Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

দীঘায় নামলো বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী

ভারী বৃষ্টির সঙ্গে ঘণ্টায় ৬০কিলোমিটার পর্যন্ত ঝোড়ো হাওয়ার পূর্বাভাসকে সামনে রেখে আজ, বুধবার উপকূল এলাকায় লাল সতর্কতা জারি হয়েছে। মঙ্গলবারও আবহাওয়া দপ্তরের পক্ষ থেকে পূর্ব মেদিনীপুরে লাল সতর্কতা ছিল। এদিন সকাল থেকেই জেলাজুড়ে প্রশা…

 




ভারী বৃষ্টির সঙ্গে ঘণ্টায় ৬০কিলোমিটার পর্যন্ত ঝোড়ো হাওয়ার পূর্বাভাসকে সামনে রেখে আজ, বুধবার উপকূল এলাকায় লাল সতর্কতা জারি হয়েছে। মঙ্গলবারও আবহাওয়া দপ্তরের পক্ষ থেকে পূর্ব মেদিনীপুরে লাল সতর্কতা ছিল। এদিন সকাল থেকেই জেলাজুড়ে প্রশাসনিক তৎপরতা ছিল তুঙ্গে। সোমবার রাতেই জেলায় চলে আসেন নবান্নের প্রতিনিধি তথা শ্রমদপ্তরের প্রধান সচিব বরুণ রায়। মঙ্গলবার সকাল থেকেই রাজ্য সরকার নিযুক্ত পূর্ব মেদিনীপুরের ওই নোডাল অফিসার তমলুকে ডিএম অফিসে বসে গোটা পরিস্থিতি মনিটরিং করেন। এদিন জেলায় সমস্ত ফেরি চলাচল বন্ধ রাখার জন্য বিডিও এবং এসডিওদের নির্দেশ দেওয়া হয়। দীঘায় এনডিআরএফের টিম নামে। ব্লক, মহকুমা ও জেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সকাল থেকেই দীঘা উপকূলে হাল্কা বৃষ্টি হলেও বিকেলের পর তা মুষলধারে নামে। সোমবার দীঘা, শঙ্করপুর, তাজপুর ও মন্দারমণির সমস্ত হোটেল খালি করে দেওয়া হয়। যেকারণে দীঘা ছিল প্রায় জনশূন্য।

ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল প্রশাসন। উপকূল বরাবর ৪৩টি মাল্টি পারপাস সাইক্লোন শেল্টারের পাশাপাশি ৭০০স্কুল বিল্ডিং প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। পানীয় জল, বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেইসঙ্গে প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীও এসডিও অফিসে পাঠানো হয়। যদিও সন্ধ্যা পর্যন্ত মানুষজনকে সরানোর মতো পরিস্থিতি হয়নি। সারাদিন উপকূলবর্তী এলাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়। দীঘার সি-বিচ বরাবর মাইকিং হয়। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ দীঘা থানা থেকে সি-হক ঘোলা ঘাটে যায় এনডিআরএফ টিম। আরও দু’টি টিমকে উপকূল এলাকায় পাঠানোর জন্য তৈরি রাখা হয়েছিল।

গত বছর উম-পুন এবং এবছর যশ সাইক্লোনে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে। সমুদ্রপৃষ্টে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হলেই বাড়তি সতর্কতা নিতে হয় প্রশাসনকে। তাছাড়া পরপর দু’বছর দু’টি সাইক্লোন থেকে অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে প্রশাসনের। তাই এবার কোনওরকম খামতি ছাড়াই প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছিল। ২৬সেপ্টেম্বর থেকেই দীঘা উপকূলে হলুদ সতর্কতা জারি করে দেওয়া হয়। তমলুকে ডিএম অফিসে ২৪ঘণ্টাব্যাপী চালু হয় কন্ট্রোলরুম। এছাড়াও পুলিস, স্বাস্থ্য, পূর্ত, সেচ, কৃষি, খাদ্য, বিদ্যুৎবণ্টন, মৎস্য, দমকল, উপকূলরক্ষী বাহিনী, টেলিকম প্রভৃতি দপ্তরেও কন্ট্রোলরুম খোলা হয়। আগেভাগেই কাঁথি, হলদিয়া, এগরা এবং তমলুক এসডিও অফিসে মোট ৪০০মেট্রিকটন চাল, শুকনো খাবার, ত্রিপল পাঠানো হয়। প্রস্তুত রয়েছে সিভিল ডিফেন্স টিম। বিদ্যুৎবণ্টন সংস্থাকেও সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার মতো প্রয়োজনীয় কর্মী ও সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রতিটি ব্লকে গাছ কেটে রাস্তা পরিষ্কার করার টিমও প্রস্তুত।

এদিন জেলাশাসক অফিসে শ্রমদপ্তরের প্রধান সচিব দুর্যোগ মোকাবিলা নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি সহ চারজন অতিরিক্ত জেলাশাসক উপস্থিত ছিলেন। উদ্ধারকারী টিম, সরঞ্জাম প্রভৃতি বিষয়ের উপর খোঁজখবর নেন। বিকেলে আবহাওয়া দপ্তরের স্পেশাল বুলেটিন আসে। তাতে বুধবারও জেলায় ‘রেড ওয়ার্নিং’ জারি করা হয়। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পাশাপাশি ঝোড়ো হওয়া বওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মৎস্যজীবীদের ২৯তারিখ পর্যন্ত সমুদ্রে নামার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত দীঘা-মন্দারমণির হোটেলেও বুকিং বাতিল থাকছে। পুজোর মুখে ওই ঘটনায় বেশ হতাশ হোটেল ব্যবসায়ীরা।

জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপন অফিসার মৃত্যুঞ্জয় হালদার বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা সবরকম প্রস্তুতি সেরে রেখেছি। মঙ্গলবার দীঘায় এনডিআরএফ টিম নামানো হয়। আরও দু’টি টিম তৈরি আছে। জেলাজুড়ে সমস্ত ফেরি সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২৮ ও ২৯তারিখ দু’দিন লাল সতর্কতা জারি হয়েছে। সেইমতো উপকূল বরাবর মাইকিং করা হয়েছে।

No comments