Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

হলদিয়ায় ডঃ প্রফুল্ল চন্দ্র ঘোষ জন্মদিন পালন

ডঃ প্রফুল্ল চন্দ্র ঘোষ জন্মদিন পালনরাজ্যের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী ডঃপ্রফুল্লচন্দ্র ঘোষের ১৩১ তম জন্ম দিবসড.প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষ (জন্ম ২৪ ডিসেম্বর ১৮৯১ - ১৮ ডিসেম্বর ১৯৮৩ ) একজন ভারতীয় বাঙালি রাজনীতিবিদ স্বাধীনতা সংগ্রামী। ব্রিটিশ ভারত…

 



ডঃ প্রফুল্ল চন্দ্র ঘোষ জন্মদিন পালন

রাজ্যের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী ডঃপ্রফুল্লচন্দ্র ঘোষের ১৩১ তম জন্ম দিবস

ড.প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষ (জন্ম ২৪ ডিসেম্বর ১৮৯১ - ১৮ ডিসেম্বর ১৯৮৩ ) একজন ভারতীয় বাঙালি রাজনীতিবিদ স্বাধীনতা সংগ্রামী। ব্রিটিশ ভারতের ঢাকার মালিকান্দায় জন্ম। পিতা পূর্ণচন্দ্র ঘোষ ছিলেন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। তিনি স্বাধীন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তিনি এরপর দুই বার নিয়ে মোট তিনবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হন।

 প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষ, ১ম পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ...

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষের জন্ম ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দের ২৪শে ডিসেম্বর অবিভক্ত বাংলার অধুনা বাংলাদেশের তৎকালীন ঢাকা জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রাম মালিকান্দার এক যাদব পরিবারে। পিতা পূর্ণচন্দ্র ঘোষ ছিলেন এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং মাতা বিনোদিনী দেবী ছিলেন গৃহিণী। তার মাতাপিতা দুজনেই ছিলেন সহজ সরল ও ধার্মিক মানুষ। প্রফুল্লচন্দ্র অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। পড়াশোনায় আগাগোড়া অত্যন্ত ভালো ফল করতেন এবং স্কলারশিপ পেতেন। ঢাকার জগন্নাথ কলেজ রসায়নে স্নাতকপরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হন। তেমনই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে স্নাতকোত্তর পরীক্ষাতেও প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। ১৯২০ সালে ডি.এসসি ডিগ্রী অর্জন করেন। অল্পসময় অধ্যাপনা করেন প্রেসিডেন্সি কলেজে। পরে তিনি কলকাতার টাঁকশালে ডেপুটি অ্যাসেস মাস্টার নিযুক্ত হন। এই পদে তিনিই ছিলেন প্রথম ভারতীয়।

স্বাধীনতা আন্দোলন১৯২১ সালে টাঁকশালের ডেপুটি এসেস মাস্টারের চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দেন। মোট আট বছর কারারুদ্ধ ছিলেন তিনি। মহাত্মা গান্ধীর আদর্শে অভয় আশ্রম নির্মাণ করেন এবং ঢাকার বিপ্লবী পুলিনবিহারী দাসের সংস্পর্শে আসেন। ১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গীয় প্রাদেশিক রাষ্ট্রীয় সমিতির সম্পাদক হন। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে লবণ সত্যাগ্রহে যোগ দেন। প্রফুল্লচন্দ্র ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য হন। ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে যুদ্ধের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত সত্যাগ্রহে যোগ দেন।সংসদীয় রাজনীতি

