আদানি গ্রুপের সাথে হলদিয়া বন্দরের বহু প্রতীক্ষিত চুক্তি স্বাক্ষর হল
হলদিয়া বন্দরের সঙ্গে আদানি গ্রুপের বহু প্রতীক্ষিত চুক্তি স্বাক্ষর হল। হলদিয়া বন্দরের আধুনিকীকরণে বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ‘কনসেশন অব এগ্রিমেন্ট’ চুক্তি হল আদানি …
আদানি গ্রুপের সাথে হলদিয়া বন্দরের বহু প্রতীক্ষিত চুক্তি স্বাক্ষর হল
হলদিয়া বন্দরের সঙ্গে আদানি গ্রুপের বহু প্রতীক্ষিত চুক্তি স্বাক্ষর হল। হলদিয়া বন্দরের আধুনিকীকরণে বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ‘কনসেশন অব এগ্রিমেন্ট’ চুক্তি হল আদানি পোর্টস এন্ড স্পেশাল ইকনমিক জোন লিমিটেডের। বন্দরে নতুন করে বিনিয়োগ আসছে যা আগামীদিনে রাজ্যের বন্দর বাণিজ্য ও শিল্পায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলে মনে করছে শিল্পমহল। হলদিয়া বন্দরের আধুনিকীকরণে প্রায় ৩০০কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে ভারতের বৃহত্তম বেসরকারি পোর্ট অপারেটর সংস্থা আদানি গ্রুপ। বন্দরের ২নম্বর বার্থ মেকানাইজেশন অর্থাৎ স্বয়ংক্রিয় পরিকাঠামো গড়তে এই বিনিয়োগ হবে। রাজ্যের বন্দর বাণিজ্যে এই প্রথম বিনিয়োগ করছে আদানিদের সংস্থা আদানি পোর্ট এন্ড স্পেশাল ইকনোমিক জোন লিমিটেড(এপিএসইজেড)। ওই বার্থ আধুনিকীকরণের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ টেন্ডার ডেকেছিল। টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বন্দর কর্তৃপক্ষ শেষমেস আদানিকে বাছাই করেছে। গত অক্টোবর মাসে ওই বাছাই প্রক্রিয়া শেষ হয়েছিল। কিন্তু কিছু সমস্যার কারণে চুক্তির প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন থমকে ছিল। শেষমেস প্রায় ১১মাস পর ওই চুক্তি স্বাক্ষর করা হল। এদিন কলকাতা বন্দরের কার্যালয়ে হলদিয়া নিয়ে এই চুক্তি হয়। উপস্থিত ছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দরের(কলকাতা বন্দর)চেয়ারম্যান বিনীত কুমার, আদানি পোর্টস গ্রুপের সিইও শুব্রত ত্রিপাঠি, হলদিয়া বন্দরের ডেপুটি চেয়ারম্যান অমলকুমার মেহেরা এবং ধামড়া পোর্টের সিওও সুদীপ দাশগুপ্ত প্রমুখ। বিল্ড অপারেট এন্ড ট্রান্সফার(বিওটি) মডেলে আধুনিকীকরণের পর আদানি গ্রুপ ওই বার্থ পরিচালনা করবে।
টেন্ডারে আদানি গ্রুপ জানায়, কার্গো হ্যান্ডেলিংয়ের জন্য তারা বন্দরকে সবচেয়ে বেশি রেভিনিউ অর্থাৎ রাজস্ব দেবে। সেজন্য অন্য সংস্থাগুলির মধ্যে বেস্ট বিডার হিসেবে আদানিকে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।হলদিয়া বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, ডকের ২নম্বর বার্থ মেকানাইজেশনের জন্য টেন্ডার ডাকা হয়েছিল। গত বছর ১অক্টোবর শুক্রবার ওই টেন্ডার খোলা হয়েছিল। সেখানে সেই টেন্ডারে বেস্ট বিডার হয় আদানি গ্রুপ। পরে এটি বন্দরের টেন্ডার কমিটির কাছে পাঠানো হয় এবং বোর্ড মিটিংয়ের মাধ্যমে চূড়ান্ত আদানিকে কাজের বরাত দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২নম্বর বার্থ পরিচালনার ক্ষেত্রে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ অর্থাৎ পিপিপি মডেলে বিল্ড অপারেট এন্ড ট্রান্সফার পদ্ধতিতে বন্দরের সঙ্গে আদানিদের ৩০বছরের চুক্তি হচ্ছে। জানা গিয়েছে, ভারতে মেজর পোর্টগুলির কার্গো হ্যান্ডেলিংয়ের রেট নির্ধারক সরকারি সংস্থা ট্যারিফ অথরিটি ফর মেজর পোর্টস(ট্যাম্প) প্রতি বন্দরে টন পিছু ৩৩৫.৯০টাকা রেট বেঁধে দিয়েছে। হলদিয়া বন্দরে আদানিরা বিনিয়োগের পর ট্যাম্প নির্ধারিত রেট মেনেই আমদানি রপ্তানিকারীদের কাছ থেকে নিজেদের মতো হ্যান্ডেলিং চার্জ নেবে। সেখান থেকে আদানিরা টন পিছু বন্দরকে দেবে ৭৫টাকা অর্থাৎ লভ্যাংশের ২২.৩৩ শতাংশ শেয়ার। অন্য সংস্থার চেয়ে এই লভ্যাংশ ১০টাকা বেশি হওয়ায় আদানিরা বেস্ট বিডার হয়েছে। আগে ওই বার্থের বছরে কার্গো হ্যান্ডেলিং ক্ষমতা ছিল ২মিলিয়ন টন। আধুনিকীকরণের পর সেই ক্ষমতা দ্বিগুণ হয়ে প্রায় ৪মিলিয়ন টনে পৌঁছবে বলে জানা গিয়েছে। দু’বছরের মধ্যে নতুন ওই বার্থ কাজ শুরু করবে। বন্দরের ডেপুটি চেয়ারম্যান অমলকুমার মেহেরা বলেন, ১৯৭৭সালে ভারত থেকে জাপানে লৌহ আকরিক পাঠানোর জন্য ওই পরিকাঠামো গড়া হয় হলদিয়ায়। দীর্ঘদিনের পুরনো হওয়ায় ওই বার্থের যন্ত্রপাতির কার্যক্ষমতা কমে গিয়েছিল। বছর চারেক আগে বন্দর কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয় ওই বার্থটি কয়লা পরিবহণের জন্য নতুন করে গড়া হবে। এই বার্থটি আধুনিকীকরণ হলে বহু মানুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান হবে এবং বন্দরের বছরে আয় হবে ২২কোটি টাকা।
No comments