তিনি দিনের বেলায় রাস্তাঘাট পরিষ্কার করতেন। যোধপুর মিউনিসিপ্যালিটির ঝাড়ুদার কর্মচারী হিসাবে। তিনি রাতের বেলায় লেখাপড়া করতেন রাজ্যের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় পাশ করার জন্যে। ১৯৯৭ সালে যখন তার বিয়ে দেওয়া হয়, তখন তার লেখাপড়াও ঠিক ভাবে …
তিনি দিনের বেলায় রাস্তাঘাট পরিষ্কার করতেন। যোধপুর মিউনিসিপ্যালিটির ঝাড়ুদার কর্মচারী হিসাবে।
তিনি রাতের বেলায় লেখাপড়া করতেন রাজ্যের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় পাশ করার জন্যে।
১৯৯৭ সালে যখন তার বিয়ে দেওয়া হয়, তখন তার লেখাপড়াও ঠিক ভাবে শেষ হয়নি। দুই সন্তানের জননী হন।
কিন্তু হঠাৎই স্বামী ছেড়ে চলে গেলেন ২০০২ সালে। আকাশ ভেঙে পড়ল মাথায়। দুই সন্তানকে মানুষ করার দায়িত্ব তার কাঁধে।
বিপর্যয়ের ধাক্কা কাটিয়ে বেরিয়ে পড়লেন শ্রমদানে। মিউনিসিপ্যালিটির স্যানিটারি কর্মচারী হিসাবে যে উপার্জন করতেন, তাতে দুই সন্তানের মুখে অন্ন যোগানোর পরে অবশিষ্ট অর্থে শুরু করলেন লেখাপড়া।
২০১৬ সালে হলেন গ্র্যাজুয়েট।
এরপর থেকেই শুরু করেন রাজস্থান এডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতি।
আসলে দিনের বেলায় রাস্তায় কাজ করতে গিয়ে কতবার যে কটাক্ষ শুনেছেন, "মনে রাখিস, তুই কোনো কালেক্টর নোস, ঝাড়ুদার মাত্র!"
অনবরত এই অপমান, অবহেলা সইতে সইতে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হলেন যে কালেক্টর হয়েই তিনি থামবেন।
প্রথমে ভাবলেন, অল ইণ্ডিয়া সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসবেন। কিন্তু বয়সের ঊর্ধ্বসীমা পেরিয়ে গ্যাছে যে! তাই প্রস্তুতি শুরু করলেন রাজস্থান এডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস পরীক্ষার।
কয়েক দিন আগে সেই রাজস্থান এডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ পেয়েছে। তিনি তাতে সফল সসম্মানে। মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন এর মেয়র থেকে মুখ্য আধিকারিক সকলেই তার এই সাফল্যে অভিভূত, মুগ্ধ।
আগুনে পুড়ে অধিকাংশ মানুষই ছাই হয়ে যায়। তবে কেউ কেউ অঙ্গারও হয়। যারা হয়, তারা একাগ্র জেদে নিজেদের উচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত করে। নিজেদের যোগ্যতায়। তাদের সাফল্য আমাদের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে৷
দুই সন্তানের জননী আশাদেবীর এই লড়াই কুর্নিশযোগ্য। অনুপ্রেরণাদায়ী। তার কর্মজীবন আরও সুন্দর হোক, অন্ধকারের হাত থেকে আলোয় আসতে তিনি আরও মানুষদের পথ দেখান, এটাই আশা।
❤️❤️
No comments