এবার ৬০ শতাংশ নম্বর পেলেই বৃত্তি। এবার আরও বেশি ছাত্রছাত্রী স্কলারশিপের আওতায়। বৃহস্পতিবার শিক্ষক দিবসের প্রাক্কালে পড়াশোনায় উৎসাহ দিতে এমনই ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিবারের আর্থিক সঙ্গতি নেই, এমন মেধাবী পড়ু…
এবার ৬০ শতাংশ নম্বর পেলেই বৃত্তি। এবার আরও বেশি ছাত্রছাত্রী স্কলারশিপের আওতায়। বৃহস্পতিবার শিক্ষক দিবসের প্রাক্কালে পড়াশোনায় উৎসাহ দিতে এমনই ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিবারের আর্থিক সঙ্গতি নেই, এমন মেধাবী পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ করে দিতে পাঁচ বছর আগে ‘স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট-কাম মিনস স্কলারশিপ’ চালু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার জন্য এতদিন ৭৫ শতাংশ নম্বর প্রাপ্তি ছিল বাধ্যতামূলক। উচ্চমাধ্যমিক স্তর, পলিটেকনিক ডিপ্লোমা থেকে স্নাতক-স্নাতকোত্তর—কোর্স অনুযায়ী বৃত্তি মিলত ১ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ প্রকল্পে চলতি বছর থেকে ৭৫-এর পরিবর্তে ৬০ শতাংশ নম্বর পেলেই আবেদন জানাতে পারবেন ছাত্রছাত্রীরা। ফলে আরও বেশি সংখ্যক পড়ুয়া উপকৃত হবেন।
পড়াশোনার মান উন্নয়নে বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমের সঙ্গে রাজ্যের সিলেবাসের মেলবন্ধনও চায় রাজ্য সরকার। তার জন্য শিক্ষা সংক্রান্ত একটি পোর্টাল তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নাম ‘কেরিয়ার গাইডেন্স’। এদিন নবান্নে চলতি বছরে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, মাদ্রাসা, হাই মাদ্রাসা উত্তীর্ণ মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মিলিত হয়ে সেকথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘কেরিয়ার গাইডেন্স নামে এই পোর্টালের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কী পড়ানো হচ্ছে, তা ঘরে বসেই বিনামূল্যে জানতে পারবেন রাজ্যের পড়ুয়ারা। বাংলার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ও ওই ইউনিভার্সিটিগুলির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সিলেবাস তৈরি করবে।’ চলতি বছরে নবম শ্রেণির তিন লক্ষ ছাত্রছাত্রীর হাতে সবুজ সাথী প্রকল্পে সাইকেল এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে পাঠরত দশ লক্ষ পড়ুয়াকে ট্যাব কেনার জন্য এককালীন দশ হাজার টাকা করে দেবে রাজ্য সরকার। সেই ঘোষণার পাশাপাশি উচ্চশিক্ষার জন্য সবাইকে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা নেওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন মমতা। সেই সঙ্গে পড়ুয়াদের কাছে রেখেছেনে একটি আর্জিও। তা হল, চলতি দুয়ারে সরকার শিবিরে গিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের ফর্ম পূরণে সহায়তা করা।
চলতি বছর করোনা পরিস্থিতির জেরে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক সহ অন্যান্য পরীক্ষা হয়নি। ফলে পাশের হার কার্যত ১০০ শতাংশ। এদিন রাজ্য সরকারের তরফে বিভিন্ন জেলা ও মহকুমা সদরে আয়োজিত ভার্চুয়াল সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন ১৭০০ জন মেধাবী ছাত্রছাত্রী। তাদের হাতে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্বামী বিবেকানন্দ, মুখ্যমন্ত্রীর লেখা বই এবং শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়। এদিনের অনুষ্ঠানে আইসিএসই, সিবিএসই-র কৃতীদেরও ডাকা হয়েছিল। কিন্তু সংশ্লিষ্ট বোর্ড কোনও তালিকা দিতে পারেনি। এর জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।এদিন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রণাম জানানোর পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের কোনও পরিস্থিতিতেই মাথা নত না করার পরামর্শও দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছেন অন্যায় দেখলেই রুখে দাঁড়াতে। দিয়েছেন দুঃখকে জয় করার শিক্ষা। আর বাড়িয়েছেন পড়ুয়াদের মনোবল—‘কারও কাছে ভিক্ষা চাইবে না। নিজেরাই নিজেদের পায়ে দাঁড়াবে। গরিব বলে লজ্জা পেও না। মাটির ঘর থেকেই তোমরা একদিন বিশ্বজয় করবে।’
No comments