এবার সরকারি বিদ্যালয় ড্রেস নীল সাদা পোশাক
রাজ্যের সমস্ত সরকারি, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত এবং সরকার পোষিত স্কুলের পড়ুয়াদের ইউনিফর্ম একই রঙের হতে চলেছে। এবার থেকে সাদা জামার সঙ্গে আকাশি রঙের প্যান্ট পরবে তারা। মেয়েদের চুড়িদার বা ফ্রক…
এবার সরকারি বিদ্যালয় ড্রেস নীল সাদা পোশাক
রাজ্যের সমস্ত সরকারি, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত এবং সরকার পোষিত স্কুলের পড়ুয়াদের ইউনিফর্ম একই রঙের হতে চলেছে। এবার থেকে সাদা জামার সঙ্গে আকাশি রঙের প্যান্ট পরবে তারা। মেয়েদের চুড়িদার বা ফ্রকের রংও হবে সাদা ও আকাশি-নীল। নবান্নের নির্দেশ শিক্ষাদপ্তরের বিভিন্ন স্তরে পৌঁছে দেওয়া শুরু হয়েছে। এবার কেন্দ্রীয়ভাবে পোশাক বিলি হবে। তাই আলাদা আলাদা রঙের পোশাক দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে শিক্ষাদপ্তরের একটি সূত্র। তবে, এ নিয়ে শিক্ষকদের একাংশের আপত্তিও রয়েছে।
আগের ইউনিফর্ম দেওয়ার পদ্ধতিতে বদল আসছে। এতদিন স্কুলগুলি সরকারের টাকায় কাপড় কিনে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে ইউনিফর্ম তৈরি করিয়ে পড়ুয়াদের দিত। অনেক ক্ষেত্রেই বাজারে সেই কাপড় আসত ভিন রাজ্য থেকে। তবে, এরাজ্যে বয়ন শিল্পের উন্নতি ঘটাতে সেই নিয়মে বদল আনার পরিকল্পনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন ঠিক হয়েছে, রাজ্যের ক্ষুদ্র ও ছোট শিল্প সংস্থাগুলির কাপড় কিনবে রাজ্যেরই অধীন সংস্থা তন্তুজ। সেই কাপড় তন্তুজের মাধ্যমে পাবে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি। তারপর পড়ুয়াদের মাপ নিয়ে ইউনিফর্ম তৈরি করে স্কুলে পৌঁছে দেবে তারা।
সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছেলেদের জন্য একটি হাফ ও ফুলশার্ট এবং একটি হাফ ও ফুলপ্যান্ট পাবে। প্রয়োজনে টাইও দেওয়া হবে। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারা একটি হাফ এবং একটি ফুলশার্টের পাশাপাশি দু’টি করে ফুলপ্যান্ট পাবে। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েরা দু’টি শার্ট এবং একটি স্কার্ট ও একটি টিউনিক পাবে। স্কুল চাইলে টাইও দেওয়া হবে। ষষ্ঠ থেকে অষ্টমের ছাত্রীরা পাবে দু’জোড়া সালোয়ার কামিজ এবং ওড়না। ছেলেদের প্যান্টের পকেটের জন্য হালকা কাপড়ের হিসেব আলাদা করে দিতে হবে প্রস্তুতকারকদের। লোগো-সহ ব্যাজ দপ্তর থেকেই আসবে। এর আগে রাজ্য সরকার অনলাইনে বিভিন্ন স্কুলের কাছ থেকে ইউনিফর্মের ‘স্পেসিফিকেশন’ চেয়েছিল। কোন স্কুল কী রঙের পোশাক চায়, তা একরঙা হবে, না ডোরাকাটা, সে-সব জানাতে হয়েছিল। স্কুলগুলির কাছে আগের ইউনিফর্ম বদল করে নতুন ইউনিফর্ম চালুর বিকল্পও ছিল। সেই অনুযায়ী স্কুলগুলি দপ্তরকে তা জানায়। তাদের আশা ছিল, সেই অনুযায়ীই মিলতে চলেছে ইউনিফর্ম। তবে, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে এই তথ্য স্কুলগুলির কাছে আসায় তারা খুব একটা সন্তুষ্ট নয়। অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস-এর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দনকুমার মাইতি বলেন, আমরা রাজ্যজুড়ে একই ধরনের ইউনিফর্মের বিপক্ষে। এতে পড়ুয়াদের আলাদা করে চিহ্নিত করা কঠিন হবে। অন্য স্কুলের পড়ুয়া যদি আমাদের স্কুলে চলে আসে, তাহলে হঠাৎ করে বোঝা যাবে না। স্কুলের পছন্দ অনুযায়ী ইউনিফর্ম দেওয়ার আবেদন জানাচ্ছি। তৃণমূলের শিক্ষক নেতা তথা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান অজিতকুমার নায়েক বলেন, সরকারি স্কুলের ইউনিফর্ম এতদিন কমবেশি একইরকম ছিল। খুব বেশি বৈচিত্র্য তো আগেও ছিল না। তাহলে এত প্রশ্ন উঠছে কেন?
No comments