটা থানার পুলিস নিশ্চিত হয়। তারপর পুলিস স্পাই ফিট করেছিল এটিএমে। দেখা গেল ধৃতদের একজন সেই একই জামা পরে এসে একই কায়দায় কার্ড হাতানোর চেষ্টা করছে। তখনই পুলিসকে খবর দিতে তাদের পাকড়াও করা হয়।
No comments