Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

গ্রাম থেকে শিল্প শহর হলদিয়াতে মেতেছে শারদ উৎসবে, আট থেকে আশি সকলেই

শিল্পশহরের পুজোর মতো গ্রামীণ হলদিয়াও মাতোয়ারা হল শারদ উৎসবে। করোনা, সাইক্লোন, জলোচ্ছ্বাসে বিধ্বস্ত শহর ও গ্রামীণ হলদিয়া এবার সমস্ত মনখারাপ দূরে সরিয়ে দুর্গাপুজোর আয়োজন করেছে।
গ্রামীণ হলদিয়া, সুতাহাটা ও মহিষাদলে বাড়ির পুর…





 শিল্পশহরের পুজোর মতো গ্রামীণ হলদিয়াও মাতোয়ারা হল শারদ উৎসবে। করোনা, সাইক্লোন, জলোচ্ছ্বাসে বিধ্বস্ত শহর ও গ্রামীণ হলদিয়া এবার সমস্ত মনখারাপ দূরে সরিয়ে দুর্গাপুজোর আয়োজন করেছে।


গ্রামীণ হলদিয়া, সুতাহাটা ও মহিষাদলে বাড়ির পুরনো পুজোগুলিতেও এবার করোনার ভয় সরিয়ে প্রাণের উচ্ছ্বাস লেগেছে। করোনার ভয় কাটিয়ে সুতাহাটার জামালচক গ্রামে দেব পরিবারের ১৮৪বছরের পুরনো পুজো এবার বেশ জাঁকজমক করে হচ্ছে।

এদের পুজোর রীতি অনুযায়ী সপ্তমী থেকে নবমী তিনদিন ধরে হোমের আগুন জ্বলে। পাঁচ মণ আমকাঠ পুড়িয়ে সেই হোমাগ্নি প্রজ্জ্বলিত রাখা হয়। হলদিয়া ব্লকের মিশ্রবাড়ির পুজো বা মহিষাদলের গড়কমলপুরে গুড়িয়া এবং অমৃতবেড়িয়া ও ইটামগরায় দুই মাইতি বাড়ির পুজো ঘিরেও রয়েছে উৎসাহ। 

তবে এবার হলদিয়া ব্লকে মৎস্যচাষি স্বনির্ভর গোষ্ঠী কাত্যায়নী গোষ্ঠীর মহিলাদের পুজো রীতিমতো সাড়া ফেলেছে চাউলখোলা গ্রামে। হলদিয়ার গ্রামীণ এলাকায় এই প্রথম মহিলারা পুজোর উদ্যোগ নিয়েছেন। তাঁদের পুজোর থিম হল ‘মাছেভাতে বাঙালি’। করোনাকালে মাছ খাওয়ার উপকারিতা ও গ্রামের পুকুরে মাছ চাষ করে কীভাবে স্বনির্ভর হওয়া যায় সেই বিষয়ে পুজো মণ্ডপে সচেতন করছেন তাঁরা। মৎস্য দপ্তরের উদ্যোগে এই থিম ভাবনা নিয়েছেন গোষ্ঠীর মহিলারা। মৎস্য আধিকারিক সুমনকুমার সাহু বলেন, গ্রামীণ এলাকায় আনন্দের পাশাপাশি পুজোর মাধ্যমে এধরনের সচেতনতার উদ্যোগ প্রথম।

 বিজ্ঞাপন



এই গোষ্ঠীর মহিলাদের আতমা প্রকল্পে ১০০কেজি মাছের চারা দেওয়া হয়েছে পুজো মণ্ডপে। সোমবার ষষ্ঠীর সকালে পুজোর ঢাকের তালে আড় বাঁশি বাজিয়ে হলদি নদীর ঘাটে বিভিন্ন লিটল ম্যাগাজিনের শারদীয় সংখ্যার প্রকাশ অনুষ্ঠান হয়।


