ইউক্রেনে আটকে হলদিয়ার মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রী সহ দুই মেদিনীপুরের ১১ জন মেডিক্যাল পড়ুয়া আটকে রয়েছেনযুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে আটকে হলদিয়ার গিরিশমোড়ের ষষ্ঠ বর্ষের মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রী দিপাঞ্জলি বেরা
ইউক্রেনে আটকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা শি…
ইউক্রেনে আটকে হলদিয়ার মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রী সহ দুই মেদিনীপুরের ১১ জন মেডিক্যাল পড়ুয়া আটকে রয়েছেন
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে আটকে হলদিয়ার গিরিশমোড়ের ষষ্ঠ বর্ষের মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রী দিপাঞ্জলি বেরা
ইউক্রেনে আটকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা শিল্প শহর হলদিয়া পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হারাধন বেরার একমাত্র মেয়ে মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রী দ্বীপাঞ্জলি বেরা।তিনি কিয়েভ মেডিক্যাল কলেজের ষষ্ঠ বর্ষের ছাত্রী।বাড়ি হলদিয়ার গিরিশমোড় সংলগ্ন বাসুদেবপুরে।গতকাল দুপুরে সাইরেন বাজাতেই বাঙ্কারে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন মেডিক্যালের ফাইনাল ইয়ারের ওই ছাত্রী।খবর পেয়েই ভীষণ উদ্বেগের মধ্যে আছেন পরিবারের সদস্যরা।শুক্রবার সকাল থেকেই সুযোগ পেলেই দফায় দফায় সরকারি ফোন ও হোয়াটস্যাপে মেসেজ ও ভিডিও কল করছে।
বাড়ি ফিরে আসার জন্য আকুতি মিনতি করছে দ্বীপাঞ্জলি।জানিয়েছেন ছাত্রীর মা মৌসুমী বেরা।২০১৬ সালে ইউক্রেনে যায় ওই মেধাবী ছাত্রী। ইতিমধ্যে খোঁজখবর নিয়েছেন হলদিয়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রদীপ দাস এবং সম্পাদক শিবুবাবু (নেপু) পৌরসভার চেয়ারম্যান সুধাংশু শেখর মন্ডল জানিয়েছেন ওই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়েছে। আমাদের রাজ্যে অনেকেই আটকে রয়েছেন যাহাতে আটকে পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের দ্রুত আনা যায় সে ব্যাপারে উর্ধতম প্রশাসনিক দপ্তরের জানানো হয়েছে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে দুই মেদিনীপুরের ১১ জন মেডিক্যাল পড়ুয়া আটকে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার আটজন এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার তিনজন রয়েছেন। রাজ্য সরকার ইউক্রেনে আটক এরাজ্যের পড়ুয়াদের সহযোগিতার লক্ষ্যে কন্ট্রোলরুম খোলার পরই জেলায় জেলায় এসংক্রান্ত তথ্য চেয়ে পাঠানো হয়। আবশ্যিক হিসেবে প্রত্যেকের পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখ করতে বলা হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি ছ’জন পড়ুয়ার পাসপোর্ট নম্বর সহ তথ্য পাঠিয়েছেন। সন্ধ্যায় আরও দু’জনের তথ্য পেয়েছে প্রশাসন। তাঁদের মধ্যে কেউ বাঙ্কারে, কেউবা কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যে আটকে পড়েছেন। তাঁরা পরিবারের সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতির সাম্প্রতিক মুহূর্ত শেয়ার করছেন।
হলদিয়ার গিরিশমোড় এলাকার দীপাঞ্জলি বেরা কিয়েভ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির ষষ্ঠ বর্ষের ছাত্রী। এদিন দুপুরে সাইরেন বাজতেই সহপাঠীদের সঙ্গে একটি বাঙ্কারে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন দীপাঞ্জলি। হোয়াটসঅ্যাপে বাড়িতে সেই বাঙ্কারে কাতারে কাতারে মানুষের আশ্রয় নেওয়ার ছবি শেয়ার করেছেন ওই ডাক্তারি ছাত্রী। তমলুক শহরে ৮নম্বর ওয়ার্ড তৃণমূল সভাপতি বাসুদেব ভৌমিকের ছেলে সোমশুভ্র ভৌমিক ইউক্রেনের টারনোপিল স্টেট মেডিক্যাল কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। শহরের টাউন পদুমবসানে বাড়ি। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ছেলে বিদেশে আটকে থাকায় উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠায় বাসুদেববাবু ও সহ গোটা পরিবার।
মহিষাদলের লক্ষ্যার প্রীতম সামন্ত কিয়েভ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। তমলুক ব্লকের নিমতৌড়ির সোনিয়া ভৌমিক মেডিক্যালের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। বাবা দেবতোষবাবু পেশায় ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, মেয়ের সঙ্গে প্রতি মুহূর্তে কথা হচ্ছে। ওরা ক্যাম্পাসের মধ্যেই রয়েছে। সাইরেন বাজলে সুড়ঙ্গের মধ্যে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার একবার সাইরেন বেজেছিল। তখন সবাই সুড়ঙ্গের মধ্যে আশ্রয় নিয়েছিল। নন্দকুমার থানার ভুঁইঞাখালি গ্রামের অর্ণব মান্না এবং মহিষাদল থানার তেরপেখ্যা গ্রামের দেবজিৎ বর্মণ ডাক্তারি পড়ার জন্য ইউক্রেন পাড়ি দিয়েছিলেন। তাঁরাও আটকে রয়েছেন। কাঁথির কীর্তিসোম মান্না এবং জেলার শুভাশিস ভুঁইঞা নামে আরও দুই ছাত্র ইউক্রেনে আটকে রয়েছে বলে সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসনের কাছে খবর পৌঁছেছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবংয়ের বাসিন্দা সুশোভন বেরা ইউক্রেনের একটি মেডিক্যাল কলেজের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে ছেলে আটকে পড়ায় গোটা পরিবার উদ্বিগ্ন। টিভির পর্দায় চোখ আটকে যাচ্ছে। বাবা নারায়ণচন্দ্র বেরা জানান, কেন্দ্র সরকারের কাছে একটাই অনুরোধ, এদেশীয় পড়ুয়াদের ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হোক। নারায়ণগড় ব্লকের বৈতা জনার্দনপুর গ্রামের অনিন্দিতা মাইতি এবং দাঁতন থানার গড়হরিপুর গ্রামের অনন্যা পাইক ডাক্তারি পড়তে গিয়ে ইউক্রেনে আটকে গিয়েছেন। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, আমাদের জেলার এপর্যন্ত ছ’জন মেডিক্যাল পড়ুয়া ইউক্রেনে রয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। তাঁদের প্রত্যেকের পাসপোর্ট নম্বর সহ বিস্তারিত তথ্য এদিন রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। ডাক্তারি পড়ুয়া দীপাঞ্জলী বেরা।
No comments