Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেনে আতঙ্কগ্রস্ত ভারতীয় পড়ুয়াদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে ত্রাতার ভূমিকা নিয়েছেন কিয়েভের বাঙালি চিকিৎসক পৃথ্বিরাজ ঘোষ

যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেনে আতঙ্কগ্রস্ত ভারতীয় পড়ুয়াদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে ত্রাতার ভূমিকা নিয়েছেন কিয়েভের বাঙালি চিকিৎসক পৃথ্বিরাজ ঘোষ
যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেনে আতঙ্কগ্রস্ত ভারতীয় পড়ুয়াদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে ত্রাতার ভূমিকা নিয়েছেন …

 


যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেনে আতঙ্কগ্রস্ত ভারতীয় পড়ুয়াদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে ত্রাতার ভূমিকা নিয়েছেন কিয়েভের বাঙালি চিকিৎসক পৃথ্বিরাজ ঘোষ


যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেনে আতঙ্কগ্রস্ত ভারতীয় পড়ুয়াদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে ত্রাতার ভূমিকা নিয়েছেন কিয়েভের বাঙালি চিকিৎসক পৃথ্বিরাজ ঘোষ। রাজধানী কিয়েভের প্রশাসনিক এলাকা ভেলিকা ভাসিলকিভস্কা স্ট্রিট সংলগ্ন আবাসনে ওই চিকিৎসকের ফ্ল্যাট এখন ভারতীয় এবং বাঙালি পড়ুয়াদের ‘রেসকিউ কন্ট্রোল রুম’ হয়ে উঠেছে। তিনি ৩৫জন ভারতীয় ডাক্তারি পড়ুয়াকে দেশে ফেরার ব্যবস্থা করেছেন। ওই পড়ুয়ারা প্রথমে সড়কপথে বাসে চেপে প্রায় ৯০০কিলোমিটার পথ পেরিয়ে ইউরোপের পোল্যান্ড সীমান্তের কোনও রেসকিউ শিবিরে পৌঁছবে। তারপর সেখান থেকে পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশ হয়ে ভারতে ফিরবে। এদের জন্য বহু কষ্টে চারটি মিনি বাসের ব্যবস্থা করেন ওই চিকিৎসক। এদিকে, কিয়েভের বিভিন্ন মেডিকেল হস্টেলে বা ফ্ল্যাটে থাকা পড়ুয়ারা যাতে খাদ্য সঙ্কটে না পড়েন সেজন্য ১০০কিলো চাল ও ১০কিলো ডাল মজুত করে রেখেছেন নিজের ফ্ল্যাটে। 

একে বিদেশ-বিভুঁই, তার উপর যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেনে চিকিৎসক পৃথ্বিরাজবাবু এখন ভারতীয় পড়ুয়াদের আপনজন এবং অভিভাবক। ২০০১সাল থেকে তিনি ইউক্রেনে রয়েছেন এবং তাঁর সংস্থার মাধ্যমে ভারতীয় ডাক্তারি পড়ুয়াদের সহযোগিতা করেন। যুদ্ধ লাগার পর থেকে উদ্বেগে তাঁর ঘুম উড়ে গিয়েছে। মুহূর্মুহু ফোন আসছে মোবাইলে। কেউ দেশে ফিরতে চায়, কেউ বিধ্বস্ত এলাকায় আটকে পড়েছে আবার কারও কাছে খাবার কেনার টাকা পর্যন্ত নেই। তিনি জানান, শুক্রবার ৩৫জন পড়ুয়াকে দেশের ফেরার ব্যবস্থা করেছেন। কিয়েভ থেকে এখন হাজার হাজার মানুষ সড়ক পথে ভয়ে পালাচ্ছে। তবে উড়ান বন্ধ থাকায় সবাই সড়ক পথে ইউক্রেনের সীমান্তে পূর্ব ইউরোপের পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, রোমানিয়ার মতো দেশে চলে যাচ্ছে শরাণার্থী হিসেবে। সেজন্য কোনও গাড়ি পাওয়া দুষ্কর। চারগুণ ভাড়া দিলেও গাড়ি মিলছে না। নিজের পরিচিতি কাজে লাগিয়ে পৃথ্বিরাজবাবু অপেক্ষাকৃত কম খরচে চারটি বাস ব্যবস্থা করে দিয়েছেন পড়ুয়াদের জন্য। ওই বাসে ১৫জন বাঙালি পড়ুয়া সহ ওড়িশা, মহারাষ্ট্রের পড়ুয়ারা রয়েছেন।

