পরাধীন ভারতবর্ষের ইতিহাসের এক সোনালী অধ্যায়- সনৎকুমার বটব্যাল
বিপ্লবী শহীদ দীনেশ চন্দ্র গুপ্ত পরাধীন ভারতবর্ষে চলছে একদিকে মহাত্মা গান্ধীর অহিংস আন্দোলন/অন্যদিকে চলছে সহিংস আন্দোলন/ ১৯৩০ সালের ৮ ই ডিসেম্বর ভারতের স্বাধীনতার…
পরাধীন ভারতবর্ষের ইতিহাসের এক সোনালী অধ্যায়- সনৎকুমার বটব্যাল
বিপ্লবী শহীদ দীনেশ চন্দ্র গুপ্ত
পরাধীন ভারতবর্ষে চলছে একদিকে মহাত্মা গান্ধীর অহিংস আন্দোলন/
অন্যদিকে চলছে সহিংস আন্দোলন/
১৯৩০ সালের ৮ ই ডিসেম্বর ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসে এক গৌরব উজ্জ্বল দিন / ঐদিন বিপ্লবী বিনয় বসুর নেতৃত্বে দীনেশ চন্দ্র গুপ্ত ও বাদল গুপ্ত কলকাতার রাইটার্স বিল্ডিং( মহাকরণ ভবন) এ অভিযান চালায়/ অত্যাচারী ইন্সপেক্টর জেনারেল সিম্পসনকে হত্যা করেন / রাইটার্স বিল্ডিং-এর অলিন্দে পুলিশের সঙ্গে তাদের খণ্ডযুদ্ধ হয়/বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ ব্রিটিশ কর্মচারী গুরুতরভাবে আহত হন /
অত্যাচারী ইন্সপেক্টর জেনারেল কর্নেল সিম্পসনকে গুলি করে হত্যা করে তিন অকুতোভয় যুবক /
সেদিন মহাকরনের অলিন্দে তারা যে প্রতাপ দেখিয়েছিলো আজ তা আমাদের কাছে সোনালী অতীত/ ইতিহাসের পাতা ওল্টালে, গুলির শব্দ আজও আমাদের কানে আসে/ আজও আমরা শুনতে পাই তরুন কণ্ঠের ' বন্দেমাতরম 'ধ্বনি /
আসমুদ্রহিমাচল ভারতবর্ষের বিপ্লবীরাও ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রামে
অশ্বমেধের অপ্রতিরোধ্য ঘোড়া ছুটিয়েছিল/
ভারতের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসে অলিন্দ যুদ্ধ নামে অভিহিত করা হয়েছিলো সেদিনের যুদ্ধ টিকে / প্রথমে অত্যাচারী সিম্পসনকে কে গুলি করে হত্যা /তার পর ইংরেজ সিপাহীদের সাথে সংগ্রাম করেছিলেন এই তরুণ তিন বিপ্লবী / এই তিন বিপ্লবী কে আমরা বিনয় - বাদল - দীনেশ নামেই চিনি / এই তিন মহান বিপ্লবীদের সম্মান জানাতে মহাকরণের সামনের যায়গাটির নাম দেওয়া হয়েছে(কংগ্রেস সরকারের সময়) বি,বি,ডি,বাগ বা বিনয়,বাদল,দীনেশ
স্কোয়ার/
তিনজনে অসম সাহসিকতার সাথে দীর্ঘ সময় লড়াই করতে থাকে তার ইতিহাস অন্যদিন আলোচিত হবে / গুলি যখন শেষ হলো দলনেতা বিনয়ের নির্দেশে তারা ঠিক করলো আত্মসমর্পন করবে না পকেটে রাখা বিষাক্ত বিশ পটাশিয়াম সাওনাইড খেয়ে আত্মহত্যা করবে / যেই ভাবনা সেই কাজ তারপর তা অবলীলায় মুখে পুরে নিলো, বিনয় আর দীনেশ নিজের উপর গুলি চালিয়ে নেয়,মাথায় গুলি লাগে সংজ্ঞা হারায় বিনয় , বাদল প্রাণ হারায় আর দীনেশও অচৈতন্য অবস্থায় ছিলো তিনজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় / বাদল তো প্রথমেই প্রাণ হারান অন্য দুজনকে সুস্থ করবার চেষ্টা করলেও পাঁচদিন পরে বিনয়ের মৃত্যু হয় আর দীনেশ সুস্থ্য হয়ে উঠলে বিচারে তাঁর ফাঁসি হয় /
এই ত্রয়ীবিপ্লবীর মধ্যে দীনেশ চন্দ্র গুপ্তের সম্পর্কে আজ একটু আলোচনা কোরবো/
