যশ সাইক্লোনে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় মোট ১লক্ষ ৮৫ হাজার ৭৮০ জন ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্তের তালিকায় দেড় লক্ষ চাষি রয়েছেন। তাঁরা এসডিআরএফ(স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স ফান্ড) থেকে ২০ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা পাবেন। এছাড়াও বাড়ির জ…
যশ সাইক্লোনে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় মোট ১লক্ষ ৮৫ হাজার ৭৮০ জন ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্তের তালিকায় দেড় লক্ষ চাষি রয়েছেন। তাঁরা এসডিআরএফ(স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স ফান্ড) থেকে ২০ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা পাবেন। এছাড়াও বাড়ির জন্য আরও ১৭ হাজার ৪৫৯ জন ক্ষতিপূরণ পাবেন। ইতিমধ্যেই ১ জুলাই থেকে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি নির্মাণের জন্য টাকা দেওয়া শুরু হয়েছে। এর জন্য ১০ কোটি টাকা পাঠিয়েছে নবান্ন। গবাদি পশু, মৎস্যচাষ, পানবরজ, ক্ষুদ্র ও মাঝারিশিল্প প্রভৃতি ক্ষেত্রে ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় আরও ১৯ হাজার ১০৪ জনকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
বাড়ি ক্ষয়ক্ষতি বাবদ মোট ৮৯ হাজার ৪৫৬টি আবেদন জমা পড়েছিল। তারমধ্যে ৭১ হাজার ৯৯৭টি আবেদন বাতিল হয়েছে। সাড়ে ১৭ হাজার ক্ষতিগ্রস্তকে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। খেজুরি-২ ব্লকে সবচেয়ে বেশি ৩২৬১ জন, দেশপ্রাণ ব্লকে ২৭৪৫ জন, রামনগর-১ ব্লকে ২৬৬৬ জন, কাঁথি-১ ব্লকে ২১৪১ জন বাড়ি ভাঙার জন্য ক্ষতিপূরণ পাবেন। এগরা-১ ব্লকে ৩১১৭ জন ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করেছিলেন। এনকোয়ারির পর ক্ষতিগ্রস্ত সংখ্যা মাত্র ১০ জন। এগরা-২ ব্লকে বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত বাবদ আবেদন ছিল ৬০৩৭টি। ওই ব্লকে মাত্র একজন ক্ষতিপূরণ পাবেন। হলদিয়া ব্লকে ৪৮৩টি আবেদন জমা পড়েছিল। ওই ব্লকে একজনেরও ক্ষতিপূরণ তালিকায় নাম নেই। বাড়ির ক্ষয়ক্ষতির ছবি দিয়ে নন্দীগ্রাম-১ ব্লকে ১০ হাজার ৬৬৯ জন আবেদন করেছিলেন। এনকোয়ারিতে ক্ষতিগ্রস্ত সংখ্যা বেরিয়েছে মাত্র ৭৪৮ জন।
জেলায় মোট ১৬৮৮টি পানবরজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রশাসন চিহ্নিত করেছে। প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে পাঁচ হাজার টাকা দেওয়া হবে। এছাড়াও মৎস্য চাষে ১৬ হাজার ১৮৩ জন ক্ষতিগ্রস্ত বলে জেলাশাসক অনুমোদন দিয়েছেন। চণ্ডীপুর ব্লকে ৩৯৩৪ জন, দেশপ্রাণে ২৯৮৭ জন, খেজুরি-২ ব্লকে ২৪৬৭ জন, রামনগর-১ ব্লকে ২৬৬৪ জন মৎস্যজীবী ক্ষতিপূরণ পাবেন। মাছ ধরার নৌকা, জাল, হাঁড়ির জন্য ক্ষতিপূরণ মিলবে। ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পে ২৬৪ জন ক্ষতিগ্রস্তকে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। মোট ৭৭০ জনের গবাদি পশু মারা গিয়েছে বলে প্রাণিসম্পদ ও বিকাশ দপ্তর খুঁজে বের করেছে। তাছাড়া ৬৯টি ইটভাটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।
গত ৩ থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় মোট ১ লক্ষ ১৩ হাজার আবেদনকারী ‘দুয়ারে ত্রাণ’ ক্যাম্পে আবেদন করেছিলেন। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরাই যাতে ক্ষতিপূরণ পান, সেটা নিশ্চিত করতে ব্লকস্তরে এনকোয়ারি কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। প্রত্যেক আবেদনকারীর বাড়ি গিয়ে সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন সরকারি কর্মীরা। ক্ষয়ক্ষতি না হওয়া সত্ত্বেও অনেক আবেদন জমা পড়েছিল। সেসব বাতিল হয়েছে। নবান্নের নির্দেশমতো সম্পূর্ণ এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্তদের আলাদা তালিকা তৈরি করা হয়। সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্তরা ২০ হাজার টাকা এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্তরা পাঁচ হাজার টাকা করে পাচ্ছেন। দু’-একদিনের মধ্যেই দেড় লক্ষ চাষির অ্যাকাউন্টে এসডিআরএফ-এর ২০ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা ঢুকতে শুরু করবে। জমির পরিমাণ অনুযায়ী চাষিরা সর্বনিম্ন এক হাজার থেকে সর্বোচ্চ আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত পাবেন। জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি হয়েছে। সেইমতো অর্থ চাওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই আমরা দশ কোটি টাকা পেয়েছি।
No comments