পৃথ্বিরাজবাবু জানান, ২০১৪সালে তিনি রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ দেখার অভিজ্ঞতা থেকে এবার একমাস আগে থেকেই পড়ুয়াদের সতর্ক করেছিলেন। আসাম সহ বেশ কিছু রাজ্যের পড়ুয়াকে সময়মতো দেশে ফেরার ব্যবস্থাও করে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু শেষ মুহূর্তে প্লেনের ভাড়া তিনগুণ বেড়ে যাওয়ায় ভারতীয় পড়ুয়ারা বিপাকে পড়েছেন। ২৫হাজার টাকার টিকিটের দাম বেড়ে হঠাৎ ৮০হাজার টাকা হয়ে গিয়েছে। এখন পড়ুয়াদের বাড়ি থেকে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা ফোন করছেন। পড়ুয়াদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সাইরেন বাজলে তারা যেন বাঙ্কারে চলে যায়। কিয়েভ থেকে আপাতত কোনও বিমান উড়বে না। সেজন্য ইউরোপ হয়ে দেশে ফেরার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে পড়ুয়াদের। কিন্তু বাসে করে ইউরোপ যাওয়ার টাকাও নেই বহু পড়ুয়ার কাছে। অভিভাবকরা অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠালেও এটিএমে দু’দিন আগেই সব টাকা শেষ হয়ে গিয়েছে। পড়ুয়াদের অনেকের কাছে সামান্য খাবার কেনার টাকাও নেই। সেজন্য কিনে রাখা চাল ও ডাল তাদের পাঠানো হচ্ছে বলে জানান পৃথ্বিরাজবাবু।

এদিকে, যুদ্ধ ঘোষণার পর দেশে ফেরার প্লেনের টিকিট কাটতে গিয়ে পড়ুয়াদের নাজেহাল হতে হচ্ছে। ৮০হাজার টাকা জমা দেওয়ার পর অনেকে টিকিট পাননি এমন অভিযোগও উঠেছে। বিপদকালে একসঙ্গে হাজার হাজার টাকা খুইয়ে সমস্যায় পড়েছেন এরাজ্যের ডাক্তারি পড়ুয়ারা। কিয়েভ মেডিকেল ইউনিভার্সিটির ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রী দীপাঞ্জলি বেরা জানান, কিয়েভের তাপমাত্রা মাইনাস ১৬ডিগ্রিতে নেমে যাওয়ায় বাঙ্কারে বেশিক্ষণ থাকতে পারছেন না। তিনটে মোটা কম্বলেও শীত কাটছে না। সেজন্য মাঝে মাঝে ফ্ল্যাটে এসে রুম হিটারে উত্তাপ নিচ্ছেন সকলে। সারাদিনে একবার নুনভাত ও ডিম সেদ্ধ খেয়ে কাটছে। দোকানপাট সব বন্ধ থাকায় কিছু খাবারও মিলছে না। পানীয় জলের হাহাকার দেখা দিয়েছে। ভারতীয় দূতাবাস থেকে পড়ুয়াদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, রাস্তায় বেরলে কেউ যেন ইউক্রেনের জাতীয় পতাকার রঙের অর্থাৎ নীল ও হলুদ জামা কাপড় না পরেন। পড়ুয়ারা পালা করে ঘুমোচ্ছেন যাতে সাইরেন বাজার শব্দ মিস না হয়।

No comments