দীনেশচন্দ্র গুপ্ত ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে একজন স্বনামধন্য বাঙালি বীর বিপ্লবী / তিনি দীনেশ গুপ্ত নামেই সমধিক পরিচিত / তিনি মূলত ঢাকা ও মেদিনীপুরে বিপ্লবী সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন /মেদিনীপুরে তাঁর সংগঠন পরপর তিন জন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে হত্যা করেছিল /
ভূমিস্পর্শঃ-৬ ই ডিসেম্বর, ১৯১১ সাল/ যশোলঙ, ঢাকা,বাংলাদেশ/
আত্মবলিদানঃ-৭ ই জুলাই, ১৯৩১ সাল, আলিপুর সেন্ট্রাল জেল, কলকাতা, ভারত/
বাবাঃ-সতীশ চন্দ্র গুপ্ত
মাঃ- বিনোদিনী দেবী
বিপ্লবী দীনেশ গুপ্তের জন্ম হয় ১৯১১ সালের ৬ ডিসেম্বর তদানীন্তন ঢাকা জেলার অধুনা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মুন্সিগঞ্জ জেলার যশোলঙে / তার বাবার নাম সতীশচন্দ্র গুপ্ত ও মায়ের নাম বিনোদিনী দেবী / চার ভাই ও চার বোনের মধ্যে দীনেশ ছিলেন বাবা-মার তৃতীয় সন্তান / সতীশচন্দ্র ছিলেন ডাক বিভাগের কর্মচারী / চাকরির সূত্রে তিনি কিছুকাল গৌরীপুরে ছিলেন / গৌরীপুরের পাঠশালাতেই দীনেশের পঠন পাঠন শুরু হয় / পরে ভর্তি হন ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে/ ছোটবেলা থেকেই দীনেশ ছিলেন নির্ভীক, বেপরোয়া ও বাগ্মী /
ছোটো থেকেই তার মনে স্বদেশ চেতনা ও ব্রিটিশ বিরোধিতার আদর্শ সঞ্চারিত হয়েছিল / দীনেশ ছেলেবেলা থেকেই খুব খেতে ভালোবাসতো/বিভিন্ন খাবার খেতে খুব পছন্দ করতেন /সেই সময়কার দু-একটি গল্প শুনলে আমরা তার এই মনােভাবের পরিচয় পাব / তখনকার দিনে বিপ্লবীদের বাধ্যতামূলকভাবে একটা কাজ করতে হত /নিজেকে উপযুক্ত করে গড়ে তােলার জন্য সকালে এবং বিকালে মার্চ করতে হত /পাড়ি দিতে হত গ্রাম থেকে গ্রামান্তর /
দলনেতা জ্যোতিষ জোয়ারদারের নেতৃত্বে দীনেশ মার্চ করে এগিয়ে চলেছেন বিক্রমপুর গ্রামের পথ ধরে / একটানা হেঁটে সন্ধ্যা নাগাদ একটা বাজারে যাত্রা শেষ হল / এবার ফিরতে হবে, সকলের খিদে পেয়েছে / দল বেঁধে একটা মিষ্টির দোকানে হাজির হলেন সকলে / গ্রামের বাজারের দোকান , সবসময় মিষ্টি মজুত থাকে /দোকানে যত মিষ্টি ছিলো তারা খেয়ে সব শেষ করে দিলো / তারপর দীনেশ একটু বিশ্রাম নিতে নিতে তখনও ভাবছেন আর কিছু খেলে হয় / উকিঝুঁকি মেরে দেখলেন , দোকানের কোণে এক কড়াই চিনির সিরা( মিষ্টি ভেজানো হয় যে চিনির পাক করা রস) আছে, হাসি মুখে দোকানদারের দিকে তাকিয়ে বললেন- ওটাই দিন , চালান করে দিই/ দোকানদার অবাক , সর্বনাশ ওটা কয়েক দিনের বাসি , খেলে বমি হবে , ডাক্তার ডাকতে হবে কিন্তু কে শােনে কার কথা / দোকানদার বাধা দেবার আগে দীনেশ দুহাতে কড়াইটা তুলে নিলেন মুখের কাছে, এক চুমুকেই কড়াই ফাঁকা হয়ে গেল / দীনেশ কিন্তু এটা খেয়ে মােটেই অসুস্থ হয়ে পড়েননি /ভীষণ শারীরিক ক্ষমতা ছিল তার / তেমনই ছিল হজম করার ক্ষমতা / দীনেশের খাওয়ার শেষ ঘটনা ঘটেছিল আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের ভেতর / বিচারের রায় তখন বেরিয়ে গেছে / দীনেশ জেলের মধ্যে মৃত্যুর অপেক্ষায় দিন গুনছেন / নিজেও জানেন সেকথা / কিন্তু তাতে এতটুকু ভাবান্তর ঘটেনি তার /জীবন নিয়ে যেন এক মজার খেলায় মেতে আছেন/ মৃত্যুকে দীনেশ কেনো দিনই তোয়াক্কা করতো না পায়ের ভৃত্য ভাবত /
