Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

মহিষাদলের জগন্নাথদেবের গুণ্ডিচাবাটি সংলগ্ন ঘাঘরা গ্রামে গুড়িয়া পরিবারের দুর্গাপুজোকে ঘিরে আনন্দে মেতেছে সবাই

মহিষাদলের জগন্নাথদেবের গুণ্ডিচাবাটি সংলগ্ন ঘাঘরা গ্রামে গুড়িয়া পরিবারের দুর্গাপুজোকে ঘিরে আনন্দে মেতেছে সবাই 
পুজোর বাঁশি বাজে দূরে/ মা আসছেন বছর ঘুরে/ শিউলি গন্ধে আগমনি/ কাশের বনে জয়ধ্বনি/ নীল আকাশে মাকে খুঁজো/ হাসিখুশি কাটুক …

 


মহিষাদলের জগন্নাথদেবের গুণ্ডিচাবাটি সংলগ্ন ঘাঘরা গ্রামে গুড়িয়া পরিবারের দুর্গাপুজোকে ঘিরে আনন্দে মেতেছে সবাই 


পুজোর বাঁশি বাজে দূরে/ মা আসছেন বছর ঘুরে/ শিউলি গন্ধে আগমনি/ কাশের বনে জয়ধ্বনি/ নীল আকাশে মাকে খুঁজো/ হাসিখুশি কাটুক পুজো’। মহিষাদলের জগন্নাথদেবের গুণ্ডিচাবাটি সংলগ্ন ঘাঘরা গ্রামে গুড়িয়া পরিবারের দুর্গাপুজোকে ঘিরে আনন্দে মেতেছে পাড়াগাঁ। প্রায় দু’দশকের পারিবারিক পুজো এখন গ্রামের মানুষের অংশগ্রহণে সর্বজনীন হয়ে উঠেছে। এখন আর দূরে পুজো দেখতে যেতে হয় না তানিয়া সামন্ত, পূজা বয়ালদের। গুড়িয়াদের পারিবারিক পুজোই তাঁদের সবার পুজো হয়ে উঠেছে। পুজোর কয়েকদিন ওই বাড়ির উঠোন হয়ে ওঠে ঘাঘরা গ্রামের মিলনমেলা। এক পংক্তিতে বসে ভোগ গ্রহণ করেন সবাই। অষ্টমীর পুষ্পাঞ্জলি থেকে কুমারীপুজো কিংবা বিজয়ার সিঁদুরখেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন গ্রামের মহিলারাই। 

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মায়ের স্বপ্নাদেশ পাওয়ার পর ২০০৫ সালে শুরু হয় গুড়িয়া পরিবারের পুজো। এই পরিবারের সঙ্গে স্বাধীনতা সংগ্রামের যোগ রয়েছে। পরিবারের প্রবীণতম সদস্যা জয়ন্তী গুড়িয়া মহিষাদলের স্বাধীনতা সংগ্রামী শ্রীপতিচরণ বয়ালের মেয়ে। শ্রীপতিবাবু বিপ্লবী সুশীলকুমার ধাড়ার সহযোগী ছিলেন এবং তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকারের আন্দোলনের শরিক ছিলেন। তিনি মহিষাদল গোপালপুর হাইস্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। শ্রীপতিবাবু তাঁর মেয়েকেও স্বদেশমন্ত্রে দীক্ষিত করেন। বিপ্লবীদের গোপনে রান্না করে খাওয়াতেন জয়ন্তীদেবী। সেই সূত্রেই গুড়িয়া পরিবারের পুজো গ্রামের সবার কাছে অবারিত দ্বার। গুড়িয়া পরিবারের তিন অভিভাবক সত্যানন্দ গুড়িয়া, শিবানন্দ গুড়িয়া এবং সুন্দরানন্দ গুড়িয়াই মূলত পুজো পরিচালনা করেন। 

সুন্দরানন্দ গুড়িয়া বলেন, মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে এক অমোঘ বিশ্বাস থেকে পুজো শুরু করি আমরা। বেলুড়মঠের সময় অনুসারে বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত মতে দুর্গাপুজো হয়। মহিষাদলের রথের লেত উৎসবের দিন বেলুড়মঠ থেকে মাটি এনে প্রতিবছর প্রতিমা গড়া হয়। সাবেকি একচালার প্রতিমার পুজো হয়। সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী পুজোর তিনদিনই গ্রামের ভক্তদের প্রসাদ বিতরণ করা হয়। গুড়িয়া পরিবারের পুজো মানেই উৎসবের দিনে ভূরিভোজের ব্যবস্থা। পরিবারের সদস্য সায়ন্তন গুড়িয়া ও সোমাশ্রী গুড়িয়া বলেন, সপ্তমীতে মেনু রয়েছে ফ্রায়েড রাইস, বেগুনী, ভাত, ডাল, মিক্সড ভেজ, পনির, ফুলকপির তরকারি, পায়েস, চাটনি ও মিষ্টি। অষ্টমীতে গ্রামের যত মহিলা পুষ্পাঞ্জলি দিতে আসেন, তাঁদের লুচি, তরকারি ও মিষ্টি খাওয়ানো হয়। একই সঙ্গে তাঁদের হাতে সিঁদুর কৌটো তুলে দেওয়া হয়। নবমীতেও ভক্তদের প্রসাদ বিতরণ করা হয়। তিনদিনে চার হাজারের বেশি ভক্ত ও দর্শনার্থীকে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। সতেরো বছর ধরে এটাই রীতি।

পুজোয় আত্মীয়স্বজনরা আসেন। পরিবারের মেয়েরা মহালয়াতেই বাপেরবাড়ি চলে আসেন। এই পরিবারের মেয়ে শিবানী ব্যাবর্তা, সর্বাণী জানা, ভবানী মান্না বলেন, দুর্গাপুজোর জন্য বছরভর অপেক্ষা করে থাকি। মহালয়ায় প্রতিমা মণ্ডপে চলে আসে। নিয়ম হল, মাতৃপক্ষের শুরুতেই উমারূপে মা আমাদের বাড়ি আসেন। এবার ভক্তদের প্রসাদ বিতরণের জন্য আনা হয়েছে চার হাজারের বেশি পদ্মপাতা। পরিবারের আর এক সদস্যা মহুয়া কর বলেন, আমাদের পুজো অনেক সময় বাড়ির পুজো বলে মনেই হয় না। কারণ কয়েক হাজার ভক্তের সমাগম হয়। মহালয়ার আগে দু’শোর বেশি মানুষকে নতুন জামাকাপড় তুলে দিয়ে আমরা ভীষণ আনন্দ পেয়েছি। পুজোর সময় মেডিকেল ক্যাম্প বসানো হয়।

No comments