১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে স্বাধীন ভারতে পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হয়ে প্রশাসন-কার্যের উৎকর্ষে জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ, দুর্নীতি দমনের চেষ্টা এবং দুর্নীতি রোধে অর্ডন্যান্স জারি করেছিলেন। প্রাথমিক শিক্ষাবিস্তারের ব্যাপক পরিকল্পনা এবং দু-বছরের মধ্যে বাংলা ভাষাকে সরকারি ভাষারূপে পশ্চিমবঙ্গে প্রবর্তিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তার উদ্যোগে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই অক্টোবর রাজশেখর বসু, সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ শিক্ষাব্রতীদের নিয়ে বাংলা পরিভাষা কমিটি গঠিত হয়। সুরেশচন্দ্র মজুমদারের উদ্যোগে এবং তার প্রচেষ্টায় রবীন্দ্রনাথের জোড়াসাঁকোর বাড়িটি রবীন্দ্রভারতী সোসাইটির হাতে অর্পণ করা হয়। কংগ্রেসের ঊর্ধতন মহলের সঙ্গে মতবিরোধে মন্ত্রীপদ থেকে সরে আসতে হয়। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই জানুয়ারি ডা.বিধানচন্দ্র রায় পশ্চিমবঙ্গ ব্যবস্থা পরিষদে কংগ্রেস দলের নেতা নির্বাচিত হন এবং পরিষদে কংগ্রেসি দলের সভায় ড.ঘোষের পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়। তিনি কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করে ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে নবগঠিত কৃষক মজদুর প্রজা পার্টি-র সম্পাদক হন। এই দল পরে 'প্রজাসমাজতন্ত্রী দল'নাম হয়। ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে মহিষাদল থেকে বিধানসভায় নির্বাচিত হয়ে আবার বিধানসভার সদস্য হন। প্রথম অ-কংগ্রেসি যুক্তফ্রন্ট সরকার অজয় মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গঠিত হলে, তিনি মন্ত্রিসভায় যোগ দেন কিন্তু ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দের ২রা নভেম্বর পদত্যাগ করে 'প্রগ্রেসিভ ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট'(পি. ডি.এফ) নামে এক নতুন ফ্রন্ট গঠন করেন। পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন রাজ্যপাল ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দের ২১শে নভেম্বর তার নেতৃত্বে পি.ডি.এফ মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণ করান। কিন্তু তিন মাস পরেই মন্ত্রী সভার পতন ঘটে। আজীবন গান্ধীবাদী, অকৃতদার প্রফুল্লচন্দ্র শেষজীবন কাটিয়েছেন নিঃসঙ্গ অবস্থায়, শ্রীঅরবিন্দচর্চায় এবং গ্রন্থ রচনায়। তার রচিত গ্রন্থ হল -ফ্রম নাগপুর টু লাহোর

ওয়েস্ট টু-ডে,প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার ইতিহাস,বিজ্ঞানের কথা,জীবনস্মৃতি,মহাত্মা গান্ধী,জগৎগুরু বিবেকানন্দ,ঋষি অরবিন্দ,

আলবার্ট আইনস্টাইন, রবার্ট ওপেনহেইমার, অটো হান প্রমুখ বিশ্বের বিজ্ঞান জগতে বহু যুগন্ধর ব্যক্তির তিনি সান্নিধ্য লাভ করেছিলেন। সারা ভারত গ্রামীণ শিল্প পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য ছিলেন তিনি।