' জীবন মৃত্যু পায়ের ভৃত্য চিত্ত ভাবনাহীন 'গোছের আর কি/
সহকর্মী সুনীল সেনগুপ্তের দিন কাটছে এক নম্বর ওয়ার্ডে / দীনেশ ওয়ার্ডারের হাতে একটি চিঠি পাঠালেন সুনীলদাকে / ছােট্ট চিঠিতে লেখা আছে- একটু লুচি মাংস খাওয়াতে পারেন ? দু দিন বাদে ফাঁসির দিন নির্দিষ্ট হয়েছে /এমন শেষ আকুতি ! সুনীলবাবু ভাবছেন , কী করে এই আবদার রাখবেন তিনি / জেলের ভেতর লুচি - মাংস জোগাড় করা কি সম্ভব ? আসামী দের মধ্যে ছিল মতি নামের এক খুনি আসামী/ বিশ বছরের কারাদণ্ড ভােগ করছে সে /সে এগিয়ে এসে বলল , স্বদেশিবাবুকে আজ এত মনমরা দেখাচ্ছে কেন ? সুনীল সব কথা খুলে বললেন /সব কথা শুনে গুম হয়ে গেল অমন বেপরােয়া মানুষটা / তারপর বলল -- জেলের ক্যান্টিন থেকে সে লুচির ব্যবস্থা করতে পারবে /কিন্তু মাংস ? কোথায় পাওয়া যাবে ? ভেবে কুলকিনারা করতে পারছেন না সুনীল সেনগুপ্ত / পরবর্তী সময় তিনি অবশ্য মুখার্জী বাবুর চেষ্টাতে শেষ বারের মতো লুচি মাংস খেয়েছিলেন ফাঁসির আগের দিন রাতে /
১৯২৬ সালে ঢাকা বোর্ড থেকে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর তিনি মেদিনীপুরে কর্মরত তার বড়োদাদা যতীশচন্দ্র গুপ্তের কাছে বেড়াতে আসেন / এই সময় থেকেই মেদিনীপুর শহরে বিপ্লবী সংগঠন গড়ে তোলার সুপ্ত বাসনা তার মনে জাগে / কিন্তু দলের নির্দেশে সেবার তাকে ঢাকায় ফিরে আসতে হয়েছিল বলে তিনি মেদিনীপুরে বিশেষ কিছুই করে উঠতে পারেননি/
১৯২৮ সালে তিনি ঢাকা কলেজ থেকে আইএসসি পরীক্ষা দেন / কিন্তু এই পরীক্ষায় তিনি কৃতকার্য হতে পারেননি /এরপর তিনি মেদিনীপুরে গিয়ে পড়াশোনা করার সিদ্ধান্ত নেন / দলের তরফ থেকে দীনেশকে মেদিনীপুরে বিভির শাখা স্থাপনের দায়িত্ব দেওয়া হয় / মেদিনীপুরে এসে দল গঠন ও সদস্য সংগ্রহের পাশাপাশি পড়াশোনাও চালিয়ে যান তিনি /
ঢাকা কলেজে পড়ার সময় ১৯২৮ সালে দীনেশ 'ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস'-এর কলকাতা অধিবেশন প্রাক্কালে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস সংগঠিত 'বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সে' যোগদান করেন এবং দীনেশ বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্স (বিভি) নামে ঐ গুপ্ত বিপ্লবী সংগঠনের সদস্য হন / শীঘ্রই বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স একটি সক্রিয় বিপ্লবী সংগঠনে পরিবর্তিত হয় এবং কুখ্যাত ব্রিটিশ পুলিশ অফিসারদেরকে হত্যা বা নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনা করে/
স্থানীয় বিপ্লবীদের আগ্নেয়াস্ত্র চালনা শেখানোর জন্য দীনেশ গুপ্ত কিছু সময় মেদিনীপুরেও ছিলেন / তার প্রশিক্ষিত বিপ্লবীরা ডগলাস,বার্জ এবং পেডি এই তিনজন জেলা ম্যাজিস্ট্রটকে পরপর হত্যা করেছিলন /
