রবীন্দ্র সদনে নিয়ে আসা হল সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের দেহ। পরিবার, আত্মীয়, অনুগামী, সহকর্মীদের চোখের জলে শেষ বিদায় জানানোর পালা। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের তিন বোন। আগামী কালই ভাইফোঁটা, তার আগেই যে ভাইয়ের শেষযাত্রায় পা ম…
রবীন্দ্র সদনে নিয়ে আসা হল সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের দেহ। পরিবার, আত্মীয়, অনুগামী, সহকর্মীদের চোখের জলে শেষ বিদায় জানানোর পালা। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের তিন বোন। আগামী কালই ভাইফোঁটা, তার আগেই যে ভাইয়ের শেষযাত্রায় পা মেলাবেন, দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি তাঁরা।
অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, ভাইফোঁটা দেওয়ার কথা ছিল এবার, হল না। পুজো থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়লেন ভাই। তবে এই অসুখ যে না-ফেরার অসুখ, তা ভাবতে পারেননি কেউ। পোস্তর বড়া, মাছের টক, পাঁঠার মাংস খেতে ভালবাসতেন সুব্রত। তেমনটাই মেনু সাজিয়েছিলেন বোনেরা। কিন্তু… শুধু তাই নয়, ভোজনরসিক ভাইয়ের জন্য এক কৌটো নাড়ুও বানিয়ে রেখেছিলেন বোনেরা। চিকিত্সায় সাড়া দিয়ে সুস্থ হচ্ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। সব ঠিক থাকলে আজ, শুক্রবারই ছেড়ে দেওয়া হতো তাঁকে এসএসকেএম থেকে। নাড়ু খেতেন বোনেদের হাতে। কিন্তু সব ঠিক রইল না। কাল ৪ নভেম্বর,২০২১ সন্ধেয় আচমকা 'স্টেন্ট থ্রম্বোসিস' প্রাণ কেড়ে নিল সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের। ৭৫ বছর বয়সে ফুরিয়ে গেল জীবন। রয়ে গেল বোনেদের বানানো, কৌটোভর্তি প্রিয় নাড়ু।
আদতেই খাদ্যরসিক মানুষ ছিলেন সুব্রত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নানা জায়গায় একাধিক বার সতর্ক করতে শোনা গেছে সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। 'হার্টের অবস্থা ভাল নয়' বলে মনে করিয়ে দিয়েছেন কপট ধমক-সহযোগে। এমনকি, গতকাল, বৃহস্পতিবার বিকেলেও খেতে চেয়েছিলেন প্রিয় খাবার। চপ-মুড়ি, চাউমিন- এই সব। নিজের মুখেই খাবার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন। তাঁকে আশ্বাস দেওয়া হয়, সুস্থ হওয়ার পরেই খাবেন তিনি এইসব প্রিয় খাবার। কিন্তু তা আর হল না।
সুব্রতবাবু হয়তো নিজেও জানতেন না, আর কয়েক ঘণ্টা পরেই তিনি চিরঘুমে চলে যাবেন। একথা জানিয়েছেন সুব্রতবাবুর আইনজীবী মণিশঙ্কর মুখোপাধ্যায়। তিনি জানান, বিকেলে কথা বলার কিছুক্ষণ পরেই সুব্রতবাবুর দাঁতে দাঁত লেগে যায়। কিছু সময় পরে বাথরুমে যান। বাথরুম থেকে বেরোনোর পরেই হার্ট অ্যাটাক হয় তাঁর। যার পোশাকি নাম স্টেন্ট থ্রম্বোসিস। রাত নটার পরে সব শেষ। ইচ্ছে মতো পছন্দের খাবারও তাঁর খাওয়া আর হল না। গত ২৪ অক্টোবর শারীরিক পরীক্ষার জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে গিয়েছিলেন সুব্রত। পরীক্ষা চলার সময়েই শ্বাসকষ্টের সমস্যা ধরা পড়ে। তখন আর কোনও ঝুঁকি না নিয়ে তাঁকে উডবার্নের আইসিসিউ-তে ভর্তি করানো হয়। তার পর থেকে সেখানেই তাঁর চিকিত্সা চলছিল। সুব্রতবাবুর সিওপিডির সমস্যা অনেক দিনের। পুজোর মধ্যে সেটাই আরও কিছুটা গুরুতর হয়ে ওঠে। তবে ধীরে ধীরে সুস্থও হয়ে উঠছিলেন সুব্রত।
No comments