ডঃ ঘোষ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সুতাহাটা থানার অন্তর্গত বাড়বাসুদেবপুর গ্রামে প্রায় ৮৪ একর জায়গা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের জনমুখী বিভিন্ন প্রকল্পের পরীক্ষামূলকভাবেই কাজ শুরু করেছিলেন । হলদিয়া তার আবাস বাড়ীতেই এসেছিলেন বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু তার হাত ধরেই হোমিওপ্যাথি ও এলোপ্যাথি চিকিৎসা কেন্দ্রের গবেষণার উদ্বোধন হয়েছিল। হলদিয়া কে বিশ্বের দরবারে হলদিয়া চিনেছিলেন ডঃ প্রফুল্ল চন্দ্র ঘোষ। এই মহান বিজ্ঞানী জন্মদিন আজ ২৪ শে ডিসেম্বর স্মারক কমিটির উদ্যোগে হলদিয়া বন্দর পত্রিকার ব্যবস্থাপনায় তার জন্মদিন পালিত হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন ১৩১টি প্রদীপ প্রজ্বলন, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামী জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর পথিকৃতিতে পুষ্পাঙ্ক নিবেদনের মধ্য দিয়ে গান্ধী মূর্তি পাদদেশে ডঃ প্রফুল্ল চন্দ্র ঘোষ এর ১৩১ তম জন্মদিনে ৫০ পাউন্ড কেটে পালিত হয় সৌজন্যে (নিউ বিদ্যুৎ বেকারি )। উপস্থিত ছিলেন হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান সাধন জানা হলদিয়া পঞ্চায়েত সমিতির সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সঞ্জয় দাস। পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ আলোক রঞ্জন দাস , বিবেকা আত্মারনন্দ জি মহারাজ (বিবেক মহারাজ)। হলদিয়া পৌরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিক রথীন দাস, দেউলপোতা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অমীয় কুমার মাইতি,বিশিষ্ট সমাজসেবী প্রদীপ বিজলী, সমাজসেবী শ্রী রবীন্দ্রনাথ মাইতি, অমূল্য চরণ পাল, বীরেন্দ্রনাথ মাইতি , অশোক কুমার আচার্য, প্রমূখ।স্মারক কমিটির আহ্বায়ক দুর্গা পদ মিশ্র বলেন ভারতবর্ষের সত্যাগ্রহ আন্দোলনের স্বাধীনতার সংগ্রামী বিজ্ঞান কর্মী ডঃ প্রফুল্ল চন্দ্র ঘোষ তার জন্মদিন পালন করতে পেরে আমরা কৃতার্থ হলদিয়াতে বহু উন্নয়নমূলক জনমুখী প্রকল্পগুলি তিনি বাস্তবায়িত করার জন্য এগিয়ে এসেছিলেন। হলদিয়াকে উন্নতর হলদিয়া করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। শিক্ষা ব্যবস্থা বিজ্ঞান আন্দোলনকে আরো প্রসারিত করার জন্য হলদিয়ার বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে সাইকেল নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন স্কুলে স্কুলে মেধা অন্বেষণের জন্য তৎপর হয়েছিলেন সেই মহান ব্যক্তির কয়েক জায়গা পড়ে রয়েছে আমাদের তিনটি দাবি মহামান্য সরকার বাহাদুরের কাছে ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আমরা আবেদন করেছি। ওই জায়গাটির উপর বুনিয়াদি শিক্ষা ব্যবস্থা অথবা রাজ্যের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি থাকতেন সেই জায়গাটিকে হেরিটেজ (সংরক্ষণ) ঘোষণা করা ওই জায়গার উপরে তার পূর্ণাঙ্গ মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা এবং বালুঘাটা থেকে কুকড়াহাটি পর্যন্ত তার নামে  রাস্তার নামকরণের আমাদের দাবি। নতুন প্রজন্মের কাছে ডঃ প্রফুল্ল ঘোষ কে ছিলেন জানানোর জন্যই আমরা অঙ্কন প্রতিযোগিতা ছাড়া প্রতিযোগিতা প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা এবং কুইজ প্রতিযোগিতা আমরা করেছিলাম ডঃ ঘোষের উপরেই একটি কুইজের বইও আমরা প্রকাশ করেছি। আগামী দিনে জীবন পঞ্জিকা বই আকারে আমরা প্রকাশ করে এলাকার স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের হাতে আমরা তুলে দেবো। তার পরিবারের কেউ আলোচনাই করেন না সেখানে আমরা ডঃ ঘোষকে নিয়ে চায়ের আড্ডায় প্রফুল্ল ঘোষ এই কর্মসূচি আমরা সারা জেলা জুড়ে পালন করব। আজকের জন্মদিনের সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ জাতীয় শিক্ষক ডঃ সুজন কুমার বালা। জন্মদিনের অনুষ্ঠানে হলদিয়া ব্রজলাল চক হাই রোড বাজারের  বাজার কমিটি এবং স্থানীয় ক্লাব মুক্ত পথিকের সদস্য ও সদস্যা গন শুভানুধ্যায়ী বিশিষ্ট সমাজ সেবীগণ উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধন সংগীত পরিবেশন করেন পঞ্চানন আদক। নিত্য পরিবেশন করেন তন্ময় ,সুতপা ,শিল্পা। স্মারক কমিটির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রসেনজিৎ ভৌমিক অরূপ মাইতি পৃথ্বীশ মিশ্র তপন অতীন অরূপ, সান্তনা শেঠ, কবিতা প্রামানিক মুক্ত পথিক ক্লাবের সম্পাদক প্রশান্ত মন্ডল, গোলাম রহমান, সংগীত পরিবেশন করেন সিদ্ধেশ্বরী চক্রবর্তী, সমগ্র অনুষ্ঠানে মিডিয়া পার্টনার বিশ্ববাংলা, সাংবাদিক শ্যামল সেন অচিন্ত্য বেরা রাজেস শাসমল প্রমূখ।


No comments