লিটল ম্যাগাজিনের সম্পাদক শিশিরবিন্দু দত্ত বলেন, নানা ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে দূরে সরিয়ে রাখতে পারে সাংস্কৃতিক চর্চা। সেজন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এদিন হলদিয়াজুড়ে অনেকগুলি পত্রপত্রিকার প্রকাশের অনুষ্ঠান হয়। এদিন বিকেলে হলদিয়ার সিটি সেন্টার দুর্গোৎসব কমিটির পুজো উদ্বোধন করে সম্প্রীতির বার্তা দেন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। উপস্থিত ছিলেন হলদিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান সুধাংশুশেখর মণ্ডল।

আইএনটিটিইউসি জেলা সভাপতি তাপস কুমার মাইতি ছিলেন তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি এবং হলদিয়া পৌরসভার কাউন্সিলর দেব প্রসাদ মন্ডল, ছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর হলদিয়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল আজিজুল রহমান, পুজো কমিটির উদ্যোগে এক হাজার মানুষকে কাপড় তুলে দেওয়ার প্রতীকী সূচনা করেন মন্ত্রী। শিল্পাঞ্চলে এবার পুজোর আগে কারখানাগুলিতে বোনাস বাড়ায় খুশি শ্রমিকরা। তবে কয়েকটি ভোজ্যতেল কারখানা সময়মতো বোনাস না দেওয়ায় শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। আইএনটিটিইউসির তমলুক জেলার সভাপতি তাপস মাইতি বলেন, পুজোর আগে আইএনটিটিইউসির দাবিমতো কয়েকটি কারখানায় দীর্ঘদিন পর বোনাস বেড়েছে। হলদিয়ার বিএমএস হলদিয়া কলকাতা বন্দর পোর্ট সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ বিজলী বলেন,

বিজ্ঞাপন
 


শিল্পাঞ্চলে করোনা ও নানাবিধ কারণে কাজ কমে গিয়েছে। সামান্য বোনাসে তেমন কিছু হবে না। ফলে এবার হলদিয়াজুড়ে কোনও দোকানপাটেই কেনাকাটার ভিড় নেই পুজোয়। শ্রমিক কর্মচারীরা জানান, করোনার কারণে কারখানায় কাজের পরিমাণ কমে গিয়েছে। ফলে তাঁরা মজুরি কম পাচ্ছেন। এদিকে, সব্জি সহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের বাজারদর আগুন হওয়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। পুজোর জামাকাপড় কেনা তাঁদের কাছে বাহুল্য। হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের আবাসনের পুজোগুলি এবার করোনার কারণে জৌলুস হারিয়েছে। 

বিজ্ঞাপন



আইওসি বা বন্দর আবাসনের পুজোয় মণ্ডপ থেকে প্রতিমা সব ছোট আকারের। কয়েকটি শিল্প সংস্থার পুজো আবার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তবে দুর্গাচক এলাকার হাতেগোনা কয়েকটি ক্লাবের থিমের পুজো ছাড়া তেমন বড় পুজো হচ্ছে না হলদিয়ায়।


হলদিয়ার ক্ষুদিরামনগর উদ্বাস্তু কলোনিতে দুর্গোৎসব কমিটির উদ্যোগে বড় আকারে পুজো হচ্ছে। যার উদ্বোধন করলেন হলদিয়ার প্রাক্তন সাংসদ ডক্টর লক্ষ্মণ শেঠ, সাথে ছিলেন পুজো মণ্ডপের ভূমি দাতা শেখ মজাফফর ।



সুতাহাটার চৈতন্যপুরে কয়েকটি থিমের মণ্ডপে বৃষ্টি থামতেই পঞ্চমীর সন্ধে থেকে দর্শনার্থীদের ভিড় জমে।৩২ তম বর্ষে চৈতন্যপুর যুগের যাত্রী এবং নিউ স্টার ক্লাবের দশম বর্ষে পুজো মানুষের নজর কেড়েছে।

নিউ স্টার ক্লাবের পুজোর উদ্বোধন করেন রাজ্যের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ দপ্তরের মন্ত্রী অখিল গিরি উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক কুমার চক্রবর্তী প্রমুখ। নবোদয় ও সংহতি তাদের পুজোর মণ্ডপ আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।

