বন্দরের জমির ব্যবহার নিয়ে নতুন ‘ল্যান্ড পলিসি’ তৈরি করছে জাহাজ মন্ত্রক।
এরফলে আগামীদিনে উপকৃত হবে হলদিয়া বন্দর। রবিবার হলদিয়া বন্দর পরিদর্শনে এসে সাংবাদিক বৈঠকে একথা জানালেন কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। তিনি বলেন, …
বন্দরের জমির ব্যবহার নিয়ে নতুন ‘ল্যান্ড পলিসি’ তৈরি করছে জাহাজ মন্ত্রক।
এরফলে আগামীদিনে উপকৃত হবে হলদিয়া বন্দর। রবিবার হলদিয়া বন্দর পরিদর্শনে এসে সাংবাদিক বৈঠকে একথা জানালেন কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন মেজর পোর্টে প্রচুর অব্যবহৃত জমি পড়ে রয়েছে। বহু মূল্যবান সেই জমিকে কীভাবে কাজে লাগানো যায় সেবিষয়ে নয়া জমি নীতি তৈরি হয়েছে। আপাতত সেটি ক্যাবিনেটের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে হলদিয়ায় বন্দরের বেদখল জমি উদ্ধার করে কাজে লাগানোর আশ্বাস দেন মন্ত্রী।
হলদিয়ার বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত এইচএফসি সারকারখানার আবাসন এলাকায় পড়ে থাকা জমি ফেরতের বিষয় নিয়েও জাহাজ মন্ত্রকের সঙ্গে রসায়ন মন্ত্রকের কথাবার্তা চলছে বলে জানান তিনি। তবে জাহাজমন্ত্রকের এই ল্যান্ড পলিসিকে সরকারি সম্পদ রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় কাজে লাগানো ছক বলে এদিন কটাক্ষ করেন বিরোধীরা।
জাহাজ প্রতিমন্ত্রী এদিন দুপুর দেড়টা নাগাদ হলদিয়ায় বন্দরের পোর্ট হাউসে আসেন। সেখান থেকে তিনি বন্দরের ডক এলাকা পরিদর্শনে যান। এরপর তিনি টাউনশিপে বন্দরের গেস্ট হাউস অডিটরিয়ামে চারটি প্রস্তাবিত প্রকল্পের সূচনা করেন। বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মোট ২৩কোটি টাকা ব্যয়ে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করবে বন্দর। এরমধ্যে রয়েছে বন্দরের ইয়ার্ড এলাকায় বৃষ্টির জমা জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা সহ রাস্তা সম্প্রসারণ। এরজন্য ৫কোটি ৭৪লক্ষ টাকা ব্যয় হবে। বন্দরের স্টোরেজ এলাকা ৪১হাজার স্কয়ার মিটার বাড়ানোর জন্য ৪কোটি ২৩লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্পের কাজ শুরু হচ্ছে। ৯কোটি ১৮লক্ষ টাকা খরচে পোর্ট গেস্ট হাউসের মানোন্নয়নের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। আগামী ৮মাসের মধ্যে একাজ শেষ হবে। এছাড়া ৩কোটি ৮০লক্ষ টাকা ব্যয়ে বন্দর হাসপাতালের সম্প্রসারণ করা হবে। এরমধ্যে রয়েছে নতুন আইসিইউ এবং ইমাজেন্সি ইউনিট।
তাজপুর বন্দর নিয়ে জাহাজ প্রতিমন্ত্রী এদিন বলেন, কেন্দ্র সরকার রাজ্যকে বার বার প্রস্তাব দিয়েছে, কেন্দ্রের অধীনে ওই এলাকায় গভীর সমুদ্র বন্দর গড়ে উঠুক। রাজ্য সরকার কেন্দ্রের কথাকে কোনও পাত্তা দিচ্ছে না।
এনিয়ে রাজ্য সরকারকে বহুবার বলেছি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কর্ণপাত করছেন না। তবে তাজপুরে বন্দর হলে হলদিয়ার কোনও সমস্যা হবে না। এদিন মন্ত্রী বন্দরগুলিকে আত্মনির্ভর হওয়ার উপর জোর দেন। কিন্তু কীভাবে হলদিয়া বন্দর নিজের পায়ে দাঁড়াবে তার দিকনির্দেশের কথা বলেননি। বরং বন্দরের নাব্যতা সমস্যা নিয়ে সবচেয়ে বড় সঙ্কটের বিষয়টিকে কোনও গুরুত্বই দিতে চাননি। এদিন বন্দরের একগুচ্ছ সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী কার্যত কোনও উত্তরই দিতে পারেননি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের কাছে জাহাজ প্রতিমন্ত্রীকে নাস্তানাবুদ হতে দেখে তা সামাল দেন কলকাতা-হলদিয়া বন্দরের চেয়ারম্যান বিনীত কুমার।
কীভাবে নাব্যতা সমস্যার মোকাবিলা করা হবে, ড্রেজিং সমস্যা, শালুকখালি বন্দরের কাজ কবে শুরু হবে, বন্দরের জমি সমস্যা বা অভ্যন্তরীণ জলপথ জেটি তৈরি হওয়ার পর দীর্ঘদিন পড়ে রয়েছে কেন, এসব বিষয়ে কার্যত কোনও উত্তরই এদিন দিতে পারেননি জাহাজ প্রতিমন্ত্রী। এনিয়ে বন্দরের সিটু নেতা কটাক্ষ করে বলেন, বাংলা থেকে হওয়া জাহাজমন্ত্রীর কাছে বন্দর বাঁচানো নিয়ে আশাব্যঞ্জক কথা আশা করেছিলেন কর্মীরা। উল্টে তিনি সব আশায় জল ঢেলে দিয়েছেন। বন্দর নিয়ে তিনি কোনও হোমওয়ার্কই করেননি। এদিন বন্দরের অনুষ্ঠানের পর মন্ত্রী বন্দর কর্তাদের সঙ্গে সন্ধে পর্যন্ত জওহর টাওয়ারে বৈঠক করেন।
No comments