চোখের সামনের সব কিছু কালো পর্দা, অন্তরের আলোকেই দেখে - সৌম্য শীষচোখের সামনের সব কিছু কালো পর্দায় মোড়া৷অন্তরের আলোকেই দেখে আকাশভরা সূর্য-তারার পৃথিবী৷এভাবেই কেটে গিয়েছে ২৯ টা বছর।পরনে দর্জি থেকে তৈরি করা ফুল শার্ট,প্যান্ট চোখে কা…
চোখের সামনের সব কিছু কালো পর্দা, অন্তরের আলোকেই দেখে - সৌম্য শীষ
চোখের সামনের সব কিছু কালো পর্দায় মোড়া৷অন্তরের আলোকেই দেখে আকাশভরা সূর্য-তারার পৃথিবী৷এভাবেই কেটে গিয়েছে ২৯ টা বছর।পরনে দর্জি থেকে তৈরি করা ফুল শার্ট,প্যান্ট চোখে কালো চশমা,কাঁধে ঝোলানো ব্যাগ,লম্বা রোগা ছিপছিপে চেহারা।তেরো বছর বয়স থেকে স্টিক হাতে নিয়ে জীবনের লড়াই শুরু হয়েছিল।রাস্তা পারাপার,গাড়িতে ওঠা-নামা,গ্ৰাম টপকে শহরের অলিগলি পেরিয়ে কলকাতার রাজপথে হেঁটে চলা।
হলদিয়া শিল্পশহর লাগোয়া দেভোগের বড়বাড়ি গ্ৰামের বাসিন্দা সৌম্যশীষ সামন্ত।জন্ম থেকেই জন্মান্ধ।কিন্তু সকলের থেকে অনেক অনেক বেশি দেখে সে।মাত্র ৫ বছর বয়স থেকে গান শেখায় হাতেখড়ি।তার গান শেখার প্রথম গুরু শশীভূষণ রানা।তিনি আজ আর নেই,কিন্তু তার শিষ্য সৌম্যশীষ অন্ধকারের মধ্যেও আলোকিত হয়ে আছে।
ছেলেবেলা থেকেই সৌম্যশীষ শান্ত,গান পাগল।ছোট থেকেই ব্রইল পড়া,রাইটার নিয়ে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা মাধ্যমিক দেওয়া।এরপর ২০১২ সালে স্থানীয় মনোহরপুর হাইস্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পরিয়ে সমস্ত প্রতিকূলতাকে অগ্রাহ্য করে,হলদিয়ার রামপুর কলেজ থেকে বাংলায় স্নাতক।তারপর অর্থিক সমস্যার জন্য মেধাবী সৌম্যশীষ-এর পড়াশোনা আর এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।
রোজ সকাল উঠে হারমোনিয়াম ধরে গানের রেওয়াজ করা।তানপুরা বাজিয়ে গান গাওয়া।এই গান গাওয়ার মধ্যেই সুখ খুঁজে পায় সে।বিবাহিত সৌম্যশীষের বাড়িতে বৃদ্ধ মা,বাবা,ভাই ও ভাইবৌ রয়েছে।
বর্তমানে জন ছাত্রছাত্রীকে গান শেখায় সৌম্যশীষ।হলদিয়ার একটি নৃত্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত। শিল্প শহর হলদিয়া সংস্কৃতির ধারক-বাহক বহন করে নিয়ে চলছেন সৌম্যশীষ সামন্ত।
No comments