চৈতন্যপুর বাজার কমিটির অন্যতম পুজো সাবেকিয়ানা স্থায়ী মন্দিরে পূজার্চনা হলেও দর্শক এবং ভক্তদের ভিড় ছিল উপচে পড়া। বাজার কমিটির সম্পাদক প্রদীপ বক্সী বলেন  বিভিড বিধি মেনে চৈতন্যপুর শিল্পশহর হলদিয়ার একটি প্রাণ কেন্দ্র । দূর্গা পূজা মানেই চৈতন্যপুর ও মণ্ডপসজ্জা জেলার সকলের নজর কেড়ে নেয়।

তাই  চৈতন্যপুরে উপচে পড়ে  স্থানীয় প্রশাসন  সদা সতর্ক থাকেন। আমাদের এই পুজো সাবেকিয়ানা মধ্য দিয়ে মানুষের মন জয় নেয়। ব্রজলাল চক বাজারের প্রাচীনতম পুজো চারটি বাজারের প্রায় পাঁচ খানা পূজা এবারে ওই এলাকার মানুষের নজর কেড়েছে তারই মধ্যে ব্রজলালচক নিজ বাজার পুজো প্রাচীনতম  কমিটির সম্পাদক প্রসেনজিত ভূঁইয়া জানালেন কভিড বিধি মেনে তাদের এ বছরের পুজো চলছে । সংস্কৃত চক্র এবং ব্রজলালচক মুক্ত পথিক প্রত্যেক বছরের মতো এ বছরে তাদের মণ্ডপ শয্যা ছিল চোখে পড়ার মতো। বাড় বাসুদেবপুর পোস্ট অফিসের পুজো প্রাচীনতম এই গ্রামেই  থাকতেন  রাজ্যের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর প্রফুল্ল চন্দ্র ঘোষ ।ভবানীপুর মিলন স্কুলের সামনে পুজো এবং বাড় ঘাসিপুর সবার আসর  সবথেকে প্রাচীনতম পুজো। বাড় ঘাসিপুর ব্রতী সংঘ হলদিয়া পৌরসভার অডিটোরিয়ামে হলেও ওই  এলাকা মানুষের নজর কেড়েে নেয়।ক্লাবের সম্পাদক প্রণব সামন্ত জানালেন আট থেকে আশি সকলেই এই পুজো মণ্ডপে আসেন। কভিড বিধি মেনে হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং মাক্স

রাখা হয়েছেে পুজো মন্ডপের প্রবেশদ্বারে।

হলদিয়া পৌরসভা ১৬ নম্বর ওয়ার্ড গেঁওয়াডাব বাজার এবং সংলগ্ন শোলাট গ্রামের সাবেকিয়ানা মণ্ডপ শয্যা গ্রামবাসীদের নজর কেড়েছে।

হলদিয়া ব্রজনাথ চক মহিলা সমিতির পুজো এবারে অন্য মাত্রা পেয়েছে ,কঠিন পরিস্থিতি থাকা সত্ত্বেও হাতিবেড়িয়া আজাদ নগর পৌরসভার অডিটোরিয়ামে সাবেকিয়ানা মধ্য দিয়ে ওই এলাকার মানুষের মন জয় করেছে। সম্প্রতি ,দুর্গাচকের কুমারচন্দ্র জানা অডিটরিয়ামে বাবাজিবাসা অগ্রগামী সংঘ, আইওসি ও সিআইএসএফ সহ কয়েকটি শিল্প সংস্থার যৌথ উদ্যোগে জেলার ১২টি হোমের প্রায় ৬০০ জন শিশু কিশোর ও বয়স্কদের নতুন জামাকাপড় তুলে দিলেন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি। উপস্থিত ছিলেন হলদিয়া রিফাইনারি এক্সিকিউটিভ অফিসার পার্থ ঘোষ প্রমূখ।

No comments