ভোট ময়দান থেকে সরলেন পুত্র সহ দু’বারের কাউন্সিলার
সেচমন্ত্রী তথা নির্বাচন কমিটির প্রধান সৌমেন মহাপাত্রের হস্তক্ষেপে অবশেষে তমলুক পুরসভার ১০নম্বর ওয়ার্ড থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করলেন টানা ১০বছরের প্রাক্তন কাউন্সিলার রঞ্জিতা …
ভোট ময়দান থেকে সরলেন পুত্র সহ দু’বারের কাউন্সিলার
সেচমন্ত্রী তথা নির্বাচন কমিটির প্রধান সৌমেন মহাপাত্রের হস্তক্ষেপে অবশেষে তমলুক পুরসভার ১০নম্বর ওয়ার্ড থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করলেন টানা ১০বছরের প্রাক্তন কাউন্সিলার রঞ্জিতা জানা ও তাঁর ছেলে কুশধ্বজ জানা। এবার ১০নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন দলের যুব সংগঠনের রাজ্য সহ সভাপতি পার্থসারথি মাইতি। রঞ্জিতাদেবী টিকিট না পাওয়ায় অভিমানে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। সেইসঙ্গে তাঁর ছেলেও ওই ওয়ার্ড থেকে মনোনয়ন জমা করেন। ওই ওয়ার্ডেই সৌমেনবাবুর বিধায়ক কার্যালয় রয়েছে। তমলুক শহরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ডে দলের প্রাক্তন কাউন্সিলার সহ দু’জন গোঁজ প্রার্থী থাকায় অস্বস্তি বাড়ছিল শাসক শিবিরে। শেষপর্যন্ত সৌমেনবাবু নিজে আসরে নামেন। শনিবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষদিন মা ও ছেলেকে নিজেদের কার্যালয়ে ডেকে পাঠান মন্ত্রী। সেখানে তাঁদের সঙ্গে কথা বলার পর দু’জন লড়াই থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। এরফলে ১০নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল সুবিধাজনক জায়গায় পৌঁছে গেল বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে। রঞ্জিতাদেবী বলেন, দল প্রার্থী না করায় অভিমানে নির্দল প্রতীকে প্রার্থী হয়েছিলাম। সৌমেনবাবুর নির্দেশে এদিন ছেলেকে নিয়েই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছি।
সংরক্ষণের গেরোয় এবার তমলুক পুরসভার বেশিরভাগ তৃণমূল প্রার্থী নিজেদের এলাকা ছেড়ে অন্য ওয়ার্ডে গিয়ে লড়াই করছেন। ২০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১০টিতে নতুন মুখ এনেছে তৃণমূল। ১০নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী পার্থসারথিবাবুও নতুন মুখ। তাঁর বিপরীতে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন দলের নগর মণ্ডলের সভাপতি সুকান্ত চৌধুরী। এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ডে দলের ১০বছরের প্রাক্তন কাউন্সিলার নির্দল হিসেবে মনোনয়ন জমা করায় তৃণমূল শিবিরে অস্বস্তি ছিল। শনিবার মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সেটা মিটল। এই ঘটনায় তৃণমূল প্রার্থী পার্থসারথিবাবুও অনেকটাই চিন্তামুক্ত। তিনি বলেন, দলের নির্দেশকে শিরোধার্য করে রঞ্জিতাদেবী এবং তাঁর ছেলে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এজন্য তাঁদের কৃতজ্ঞতা জানাই। তমলুক পুরসভায় মোট চারজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। ১০নম্বর ওয়ার্ডে রঞ্জিতাদেবী ও তাঁর ছেলে ছাড়াও ৮নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেস প্রার্থী রমেন্দ্রনাথ দত্ত এবং ৪নম্বর ওয়ার্ডে আর এক নির্দল প্রার্থী সঞ্জীব গড়াই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। সঞ্জীব এলাকার বিজেপি কর্মী হিসেবে পরিচিত। দলের টিকিট না পাওয়ায় গোঁজ প্রার্থী হন। শেষমেশ এদিন মনোনয়ন তুলে নিয়েছেন। তবে, ৪নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলার ভানুপদ সাহা গোঁজ হিসেবে রয়ে গিয়েছেন। ওই ওয়ার্ড নিয়ে তৃণমূলের চিন্তা রয়েই গেল। শনিবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিনে ভানুবাবুকে লড়াই থেকে সরে দাঁড়ানোর বার্তা পাঠানো হলেও তিনি মানেননি। মনোনয়ন প্রত্যাহার করে কংগ্রেস নেতা রমেন্দ্রনাথ দত্ত বলেন, বামেরা এখানে প্রার্থী দিয়েছে। বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই হোক চাইনি। তাই সরে দাঁড়ালাম। মন্ত্রী সৌমেনবাবু বলেন, রঞ্জিতা জানা এবং তাঁর ছেলে দু’জনেই নির্দল প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করেছেন। এজন্য তাঁদের ধন্যবাদ। আমরা তমলুক পুরসভায় ২০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২০টিতেই জয়ের আশা করছি।
No comments