বিজেপি নেতাকে গ্রেফতারে ‘অসহযোগিতা’
হলদিয়া জামিন অযোগ্য ধারায় অভিযোগ দায় হয়েছে ২৯ শেসেপ্টেম্বর হলদিয়ার প্রাক্তন পৌরপ্রধান শ্যামল আদকের বিরুদ্ধে। আর তার আড়াই ঘন্টার মধ্যেই তিনি দিল্লি উড়ে গিয়েছেন এবং সেখানেই গা ঢাকা দিয়…
বিজেপি নেতাকে গ্রেফতারে ‘অসহযোগিতা’
হলদিয়া জামিন অযোগ্য ধারায় অভিযোগ দায় হয়েছে ২৯ শেসেপ্টেম্বর হলদিয়ার প্রাক্তন পৌরপ্রধান শ্যামল আদকের বিরুদ্ধে। আর তার আড়াই ঘন্টার মধ্যেই তিনি দিল্লি উড়ে গিয়েছেন এবং সেখানেই গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন বলে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের দাবি। এমনকি দিল্লিতে শ্যামল এক সাংসদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন বলেও জানাচ্ছে পুলিশ। এবং তাঁকে ধরার ক্ষেত্রে দিল্লি পুলিশ যথেষ্ট সাহায্য করছে না বলেও অভিযোগ। তবে এ নিয়ে দিল্লি পুলিশের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।শ্যামল হলদিয়ায় তৃণমূলের পৌরপ্রধান ছিলেন। তবে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে তিনিও গেরুয়া দলে নাম লেখান। গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯ টা নাগাদ হলদিয়ার ভবানীপুর থানায় দুর্নীতির ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের হয় শ্যামলের বিরুদ্ধে। ওই দিনই মধ্যরাতে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে দিল্লি রওনা দেন তিনি। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার কে অমরনাথ বলেন, “আমরা জানতে পেরেছি, এক সাংসদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন অভিযুক্ত। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। জেলা পুলিশ আইনমাফিক পদক্ষেপ করবে।”
কে সেই সাংসদ, সে বিষয়ে পুলিশ সুপার কিছু জানাতে চাননি। তবে এ ক্ষেত্রে বিজেপিকেই নিশানা করছে তৃণমূল। “বিজেপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলে অভিযুক্তরা দিল্লিকে নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নেয়। শ্যামল আদকের ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে। দিল্লি পুলিশকে দলদাসে পরিণত করেছে বিজেপি। দিল্লি পুলিশ অপরাধীকে না ধরে আশ্রয় দিচ্ছে।”বিজেপির শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সহ-সভাপতি প্রদীপ বিজলী বলছেন, “শ্যামল আদক যখন তৃণমূলে ছিলেন, তখন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ ওঠেনি। বিজেপিতে আসার পরই মিথ্যা মামলা করা হচ্ছে। আর দিল্লি পুলিশের অসহযোগিতার অভিযোগও ভিত্তিহীন।”
শ্যামলের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী অরুণাংশু মুখোপাধ্যায় পেশায় ব্যবসায়ী। তবে তদন্তকারীদের মতে, অভিযোগ দায়েরের আড়াই ঘন্টার মধ্যেই যে ভাবে শ্যামল কলকাতা ছেড়েছেন, তাতে এটা স্পষ্ট যে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের কথা তিনি জেনে গিয়েছিলেন। অথচ পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, অভিযোগ দায়ের হয়েছিল অত্যন্ত সন্তর্পণে, যথেষ্ট গোপনীয়তা বজায় রেখে। অভিযোগকারী ছাড়া গুটি কয়েক পুলিশ আধিকারিক বিষয়টি জানতেন। ফলে প্রশ্ন হল, কে শ্যামলকে খবরটা পৌছায়।
প্রশ্ন রয়েছে দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। জেলা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, শ্যামলের দিল্লি উড়ে যাওয়ার খবর পেয়েই যোগযোগ করা হয় দিল্লি পুলিশের সঙ্গে। কিন্তু শুরু থেকেই দিল্লি পুলিশ কোনও সহযোগিতা করছে না। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “৩০ সেপ্টেম্বর রাত ২টো ৫০ মিনিট নাগাদ শ্যামল দিল্লি বিমানবন্দরে নামেন। আমরা একটি ভিডিয়োতে দেখি সেখানকার পুলিশের এক আধিকারিক ও কনস্টেবল-সহ ৮জন শ্যামলকে বিমানবন্দর থেকে এসকর্ট করে নিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের অনুমান ওঁরাই শ্যামলকে নিরাপদ, স্থানে পৌঁছে দিয়েছেন।” দিল্লি পুলিশ এ প্রসঙ্গে কিছু জানাতে চায়নি। শ্যামল কোথায় আছেন, এ নিয়েও মুখ খুলছেন না কেউই। তবে শ্যামলকে ধরতে আপাতত বঙ্গ ভবনে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের একটি দল।
No comments