বাঁকুড়ার এক্তেশ্বর শিবমন্দিরের "খাঁদারাণী" নারীরূপে পূজিত হলেও আসলে তিনি দ্বাদশভুজ লোকেশ্বর বিষ্ণুমূর্ত্তি!
বাঁকুড়া শহরের অদূরেই আছে সুবিখ্যাত ও সুবৃহৎ এক্তেশ্বর শিবমন্দির। দ্বারকেশ্বর নদের তীরে অবস্থিত মন্দিরটির প্রাঙ…
বাঁকুড়ার এক্তেশ্বর শিবমন্দিরের "খাঁদারাণী" নারীরূপে পূজিত হলেও আসলে তিনি দ্বাদশভুজ লোকেশ্বর বিষ্ণুমূর্ত্তি!
বাঁকুড়া শহরের অদূরেই আছে সুবিখ্যাত ও সুবৃহৎ এক্তেশ্বর শিবমন্দির। দ্বারকেশ্বর নদের তীরে অবস্থিত মন্দিরটির প্রাঙ্গনে রয়েছে অনেক ছোট-বড় মন্দির আর অজস্র মূর্ত্তি। যেন মূর্ত্তির একটি ছোটখাট সংগ্রহশালা।
মন্দিরের প্রবেশতোরণ পার হয়েই ডানদিকের একটি ঘরে আছেন খাঁদারাণী। সুবৃহৎ সুদর্শন মূর্ত্তি। এটি মূর্ত্তি চারুকলার একটি শ্রেষ্ঠ নিদর্শন। সবাই বড় ভক্তি করেন খাঁদারাণীকে। মূর্ত্তিটি অটুট আছে, শুধু নাকটা ভেঙ্গে গিয়েছে। আসলে এটি দ্বাদশভুজ লোকেশ্বর বিষ্ণুমূর্ত্তি।
মোটা ভারী একখন্ড পাথর, চারফুট দুই ইঞ্চি উচ্চতার এবং আড়াই ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট। প্রতিদিন সকালে প্রধান পুরোহিত ঘড়া ঘড়া জল ঢেলে স্নান করান মূর্ত্তিটিকে। সিঁদুরলিপ্ত না হওয়ায় মূর্ত্তিটির নয়নাভিরাম সৌন্দর্য সহজেই চোখে পড়ে।
পদ্মের উপর সম্পাদক ভঙ্গিতে দন্ডায়মান মূর্ত্তিটির মাথার পিছনে রয়েছে সপ্তফনাছত্র এবং প্রভামন্ডল। গলায় বৈজয়ন্তী মালা এবং গলা থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত ঝুলছে পাথরের বনমালা। আর আছে উপবীত। দ্বাদশভুজের উপরের দিকের হাতগুলিতে মুদ্রাভঙ্গি। নিচের দুটি হাতে কি আছে বোঝা যাচ্ছে না। আর দুটি হাত নৃত্যরত ভৈরবের মাথার উপর ছোঁয়া। লোককাহিনী প্রচলিত আছে - "মা খাঁদা রাণী লুকিয়ে চ্যাং মাছ খেয়েছিল, কিন্তু ছেলের মাথায় হাত দিয়ে দিব্যি করছে যে মাছ খাইনি।"
মাঝখানের হাতগুলিতে গদা, পদ্ম, অংকুশ ও শঙ্খ আছে বোঝা যায়। বাহুগুলি পাথর খোদাই অলংকার শোভিত। মূল মূর্ত্তির দুইপাশে দুটি বৃক্ষ, গাছের পাতা বোঝা যাচ্ছে। আর আছে নয় ইঞ্চি উচ্চতার দুটি নৃত্যরত ভৈরবমূর্ত্তি। তাদের পায়ের কাছে তিন ইঞ্চি উচ্চতার কুবের ও যক্ষমূর্ত্তি উপবিষ্ট অবস্থায় দেখা যায়। পাদপীঠে পূজারত আরও দুটি ছোট ছোট মূর্ত্তি আছে।
No comments