"ক্লাসরুম যেন ট্রেনের কামরা, হলদিয়ার পরাণচক উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দা সেজেছে অবিকল স্টেশনের আদলে"হলদিয়া:- দূর থেকে দেখলে মনে হবে চলন্ত ট্রেন।কিন্তু আদপে সেটি একটি প্রাথমিক স্কুল।হলদিয়া শিল্পশহর লাগোয়া পুরসভার ১…
"ক্লাসরুম যেন ট্রেনের কামরা, হলদিয়ার পরাণচক উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দা সেজেছে অবিকল স্টেশনের আদলে"
হলদিয়া:- দূর থেকে দেখলে মনে হবে চলন্ত ট্রেন।কিন্তু আদপে সেটি একটি প্রাথমিক স্কুল।হলদিয়া শিল্পশহর লাগোয়া পুরসভার ১৪ নং ওয়ার্ডে হলদিয়া চক্রের অন্তগর্ত পরাণচক উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়।ট্রেনে ওঠার জন্য যেমন প্ল্যাটফর্মে ভিড় পড়ে,তেমনি সকাল দশটা বাজলেই ওই প্রাথমিক স্কুলের গেটের সামনে হাজির হয় পড়ুয়ারা।তারপর গেট খুলতেই যে যার নিজের কামরায় অর্থাৎ ক্লাসরুমে চলে যায়।ঘড়ির কাঁটায় দশটা পঁয়তাল্লিশ হতেই যেন ট্রেন ছাড়ার বাঁশি বাজছে।পার্থনার লাইনে দাঁড়ানোর জন্য ছুটছে কচিকাঁচারা।এরপর একের পর এক ক্লাস চলছে।মনে হবে যেন ট্রেনে করে কোথাও বেড়াতে যাওয়া হচ্ছে।দীর্ঘ লম্বা স্কুল বিল্ডিং।মধ্যমণিতে প্রবেশদ্বার।
বামদিকে ট্রেনের কামরা আর ডানদিকে রবীন্দ্রনাথের ভাবনা প্রয়োগে পাঠদানের ব্যাবস্থা করা হয়েছে।
কোন শ্রেনীকক্ষের নাম 'শান্তিনিকেতন' কোনটা আবার 'কিশলয়','কচিপাতা'।
কাঠের বেঞ্চ ছেড়ে আসনে বসে চলছে পড়াশোনা।
দেওয়ায় জড়ে রবীঠাকুরের গান,কবিতা ও বানী।
পানীয় জলের উৎস ও সংরক্ষণ বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের জানাতে দেওয়ালে একটি চিত্র অঙ্কন করা হয়েছে।
জল খাওয়া ও মুখ ধোয়ার বেসিং নদীতে নৌকার আদলে তৈরি করা হয়েছে।এবং মুখ ধোয়ার পর অতিরিক্ত জল পুনরায় যাতে ভূগর্ভে পৌঁছে যায়,সে ব্যবস্থা করা হয়েছে।
স্কুল বিল্ডিং-এর কোথাও ইট,বালির দর্শণ নেই।যেদিকেই তাকানো যায় শুধুই ছবি ও বিভিন্ন মণীষীদের বানী।
দেওয়াল জুড়ে কোথাও রবীন্দ্রনাথের সহজপাঠ,আবার কোথাও স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস।হলদিয়ার এই প্রাথমিক স্কুল রীতিমতো তাক লাগিয়েছে সকলকেই।বর্তমানে শিশু শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পযর্ন্ত পড়ানো হয়।ছাত্রছাত্রী সংখ্যা ১২২ জন।৮ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছে।
রোজ পার্থনার লাইনে দাঁড়িয়ে স্বামীজীর বাণী ও দিনপঞ্জি উচ্চারণ করে পড়ুয়ারা।
১৯৫২ সালে শুরু হয় স্কুলটি পথচলা শুরু করে।হলদিয়ায় কারখানা তৈরির জন্য ২০০৭ সাল থেকে জমি অধিগ্ৰহণের শুরু হয়। ২০১২ সালে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয় স্কুলটিকে।
স্কুলের পুরানো ভবন ভেঙে তৈরি হয়েছে কারখানা।কিন্তু তৎকালীন জেলা শাসকের হস্তক্ষেপে পড়ুয়াদের পড়াশোনায় ছেদ পড়েনি।
২০১৮ সালে ২৬ শে জানুয়ারি জেলা শাসক,প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয় একটি কারখানার সহযোগিতায় ৩ টি শ্রেণীকক্ষ তৈরি করে ৭২ জন পড়ুয়া নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকুমার শেঠ শিশুর মনে সার্বিক বিকাশের জন্য পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধূলা ও বিনোদনের জন্য স্কুল বিল্ডিং সাজিয়ে তোলেন।কোভিডের কারনে দু'বছর পর স্কুল খুলেছে।
হলদিয়ার এইচপিএল লিঙ্ক রোড়ের ধারে স্কুল।ব্যস্ত রাস্তায় সর্বদা গাড়ি ছুটছে,ছাত্রছাত্রীদের রাস্তা পার হওয়ার জন্য রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ রাখার জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা আবেদন জানিয়েছে।প্রধান শিক্ষক স্কুলের চারিদিকে প্রাচীর,স্মার্ট ক্লাসরুম ও পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।
No comments