এর পর ইন্সপেক্টর জেনারেল কর্নেল এনএস সিম্পসনকে টার্গেট করেছিল যে কিনা জেলখানার বন্দীদের উপর পাশবিক নির্যাতনের জন্য কুখ্যাত ছিল / তিন বিপ্লবী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে তারা শুধু সিম্পসনকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হবেন না, বরং কলকাতার ডালহৌসি স্কোয়ারে অবস্থিত ব্রিটিশ শাসকদের সচিবালয় রাইটার্স ভবনে আক্রমণ করে ব্রিটিশ অফিস পাড়ায় ত্রাস সৃষ্টি করবেন / ১৯৩০ সালের ৮ই ডিসেম্বর দীনেশ তার দুই সঙ্গী বিনয় বসু এবং বাদল গুপ্তসহ ইউরোপীয় পোশাকে রাইটার্স বিল্ডিংয়ে প্রবেশ করেন এবং সিম্পসনকে গুলি করে হত্যা করেন / ব্রিটিশ পুলিশও তদের ওপর গুলি চালানো শুরু করেন / যার ফলশ্রুতিতে এই তিন তরুণ বিপ্লবীর সাথে পুলিশের একটি সংক্ষিপ্ত বন্দুকযুদ্ধ হয় / টোয়াইনাম , প্রেন্টিস এবং নেলসন -এর মত অন্য কিছু অফিসারও গোলাগুলিতে আহত হয়/ পুলিশ দ্রুতই তাদেরকে পরাভূত করে ফেলে / কিন্তু এই তিনজনের গ্রেফতার হওয়ার কোনো ইচ্ছে ছিল না / বাদল গুপ্ত পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে নিয়েছিলেন, অন্যদিকে বিনয় এবং দীনেশ নিজেদের রিভলবার দিয়ে নিজেদেরকেই গুলি করেছিলেন / বিনয়কে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় সেখানেই তিনি ১৯৩০সালের ডিসেম্বরের ১৩ তারিখ মৃত্যুবরণ করেন/
দীনেশ কোনোরকমে এ চরম আঘাত থেকে বেঁচে ওঠেন / আদালতে তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছিল এবং বিচারের রায় ছিল সরকার বিরোধী কর্মকাণ্ড এবং খুনের জন্য ফাঁসির সাজা ঘোষণা করা হয়েছিলো /
মৃত্যুর পূর্বে জেলে বসে তিনি বেশ কয়েকটি চিঠি লিখেছিলেন যেই চিঠিগুলি ভারতের বিপ্লবী ইতিহাসের শুধু গুরুত্বপূর্ণ দলিল এবং সাহিত্যিক বিচারেও অত্যন্ত মূল্যবান বিষয় বস্তু ছিলো শুধু তাই নয় চিঠি গুলির মাধ্যে দীনেশের যে প্রখর দর্শন চিন্তা ভাবনা কাজ করত তারও পরিচয় মেলে /
১৯৩১ সালের ৬ই জুলাইয়ের ভোর ৭ ই জুলাই আলিপুর জেলে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছিলো / দীনেশের বয়স তখন ছিল মাত্র ১৯ বছর /
সারা ভারতে বিনয়, বাদল এবং দীনেশের মৃত্যু দিনটিকে শহীদ দিবস হিসেবে সম্মান করা হয়/ ভারত স্বাধীন হওয়ার পরে বিনয়-বাদল-দীনেশের নামানুসারে কলকাতার ডালহৌসি স্কয়ারের নাম পালটে রাখা হয় বি-বা-দী বাগ/
আজ মহান বীর বিপ্লবীর শুভ জন্মদিনে আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা ও আভূমি প্রণাম জানাই/
এই তিন মহান বিপ্লবী র কথা ভারতবর্ষের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে/জয়হিন্দ বন্দেমাতরম
ঋণ স্বীকারঃ-
@ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস/
@ অধ্যাপক ডঃ অমলেশ ত্রিপাঠী/
@ অধ্যাপক ডঃ প্রভাতাংশু মাইতি/
@ অধ্যাপক ডঃ কিরন চন্দ্র চৌধুরী/
@ কবি এস চক্রবর্তী/
No comments