হলদিয়ায় ধৃত মুম্বইয়ের ফিনান্স সংস্থার শাখা-ম্যানেজার, তদন্ত মুম্বাইয়ের একটি ফিনান্স সংস্থায় ১৮ জন নকল গ্রাহককে গোল্ড ঋণ দেওয়ার নামে ৩৩ লক্ষ টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ উঠল হলদিয়ার ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের বিরুদ্ধে। তাকে গ্রেপ্তার করেছ…
হলদিয়ায় ধৃত মুম্বইয়ের ফিনান্স সংস্থার শাখা-ম্যানেজার, তদন্ত
মুম্বাইয়ের একটি ফিনান্স সংস্থায় ১৮ জন নকল গ্রাহককে গোল্ড ঋণ দেওয়ার নামে ৩৩ লক্ষ টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ উঠল হলদিয়ার ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের বিরুদ্ধে। তাকে গ্রেপ্তার করেছে দুর্গাচক থানার পুলিশ। ওই সংস্থার হলদিয়া শাখায় অডিট চলার সময় বন্ধকী সোনার প্যাকেটের হিসেবে গরমিল ধরা পড়ে। অভিযোগ, সোনা রাখার সিন্দুক থেকে ১৮টি বন্ধকী সোনার প্যাকেট উধাও হয়ে গিয়েছে। ওই প্যাকেটগুলিতে এক কিলোর বেশি সোনার গয়না ছিল বলে সংস্থার দাবি। সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্ধক রাখা ওই পরিমাণ সোনার পরিবর্তে সংস্থা গ্রাহকদের ৩৩ লক্ষ ৩০ হাজার ৪১৪ টাকা ঋণ দিয়েছিল। আসল গ্রাহকের পরিবর্তে অডিটের পরিভাষায় 'ডামি লোন' ইস্যু করে লক্ষ লক্ষ টাকা তছরূপ হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার ছাড়াও এক সোনা মূল্যায়নকারী এবং এক প্রাক্তন কর্মীর নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করে ওই সংস্থা।জানা গিয়েছে, ওই সংস্থাটি একটি নন ব্যাঙ্কিং ফিনান্স কোম্পানি। মূল অফিস মুম্বাইয়ের আন্ধেরি ইস্টে। হলদিয়ার দুর্গাচক মঞ্জুশ্রী মোড় সংলগ্ন এলাকায় এদের ব্রাঞ্চ অফিস রয়েছে। সোনা বন্ধক রেখে এরা গ্রাহকদের ব্যাঙ্ক ঋণের ব্যবস্থা করে। সংস্থায় অডিট চলার সময় গত ৯ মে প্রথম সোনার প্যাকেটের হিসেবে গরমিল ধরা পড়ে। ১৭ মে প্রথম দফায় অডিটের পর নজরে আসে ১৮ জন ঋণ গ্রাহকের নামের প্রেক্ষিতে বন্ধক রাখা সোনার হদিশ নেই। সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ভুয়ো ঋণ দেওয়া হয়েছে ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২২ সালের ১০ মে পর্যন্ত তিন বছরে। উধাও হয়ে যাওয়া সোনার পরিমাণ ১ হাজার ১৪২.২১ গ্রাম। ২০২০ সালে ১৮ মার্চ ৫৫.১৫ গ্রাম সোনার পরিবর্তে এক ব্যক্তিকে ২ লক্ষ ২৩ হাজার ৫০০ টাকা ভুয়ো ঋণ দেওয়া হয়েছে। ওই বছরে নভেম্বরে ১৫০.০৫ গ্রাম সোনা বন্ধক রেখে আরও এক ব্যক্তিকে ৫ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। ২০২২ সালে ৯ মার্চ এক ব্যক্তির নামে সর্বোচ্চ ২১০.৪ গ্রাম সোনা বন্ধক দেখিয়ে ২লক্ষ ৩১ হাজার ২২২ টাকা ভুয়ো ঋণ দেওয়া হয়েছে।সংস্থার ম্যানেজার (পূর্ব মেদিনীপুর) অরিজিৎ ভৌমিক বলেন, অডিটে থানায় ব্রাঞ্চ ম্যানেজার সহ তিনজনের নামে করা সংস্থার তরফে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত অভিযোগে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার সংকর্ষণ বেরাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। হলদিয়া মহকুমা আদালত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। এসডিপিও রাহুল পাণ্ডে বলেন, ধৃত সংকর্ষণ বেরাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। সে ঋণ দেওয়ার নামে টাকা তছরূপ ও সোনার প্যাকেট সরানোর কথা স্বীকার করেছে। বাকি দু’জনকে প্রয়োজনে জিজ্ঞাসবাদে ডাকা হবে। এখন পর্যন্ত সোনার ১৮টি প্যাকেটের হিসেব মিলছে না। সংস্থার অডিট পুরো শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঠিক কত টাকা নয়ছয় হয়েছে তার সন্ধান পাওয়া যাবে না। সমস্ত বিষয়টি গরমিল ধরা পড়তেই গত ১৮ মে দুর্গাচক পুলিশ তদন্ত করছে। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, বন্ধক, রাখা সোনার প্যাকেট বিশ্বাসভঙ্গ ও তছরূপের অভিযোগ দায়ের থেকে একাংশ সোনা সরিয়ে ওই গ্রাহকের কাগজপত্র দেখিয়ে নতুন করে ডামি লোন করছে। পুলিশ জানিয়েছে, তছরূপের পাশ করানো হত।
No comments