হলদিয়ায় চুরির ঘটনায় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে হলদিয়ার রানীচক সংলগ্ন গান্ধীনগর শিল্প আবাসন এলাকায় মাঝরাতে পর পর চুরির ঘটনায় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ওই আবাসন এলাকায় হলদিয়া এনার্জি ও টাটা পাওয়ার দুটি বেসরকারি শিল্প …
হলদিয়ায় চুরির ঘটনায় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে
হলদিয়ার রানীচক সংলগ্ন গান্ধীনগর শিল্প আবাসন এলাকায় মাঝরাতে পর পর চুরির ঘটনায় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ওই আবাসন এলাকায় হলদিয়া এনার্জি ও টাটা পাওয়ার দুটি বেসরকারি শিল্প সংস্থার ১৩০টি পরিবার থাকেন। হলদিয়া এনার্জির ভাইস প্রেসিডেন্ট তথা প্ল্যান্ট হেড সহ দুটি সংস্থার পদস্থ আধিকারিকরা বসবাস করায় কড়া নিরাপত্তায় ঘেরা থাকে আবাসন। সমগ্র আবাসন এলাকাটি উঁচু প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। নিরাপত্তার ঘেরাটোপ সত্ত্বেও এক সপ্তাহের মধ্যে পর পর দুষ্কৃতী হানা দেওয়ার ঘটনায় উদ্বিগ্ন শিল্প আধিকারিক থেকে বাসিন্দা সকলেই। দু’দিনে জেনারেটরের চারটি দামি ব্যাটারি সহ দেড় লক্ষাধিক টাকার যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জাম চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ শিল্প সংস্থার। এনিয়ে থানায় লিখিতভাবে জানানোর পরও পুলিসি তদন্তে ঢিলেমির অভিযোগ উঠেছে। শুধু আবাসন এলাকা নয়, হলদিয়ার একের পর এক কারখানা এলাকা থেকে নিয়মিত যন্ত্রাংশ ও দামি সরঞ্জাম চুরির ঘটনায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
হলদিয়া এনার্জি সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার মাঝরাতে আবাসনে হানা দিয়ে ১২৫কিলো ভোল্ট অ্যাম্পিয়ার বা কেভিএ জেনারেটরের একটি ব্যাটারি ও ফায়ার হোস পাইপ ও পেনডান্ট চুরি করে পালায় দুষ্কৃতীরা। রাত ১টা নাগাদ এই চুরির ঘটনা ঘটে। সোমবার বিকেলে আবাসনের সংস্থা কোয়েস্ট প্রোপার্টিজ ইন্ডিয়ার পক্ষে প্রসেনজিৎ সাহা হলদিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। গত ১ডিসেম্বর মাঝরাতেও দুষ্কৃতীরা ওই আবাসনে হানা দিয়ে ২০০কেভিএ জেনারেটরের ২টি এবং ১২৫কেভিএ জেনারেটরের ১টি ব্যাটারি চুরি করে পালায়। একই সঙ্গে তারা ফায়ার সিস্টেমের সরঞ্জাম ও হাইটেনশন লাইনের তার কেটে নিয়ে পালিয়েছে। হলদিয়া এনার্জি সংস্থা জানিয়েছে, দু’দিনে দেড় লক্ষাধিক টাকার জিনিসপত্র চুরি হয়েছে। জেনারেটরের ব্যাটারি চুরি হওয়ায় সেগুলি অকেজো হয়ে গিয়েছে। তবে ফায়ারের বিভিন্ন সরঞ্জাম চুরি করতে গিয়ে পিতলের যন্ত্রাংশ না পেয়ে সেগুলি ফেলে দিয়ে গিয়েছে। এরফলে ফায়ার সিস্টেমও অকেজো হয়েছে।
হলদিয়া এনার্জির আধিকারিক বিদুষরঞ্জন সেন বলেন, আবাসনে পর পর দুষ্কৃতী হামলার ঘটনায় মহিলা ও শিশুরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। প্ল্যান্টের অনেক আধিকারিক রাতে ডিউটি সেরে ফেরেন। ফাঁকা এলাকা হওয়ায় তাঁরা সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন। নিরাপত্তার ঘেরাটোপ সত্ত্বেও কীভাবে চুরি হচ্ছে তা নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে। সন্ধের পর বাজারহাটের প্রয়োজন থাকলেও কেউ বেরতে চাইছেন না। ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে পুলিস স্টেশন থাকার পরও আবাসন এলাকা সহ সিটি সেন্টার, গান্ধীনগর এলাকায় চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনা বাড়ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। কিছুদিন আগেই সিটিসেন্টার সংলগ্ন মেঘনাদ সাহা পলিটেকনিক কলেজ থেকে ৪০টির বেশি সিলিং ফ্যান দফায় দফায় চুরি যায় ক্যাম্পাসের ভিতর থেকে। ভবানীপুর থানায় অভিযোগ পরও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ।
এদিকে, কয়েকদিন আগেই হলদিয়ার টাটা স্টিলের হুগলি মেট কোক কারখানার প্রাচীরের উপরের তার কেটে প্রায় চার লক্ষ টাকার স্ক্যাফোল্ডিং মেটিরিয়াল চুরি করে পালায় দুষ্কৃতীরা। ৩লক্ষ ৮৬হাজার ৫১৮টাকা মূল্যের ওই সরঞ্জাম চুরির ঠিক পনেরো দিন আগেই ২লক্ষ ৭৩হাজার টাকা সরঞ্জাম চুরি করে দুষ্কৃতীরা। প্রতিটি কারখানা থেকেই এধরনের সরঞ্জাম নিয়মিতভাবে চুরির অভিযোগ হচ্ছে থানায়। হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিস সুপার পার্থ ঘোষ বলেন, বিভিন্ন কারখানায় চুরি ঘটনায় পুলিস উদ্বিগ্ন। তবে আবাসন এলাকায় কড়া সিকিউরিটি থাকার পরও কীভাবে চুরি হচ্ছে সেবিষয়টি খতিয়ে দেখতে থানাকে নির্দেশ দিচ্ছি।
No comments