Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

২৪১বছরে পড়ল সুতাহাটার মিশ্র ও ভট্টাধিকারী পরিবারের প্রাচীন পঞ্চমীর দোল উৎসব

২৪১বছরে পড়ল সুতাহাটার মিশ্র ও ভট্টাধিকারী পরিবারের প্রাচীন পঞ্চমীর দোল উৎসবসোমবার থেকে শুরু হল সুতাহাটার মিশ্র ও ভট্টাধিকারী পরিবারের শতাব্দী প্রাচীন পঞ্চমীর দোল উৎসব। দিন বদলেরর সঙ্গে পারিবারিক  দোল উৎসব এখন সার্বজনীন হয়ে উঠ…

 


২৪১বছরে পড়ল সুতাহাটার মিশ্র ও ভট্টাধিকারী পরিবারের প্রাচীন পঞ্চমীর দোল উৎসব

সোমবার থেকে শুরু হল সুতাহাটার মিশ্র ও ভট্টাধিকারী পরিবারের শতাব্দী প্রাচীন পঞ্চমীর দোল উৎসব। দিন বদলেরর সঙ্গে পারিবারিক  দোল উৎসব এখন সার্বজনীন হয়ে উঠেছে। ২৪১বছরে পড়ল এই দোল উৎসব।

 বৃন্দাবনজিউর পঞ্চমীর দোল উৎসবকে ঘিরে মাতোয়ারা সুতাহাটার অনন্তপুর ও আশপাশের গ্রামের মানুষজন। এদিন সন্ধে থেকে চতুর্থীর আখড়া ও শোভাযাত্রা দেখতে ভিড় করেন উৎসাহী মানুষজন। বহু ভক্ত কীর্তন দলের নাচে মেতে ওঠেন। চতুর্থীর আখড়া ও পঞ্চমীর দোল দেখতে আশপাশের গ্রাম তো বটেই, শিল্পশহর হলদিয়া থেকেও প্রাচীন দোল উৎসব দেখতে ছুটে আসেন মানুষ

ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন।https://youtu.be/qZ9xU0tzV2M

সুসজ্জিত বৃন্দাবনজিউকে নিয়ে দোলের বর্ণময় শোভাযাত্রায় দেখতে ভিড় হয় কয়েক হাজার মানুষের। দোল উপলক্ষে ইতিমধ্যে গ্রামীন মেলাও শুরু হয়েছে। ২০২০সালে করোনা ও লকডাউনের ঠিক আগেই শেষবার ধুমধাম করে দোল হয়েছিল। গতবছর করোনার জন্য নমোনমো করে দোল হয়। সেজন্য এবার প্রাচীন পঞ্চমীর দোলকে ঘিরে আলাদা আবেগ রয়েছে। 

অনন্তপুর দেশপ্রাণ জাতীয় বিদ্যালয়ের পাশেই রয়েছে ভট্টাধিকারী ও মিশ্র পরিবারের শতাব্দী প্রাচীন বৃন্দাবনজীউর মন্দির ও দোলমঞ্চ।


 পঞ্চমীর দোল উৎসবের অন্যতম কর্মকর্তা সুমনকল্যাণ মিশ্র জানান, ১৭৮১সালে কাঁথির মাজনামুঠা পরগণার রাজা যাদবরাম রায় সুতাহাটার দোরো পরগণার ৫২বাটি জমি অর্থাৎ ১০৪০বিঘা(এক বাটি সমান ২০বিঘা জমি) ব্রাহ্মণ রাধাবল্লভ ভট্টাধিকারীকে দান করেন। একই সঙ্গে কালো কষ্ঠীপাথরের বৃন্দাবনজিউর মূর্তিও দান করেন। সেদিন থেকেই এই গ্রামে পঞ্চমীর দোল উৎসব পালিত হচ্ছে। পরবর্তীকালে ভট্টাধিকারীদের দৌহিত্রসূত্রে মিশ্ররা দেবোত্তর সম্পত্তির অংশীদার হয় এবং দোল উৎসবের অন্যতম আয়োজক হয়। তিনি বলেন, একসময় হলদিয়ার বিভিন্ন জায়গায় বৃন্দাবনজিউর নামে জমি ছিল। শিল্পশহর গড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তা অধিগৃহীত হয়। হলদিয়ায় এখনও একটি জায়গার নাম বৃন্দাবনচক। 

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এই গ্রামের মানুষ সারা বছর পঞ্চমীর দোল উৎসবের অপেক্ষায় থাকি। চতুর্থীর সন্ধ্যায় আখড়া পোড়া দেখতে বাইরে থেকে বহু মানুষ ভিড় করেন। মন্দির থেকে পালকিতে করে শোভাযাত্রা সহকারে এদিন দোলমঞ্চে আনা হয় বৃন্দাবনজিউকে। দোলমঞ্চের কাছে এদিন ১০০কিলোর বেশি বাতাসা হরিলুট হয়। তারপর আবির খেলা ও আখড়া পোড়া হয়। কথিত আছে, বৃটিশ আমলে দেবোত্তর সম্পত্তি যখন বেহাত হয়ে যাচ্ছিল, সেই সময় বৃন্দাবনজিউ আদালতে ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে গিয়ে সাক্ষী দিয়েছিলেন। বৃন্দাবনজিউকে নিয়ে এমন নানা ধরনের লোককথা কান পাতলে শোনা যায় গ্রামে। দোল উপলক্ষে বৃন্দাবনজিউকে এদিন দুপুর থেকে রাজভোগ দেওয়া শুরু হয়েছে। চতুর্থীর দিন প্রায় দু’হাজার ভক্তকে রাতে প্রসাদ হিসাবে সাদা ভাত, ডাল, কুমড়োর ঘণ্ট, চাটনি ও পায়েস খাওয়ানো হয়। দোলের দিন সকালে বৃন্দাবনজিউর পরমান্ন সহ বিশেষ ভোগপ্রসাদ খাওয়ানো হবে দর্শনার্থীদের।

স্থানীয় শিক্ষক জয়দেব পাল বলেন, আজ থেকে পঞ্চাশ বছর আগে অনন্তপুরের পঞ্চমীর দোল ছিল সুতাহাটার বড় উৎসব। দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ আসতেন। কয়েকদিন ধরে কীর্তন, যাত্রাপালা, প্রসাদ বিতরণকে ঘিরে আড়ম্বরের শেষ থাকত না। এখন জৌলুস কমলেও নতুন প্রজন্মের অনেকেই শতাব্দী প্রাচীন দোল দেখতে আসেন। এখনও পঞ্চামীর দোল দেখতে গ্রামের মানুষজন আত্মীয়দের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান।

No comments