Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

সন্ন্যাসীর বেশে মানুষ খুন! আতঙ্কে গ্রামবাসি

সন্ন্যাসীর বেশে মানুষ খুন! আতঙ্কে গ্রামবাসিসাধুর ছদ্মবেশে সাক্ষাৎ শয়তান। সুতাহাটার ভূপতিনগরে ধৃত বছর আটত্রিশের ভুয়ো সন্ন্যাসী নারায়ণ ব্রহ্মচারীর কার্যকলাপে সন্ত্রস্ত গোটা গ্রাম। গ্রামের মানুষ তাকে সন্ত্রাসবাদী  সাধু বলে ডাকতে শ…

 




সন্ন্যাসীর বেশে মানুষ খুন! আতঙ্কে গ্রামবাসি

সাধুর ছদ্মবেশে সাক্ষাৎ শয়তান। সুতাহাটার ভূপতিনগরে ধৃত বছর আটত্রিশের ভুয়ো সন্ন্যাসী নারায়ণ ব্রহ্মচারীর কার্যকলাপে সন্ত্রস্ত গোটা গ্রাম। গ্রামের মানুষ তাকে সন্ত্রাসবাদী  সাধু বলে ডাকতে শুরু করেছেন। আতঙ্কবাদী কায়দায় শুক্রবার মাঝরাতে ভুয়ো সন্ন্যাসীর তাণ্ডব দেখার পর কথা বলতে ভয় পাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা। অভিযোগ, ওই সাধু হাইভোল্টেজ বিদ্যুতের তার জড়িয়ে, ন্যাপথা দিয়ে পুড়িয়ে এবং তলোয়ার দিয়ে কুপিয়ে খুনের চেষ্টা করে গ্রামের কয়েকটি পরিবারকে। টানা দেড় ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালানোর পর রক্তমাখা অবস্থায় সে গ্রামবাসীদের হাতে ধরা পড়ে এবং পরে পুলিসের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কাঠের নকশা মিস্ত্রি নারায়ণ বছর কয়েক আগে সাধু হয়ে গ্রামে ফিরে আশ্রম গড়তে চায়। সরল বিশ্বাসে গ্রামের মানুষ তাকে দু’হাত ভরে অর্থ সাহায্য করে। কিন্তু সেই সাধুই যে একদিন জমিজমা সংক্রান্ত সামান্য বৈষয়িক কারণে শয়তানরূপে গ্রামের মানুষের কাছে ত্রাস হয়ে উঠবে কেউ ঘুণাক্ষরে টের পায়নি।

শুক্রবার রাত আড়াইটে নাগাদ নারায়ণ প্রথম হামলা চালায় প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য রিনা মান্নার বাড়িতে। ভূপতিনগর হাইস্কুল যাওয়ার পাকা সড়কের পাশেই তাঁদের বাড়ি। সেই বাড়ি লাগোয়া জমিতেই গড়ে উঠেছে নারায়ণের আশ্রম।

রবিবার সকালে ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে বার বার ভয়ে কেঁপে উঠছিলেন রিনা দেবী ও তাঁর দেওর। রিনাদেবীর মেয়ে শিক্ষিকা রুসা দাস বলেন, মা ঘরের ভেতরে ছিল। দশ ফুট দূর থেকে মায়ের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। মা কোনও রকমে বাঁচলেও বুক পুড়ে গিয়েছে। সোমনাথবাবু বলেন, বাড়ির মূল কাঠের দরজা বড় হাতুড়ি দিয়ে অসুরের শক্তিতে ভেঙে খান খান করে দিয়েছে। নারায়ণের লক্ষ্য ছিল বাড়িতে সর্টসার্কিট করে আগুন দিয়ে সবাইকে পুড়িয়ে মারা। নারায়ণের ন্যাপথার বালতিতে আগুন ধরে যাওয়ায় সবাই বেঁচে গিয়েছে। তিনি বলেন, ওর আশ্রমের সঙ্গে আমাদের পরিবারের জমি সংক্রান্ত একটি ছোট সমস্যা এত বড় আক্রোশের কারণ হতে পারে ভাবতে পারিনি। মান্না পরিবারের তিনটি বাড়িতে হামলার পর দু’হাতে তলোয়ার নিয়ে আধ কিলোমিটার দূরে নিজের দুই জ্ঞাতি দাদা ও বৌদি ও বাচ্চাদের ঘুমন্ত অবস্থায় কুপিয়ে খুনের চেষ্টা করে নারায়ণ। ওই বাড়ির চারপাশে এখনও চাপ চাপ রক্ত। নারায়ণের পরিবারের সঙ্গে তার জ্ঞাতি দাদা আনন্দ মণ্ডলদের চলাচলের বারাম রাস্তা নিয়ে তিরিশ বছর ধরে ঝামেলা চলছে।

টুয়েলভ পাশের পর কাঠের নকশা শেখার জন্য ভিন রাজ্যে চলে যায় নারায়ণ। আসাম থেকে নকশা মিস্ত্রি হয়ে ফিরে নাম করে। তার পর বছর দশেক আগে সন্ন্যাসী হওয়ার ইচ্ছেয় একটি ধর্মীয় সংগঠনে যুক্ত হয়। সেই সংগঠনের একটি শাখায় কাজ করার সময় কুকর্মের দায়ে তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ সেখান থেকে টাকা হাতিয়ে ছিল। এরপর গ্রামে ফিরে আশ্রম গড়ার উদ্যোগ নেয়। সেই আশ্রম গড়ার জন্য পূর্ব মেদিনীপুরের নানা প্রান্ত থেকে কয়েক লক্ষ টাকা তুলে ছোট একটি ঘর তৈরি করে। গ্রামবাসীদের চোখ ফাঁকি দিতে বাচ্চাদের গান, ব্যায়াম শেখাত। ঘটনার পর গ্রামবাসীরা সন্ন্যাসীর ডেরায় অস্ত্রের ভাণ্ডার, স্টিলের বর্ম, নানা ধরনের ঢাল, অতিদাহ্য তরল দেখে হতবাক। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পুলিস সন্ন্যাসীর ডেরা সিল করেনি, ফলে প্রমাণ লোপাটের আশঙ্কা রয়েছে। শনিবার রাতে সেখানে আলো জ্বলতে দেখা গিয়েছে। গ্রামবাসীরা বলেন, ওই শয়তান যাতে গ্রামে না ফিরতে পারে তার ব্যবস্থা করুক পুলিস। নারায়ণের বাবা সুবলচন্দ্র মণ্ডল ছেলের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন।

No comments