করোনায় কঠোর বিধি বন্ধ স্কুল-কলেজ, সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত লোকাল করোনার বাড়বাড়ন্ত রোধে কঠোর বিধি-নিষেধের পথে হাঁটল রাজ্য সরকার। আজ, সোমবার থেকেই রাজ্যজুড়ে বলবৎ হচ্ছে কড়া নিয়ন্ত্রণ। রবিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে এই ঘোষণা করেন মুখ্য…
করোনায় কঠোর বিধি বন্ধ স্কুল-কলেজ, সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত লোকাল
করোনার বাড়বাড়ন্ত রোধে কঠোর বিধি-নিষেধের পথে হাঁটল রাজ্য সরকার। আজ, সোমবার থেকেই রাজ্যজুড়ে বলবৎ হচ্ছে কড়া নিয়ন্ত্রণ। রবিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে এই ঘোষণা করেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। এই মর্মে নির্দেশিকাও নবান্নের তরফ থেকে জারি করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী, আজ থেকে রাজ্যের সব স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি সব অফিসেই সোমবার থেকে ৫০ শতাংশ হাজিরায় কাজ হবে। শুধু তাই নয়, নিত্যযাত্রীদের লাইফলাইন লোকাল ট্রেনও চলবে সকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। রাতে ১০টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত থাকবে কঠোর নিয়ন্ত্রণ। ছাড় দেওয়া হচ্ছে শুধু জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলিকে। দোকান-বাজার অবশ্য কোভিড বিধি মেনে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখায় অসুবিধা নেই। নির্দেশিকা মোতাবেক, আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত এই বিধি চালু থাকবে। রবিবার সকালে উচ্চ পর্যায়ের আধিকারিকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়। পরে বেলা ৩টেয় স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম এবং তথ্য সংস্কৃতি সচিব শান্তনু বসুকে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। তিনি জানান, ‘করোনা সংক্রমণ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠন-পাঠন বন্ধ রাখা হচ্ছে। সোমবার থেকে নতুন নির্দেশিকা কার্যকর হচ্ছে অফিসগুলির ক্ষেত্রেও। তবে স্কুল-কলেজের ক্ষেত্রে পড়ুয়ারা না এলেও শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের ৫০ শতাংশ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আসবেন। দপ্তরের কাজকর্মও যথারীতি চলবে। তবে পরীক্ষার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’ মুখ্যসচিবের আশ্বাস, ‘এই বাড়বাড়ন্তেও অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এই দফায় অধিকাংশ রোগীরই উপসর্গ নেই। থাকলেও খুবই মৃদু। তা সত্ত্বেও আমরা সেফ হোম চালু করছি। হাসপাতালগুলি প্রস্তুত রাখা হচ্ছে।’ সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে সরাসরি প্রভাব পড়বে অবশ্যই নিত্যযাত্রায়। তবে রাজ্য সরকার জানিয়েছে, লোকাল ৭টা পর্যন্ত চললেও দূরপাল্লার ট্রেন সব চলবে। রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে বাসও। যদিও বাড়তি কিছু কড়াকড়ি বিমানবন্দর এবং উড়ানের ক্ষেত্রে জারি হয়েছে। আজ, সোমবার থেকেই ব্রিটেন-কলকাতা সরাসরি বিমান বন্ধ করা হচ্ছে। সপ্তাহে দু’দিন—সোম ও শুক্রবার দিল্লি ও মুম্বইয়ের মধ্যে বিমান চলাচল করবে। বিয়ে এবং অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিতের সংখ্যা বেঁধে দেওয়া হলেও মিটিং-কনফারেন্সের ক্ষেত্রে সর্বাধিক ২০০ জন বা প্রেক্ষাগৃহের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়েছে। চালু থাকছে হোম ডেলিভারি। বিনোদন পার্ক, চিড়িয়াখানা ও পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য।মুখ্যসচিব বলেন, ‘শপিং মল, মার্কেট কমপ্লেক্স, রেস্তরাঁ, বার বা সিনেমা হলে একই সময় একসঙ্গে ৫০ শতাংশের বেশি লোক যাতে না থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে কর্তৃপক্ষকে।’ পাশাপাশি, জনবহুল এলাকায় মাস্ক পরায় জোর দিয়েছে নবান্ন। মুখ্যসচিব বলেন, ‘দোকান, বাজার, মার্কেট কমপ্লেক্স শপিং মল সহ পাবলিক প্লেসে মাস্ক না পরলে কড়া ব্যবস্থা নেবে সরকার। প্রয়োজন মতো কলকাতায় ১১টি মাইক্রো কন্টেইনমেন্ট করা হচ্ছে। হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনাতেও হবে।’
আপাতত কার্যকর ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত
স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় সহ যাবতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। শুধুমাত্র প্রশাসনিক কাজকর্ম চলবে ৫০ শতাংশ কর্মচারী নিয়ে।
ভোর ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত লোকাল ট্রেন চলবে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে। দূরপাল্লার ট্রেন চলবে যথারীতি। ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলবে মেট্রো। তবে বন্ধ টোকেন।
সব সরকারি ও বেসরকারি অফিসে ৫০ শতাংশ হাজিরা। ওয়ার্ক ফ্রম হোমে জোর দেওয়ার পরামর্শ।
রাত ১০টা থেকে সকাল ৫টা পর্যন্ত সব ধরনের গণপরিবহণ বন্ধ। নৈশকালীন কঠোর বিধি-নিষেধ কার্যকর।
ছাড় থাকবে সংবাদপত্র সহ অন্যান্য জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে।
বিয়ে, অন্যান্য সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারবেন সর্বাধিক ৫০ জন। শেষকৃত্য ও শ্রাদ্ধবাড়ির ক্ষেত্রে এই সংখ্যা সর্বাধিক ২০।
রেস্তরাঁ, পানশালা, শপিং মল, সিনেমা হল, থিয়েটার ৫০ শতাংশ গ্রাহক নিয়ে খোলা রাখা যাবে রাত ১০টা পর্যন্ত।
সর্বাধিক ২০০ জন বা ৫০ শতাংশ নিয়ে করা যাবে সভা, মিটিং, কনফারেন্স।
সুইমিং পুল, স্পা, জিম, সেলুন, বিউটি পার্লার বন্ধ।
বন্ধ থাকবে চিড়িয়াখানা, পর্যটন কেন্দ্র ও বিনোদন পার্ক
No comments