Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

কানাডার ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিজের স্কুল চকদ্বীপা হাইস্কুলে এসে দিনভর হাতেকলমে বিজ্ঞানশিক্ষার পাঠ দিলেন নামী পদার্থ বিজ্ঞানী কাজি রাজিবুল ইসলাম

সুদূর কানাডার ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিজের স্কুল চকদ্বীপা হাইস্কুলে এসে দিনভর হাতেকলমে বিজ্ঞানশিক্ষার পাঠ দিলেন নামী পদার্থ বিজ্ঞানী কাজি রাজিবুল ইসলাম। আজ থেকে তেইশ বছর আগে ২০০০সালে এই স্কুল থেকেই রাজিবুল ইসলাম মাধ্যমিকে র…

 



 সুদূর কানাডার ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিজের স্কুল চকদ্বীপা হাইস্কুলে এসে দিনভর হাতেকলমে বিজ্ঞানশিক্ষার পাঠ দিলেন নামী পদার্থ বিজ্ঞানী কাজি রাজিবুল ইসলাম। আজ থেকে তেইশ বছর আগে ২০০০সালে এই স্কুল থেকেই রাজিবুল ইসলাম মাধ্যমিকে রাজ্যে প্রথম হয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি কোয়ান্টাম কম্পিউটার নিয়ে ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট ফর কোয়ান্টাম কম্পিউটিং এন্ড ডিপার্টমেন্ট অফ ফিজিক্স এন্ড অ্যাট্রোনমি কলেজের গবেষক শিক্ষক। আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার পর তিনি কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজিবুল কোয়ান্টাম কম্পিউটার গবেষণা প্রকল্পে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাঁর নেতৃত্বে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের গবেষক ও বিজ্ঞানীরা ওখানে মিলিত হয়ে গবেষণা করছেন। ওই প্রকল্পে বেশ কয়েকজন বাঙালি ও ভারতীয় গবেষক পড়ুয়া রয়েছেন।

তমলুকে বাড়িতে এসে ২০১৭সালে শেষবার রাজিবুল নিজের স্কুলে এসেছিলেন। দেশে ফিরলেই নিজের স্কুলে এসে পড়ুয়াদের সঙ্গে সময় কাটাতে, তাদের নিয়ে পৃথিবীর নানা প্রান্তের বিজ্ঞান গবেষণার গল্প বলতে ভালবাসেন রাজিবুল। এদিন তিনি চকদ্বীপায় হাতেকলমে বিজ্ঞান শিক্ষা ও উদ্বুদ্ধকরণ শিবিরে অংশ নেন। ঘড়ির কাঁটায় কাঁটায় ঠিক সকাল সাড়ে ১০টায় তিনি উপস্থিত। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কাঁথি প্রভাতকুমার কলেজের ফিজিক্সের অধ্যাপক প্রদীপ্ত পঞ্চাধ্যায়ী ও বিজ্ঞান সঞ্চারক ও শিক্ষক শ্রেয়ম জানা। দু’দফায় পড়ুয়াদের পাঠদান করেন তাঁরা। ক্লাস এইট থেকে টেন পর্যন্ত বিজ্ঞানে আগ্রহী দু’শতাধিক পড়ুয়াকে নিয়ে পদার্থবিজ্ঞানের বলবিদ্যা নানা ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন তাঁরা। স্লাইড শো ও প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে চলে আলোচনা। এরপর ইলেভেন ও টুয়েলভের পড়ুয়াদের নিয়ে সন্ধে পর্যন্ত প্রয়োগ বিজ্ঞান হাতেকলমে পাঠ দেন তাঁরা। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মণিশঙ্কর গিরি, বিজ্ঞান শিক্ষক কার্তিক আদক বলেন, রাজিবুল স্যার স্কুলে এসে ক্লাস নেওয়ায় শুধু পড়ুয়ারা নয়, আমারাও উপকৃত হলাম।

স্কুলের অটল টিংকারিং ল্যাবে গিয়ে পড়ুয়া ও শিক্ষকদের উৎসাহিত করেন সবার রাজিবুল ‘স্যার’। রাজিবুল বলেন, স্কুলে বিজ্ঞান শেখা, উচ্চশিক্ষায় গবেষণা কিংবা বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনার পর কোনও স্টার্টআপ কোম্পানি গড়ে প্রডাক্ট তৈরির ক্ষেত্রে হাতেকলমে বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্ব প্রবলভাবে রয়েছে। ছাত্র অবস্থা থেকে এই ধরনের ল্যাবে কাজ করলে তাদের টেকনিক্যাল স্কিল বাড়বে। তিনি বলেন, সম্প্রতি কোয়ন্টাম কম্পিউটার প্রকল্পে গবেষণায় সুযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি ছাত্রকে আমরা বেছে নিলাম, যে কিনা ছাত্র অবস্থায় এক ইলেকট্রিশিয়ানের সহযোগীর কাজ করত। কারণ ওই গবেষক পড়ুয়া স্কুল জীবন থেকেই হাতেকলমে শিক্ষায় জোর দিয়েছিল। রাজিবুল বলেন, আজ পাঠদানের সময় লক্ষ্য করলাম পড়ুয়াদের মধ্যে আগ্রহ কম। তারা কম রিঅ্যাক্ট করছে। এটা হয়তো করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন স্কুল থেকে দূরে থাকার ফল। তবে ওই সময় বাড়িতে থাকার সুবাদে অনেকের মধ্যে অনেক উদ্ভাবনী স্কিলও দেখা গিয়েছে সারা বিশ্ব জুড়ে। 

এদিন ভবিষ্যতের কম্পিউটার কোয়ন্টাম কম্পিউটার বিষয়ে নিয়ে সহজ পাঠ দেন রাজিবুল। তিনি বলেন, কোয়ন্টাম কম্পিউটার আজকের সুপার কম্পিউটারের উন্নত রূপ নয়। এটি সম্পূর্ণ নতুন ভাবনার অতি শক্তিশালী কম্পিউটার। আমরা মূলত পরমাণু দিয়ে কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরি করছি। শূন্যস্থানের মধ্যে বন্দি করা আয়নিত পরমাণুকে লেজার রশ্মি দিয়ে পরম শূন্য তাপমাত্রার কাছাকাছি ঠাণ্ডা করে তাদের কোয়ন্টাম ধর্ম ব্যবহার করে গণনা পদ্ধতির নামই কোয়ন্টাম কম্পিউটিং। আগামী দশ বছরের মধ্যে এই কম্পিউটার গবেষণা বিশেষ জায়গায় পৌঁছবে। আজকের সুপার কম্পিউটারের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী হওয়ায় এই পদ্ধতিতে গণনা বা উৎপাদকে বিশ্লেষণ ক্ষমতা অতি নিখুঁত হবে। বাস্তবে এর প্রয়োগ দারুণ সুবিধে এনে দেবে ক্রিপ্টোগ্রাফির ক্ষেত্রে। অর্থাৎ তথ্য দুনিয়ায় ইনফরমেশন এনক্রিপশনের ক্ষেত্রটি আরও শক্তিশালী হবে। তাছাড়া কম্পিউটিং পাওয়ার বাড়লে ওষুধ শিল্পে প্রভূত উন্নতি হবে।

No comments