ঢেলে সাজছে রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থা। এসএসকেএম হাসপাতালে দাঁড়িয়ে সেই ঘোষণাই করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মাসে অন্তত দু’টি বৃহস্পতিবার এসএসকেএমে এসে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সরাসরি ‘মনিটর’ করার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। এদিন সে…
ঢেলে সাজছে রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থা। এসএসকেএম হাসপাতালে দাঁড়িয়ে সেই ঘোষণাই করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মাসে অন্তত দু’টি বৃহস্পতিবার এসএসকেএমে এসে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সরাসরি ‘মনিটর’ করার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। এদিন সেই কাজেই এসেছিলেন পিজিতে। বেরনোর সময় বৃষ্টিভেজা দুপুরে, ছাতা মাথায় দিয়েই সারলেন সাংবাদিক সম্মেলন। ডাক্তার সংক্রান্ত সঙ্কট মেটাতে করলেন একঝাঁক ঘোষণা। বললেন, ‘রাজ্যে চিকিৎসক সঙ্কট চলছে। আমরা ইতিমধ্যেই গ্রামীণ ডাক্তারদের প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবায় নিয়োগ করছি। এবার কৃতী, অভিজ্ঞ নার্সদের পদোন্নতির ব্যবস্থা করছে রাজ্য। তাঁদের জন্য একধাপ এগিয়ে হচ্ছে প্র্যাকটিশিয়ান নার্স-এর পদ। এতে ডাক্তারদের সুরাহা হবে।’ পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, ‘হাসপাতালের বহু গুরুদায়িত্ব সামলান জুনিয়র ডাক্তারবাবু ও নার্সরা। সিনিয়র ডাক্তারবাবুরা তো আমাদের গর্ব। আমরা ডাক্তার-নার্সদের আবাসনের জন্য ১০ একর জমি খুঁজতে বলেছি। পিজি হাসপাতালের ডাক্তার-নার্সদের জন্য লি রোডে একটি নতুন ১১তলা হস্টেলও হবে।’ পিজি সহ বিভিন্ন হাসপাতালের এক বিভাগ বা অন্য বিভাগে যাতে দ্রুত যাওয়া যায়, ডাক্তার-নার্সদের জন্য তেমন পৃথক রাস্তা তৈরির কথাও ভাবছেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর এসএসকেএমে কলকাতার বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।
এদিন বিকেল চারটে নাগাদ পিজিতে আসেন মমতা। উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম, পিজি অধিকর্তা ডাঃ মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। হাসপাতালের অ্যাকাডেমিক বিল্ডিং হয়ে বৈঠকস্থলে ওঠার জন্য লিফটে ঢোকার রাস্তায় ‘দিদি’কে স্বাগত জানান গুণমুগ্ধ জুনিয়র ডাক্তার ও ডাক্তারি ছাত্রছাত্রীরা। সেই অভিবাদন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোলেননি, বৈঠক শেষ হতে না হতেই তার প্রমাণ দেন তিনি। অফিসারদের বলেন জুনিয়র ডাক্তারদের নিয়ে আসতে। তাঁরাও কিছুটা অবাক হয়ে যান শুনে যে, কোনও প্রতিনিধিদল নয়, গেটে থাকা ৩৬ জন জুনিয়র ডাক্তারই আসবেন বৈঠকস্থল ন’তলায়। তাঁরা আসতেই পাওয়া যায় অন্য মমতাকে। হাল্কা মেজাজে। পাশাপাশি প্রত্যেকের কাছ থেকে পিজি এবং সার্বিকভাবে জুনিয়র ডাক্তারদের সমস্যাও জেনে নেন তিনি। তাঁরা হস্টেলের সমস্যার কথা জানান। মমতা বলেন, ‘ইতিমধ্যেই সমস্যা মেটাতে নতুন হস্টেল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’ জুনিয়র ডাক্তাররা বলেন, ‘ভালো খেলার মাঠ নেই।’ বিরক্ত মমতা অফিসারদের কাছে জানতে চান, ‘এতদিনে পিজিতে আধুনিক ভালো মাঠ হয়নি কেন?’ উপস্থিত মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে বিষয়টি দেখতে বলেন। উঠে আসে ভ্যাকসিন প্রসঙ্গও। টিকা নেওয়ার পর অ্যান্টিবডির মেয়াদ কমতে থাকলে সাধারণ মানুষের বুস্টার ডোজ নেওয়ার দরকার পড়বে কি না, চিকিৎসকদের সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ও প্রয়োজনে কমিটি গড়তে বলেন তিনি। ছাত্রছাত্রীদের স্নেহের সুরে বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে অনেকে তো আমার জন্য অপেক্ষা করতে গিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে গেছো। জ্বর বাধিও না। সাবধানে থেকো’। এসএসকেএম হাসপাতালে মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।-
No comments