বিধি শিথিল হতেই পুরনো ছন্দে ফিরছে সৈকত নগরী দীঘা। বাস চালু হলেও স্বাভাবিক হয়নি ট্রেন পরিষেবা। রেল কর্তৃপক্ষ ভায়া দীঘা তিনটি সাপ্তাহিক ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিলেও এই মুহূর্তে হাওড়া-দীঘা তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস চালুর দাবি জোরালো হচ্…
বিধি শিথিল হতেই পুরনো ছন্দে ফিরছে সৈকত নগরী দীঘা। বাস চালু হলেও স্বাভাবিক হয়নি ট্রেন পরিষেবা। রেল কর্তৃপক্ষ ভায়া দীঘা তিনটি সাপ্তাহিক ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিলেও এই মুহূর্তে হাওড়া-দীঘা তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস চালুর দাবি জোরালো হচ্ছে। গত বছর করোনা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসার পর তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস চালু করেছিল দক্ষিণ-পূর্ব রেল। এবছর এখনও পর্যন্ত ওই ট্রেন নিয়ে রেলের কোনও উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। গোটা রাজ্যে লোকাল ট্রেন বন্ধ আছে। কিন্তু, স্পেশাল ট্রেন হিসেবে সারা দেশেই এক্সপ্রেস চলাচল করছে। দীঘা যাতায়াতের জন্য দ্রুত স্পেশাল ট্রেন চালুর দাবিতে সরব হয়েছেন পর্যটক থেকে হোটেল মালিক ও নিত্যযাত্রীরা। এ ব্যাপারে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নীরজ কুমার বলেন, তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস চালানো নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে, ওই ট্রেন চালু করা নিয়ে আমাদের কাছে আবেদন এলে বিষয়টি ভেবে দেখা হবে।এই মুহূর্তে দীঘা-মালদহ সাপ্তাহিক স্পেশাল ট্রেন চলছে। এছাড়াও দীঘা-আসানসোল ও দীঘা-বিশাখাপত্তনম সাপ্তাহিক আরও দু’টি ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। কিন্তু হাওড়া-দীঘা সংযোগকারী একটি স্পেশাল ট্রেন দ্রুত চালানোর দাবি উঠেছে। মহামারী পরিস্থিতিতে ঘরবন্দি মানুষ। ১জুলাই বিধি শিথিল হতেই একঘেয়েমি জীবন থেকে কিছুটা মুক্তির স্বাদ পেতে কাতারে কাতারে মানুষ দীঘা, শঙ্করপুর, তাজপুর ও মন্দারমণি আসছেন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আত্মশাসনের জেরে প্রায় দেড় মাস পর বাস পরিষেবা চালু হয়েছে। দীঘা থেকে দৈনিক ৫০টির বেশি সরকারি ও বেসরকারি বাস চলাচল করছে। তবে, পর্যটকরা ট্রেনে চেপে দীঘা যেতে সবচেয়ে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
সাইক্লোন বিধ্বস্ত দীঘায় হোটেল থেকে ছোট ও মাঝারি দোকানদার, হকার প্রত্যেকেই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত। তাই পর্যটকের সংখ্যা বাড়লে তাঁরাও লাভবান হবেন। বর্তমানে দীঘা থেকে মান্দারমণি সর্বত্রই একশো শতাংশ হোটেল খুলে গিয়েছে। শনি ও রবিবার উইক এন্ডের পরিচিত ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছে। তাই ট্রেন পরিষেবা চালু হলে আবারও দীঘা আগের মতোই জমজমাট হয়ে উঠবে বলে প্রত্যেকেই মনে করছেন।
পর্যটক বাড়তেই সমুদ্রস্নানে নিষেধাজ্ঞা ধীরে ধীরে প্রত্যাহার করা হয়েছে। রবিবার নিউ দীঘার ক্ষণিকা ঘাট, হলিডে হোম ঘাট, মেরিনা ঘাট, ঢেউসাগর ও ওশিয়ানা ঘাটে অনেক পর্যটক সমুদ্রস্নান সারেন। প্রতিটি ঘাটে নুলিয়াদের নজরদারি রয়েছে। ওল্ড দীঘায় সি-হক ঘোলা ঘাট, বিশ্ববাংলা-১ ও ২নম্বর ঘাটে সমুদ্রস্নানে কিছুটা কড়াকড়ি আছে। দিনকয়েক আগেই সি-হক ঘোলা ঘাটে সমুদ্রস্নানের সময় দুই পর্যটকের মৃত্যু হয়। পুলিস জানিয়েছে, এই মুহূর্তে পর্যটক সংখ্যা বাড়ছে। সমুদ্রস্নান বন্ধ রাখা নিয়ে কোনও নির্দেশ নেই। তাই পর্যটকরা সমুদ্রে নামছেন। পুলিস ও নুলিয়াদের নজরদারি রয়েছে।
দীঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেসকে স্পেশাল ট্রেন হিসেবে চালু করলে দীঘায় পর্যটক সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। মহামারী ও যশ সাইক্লোনে দীঘায় পর্যটন শিল্প বিরাট ধাক্কা খেয়েছে। এখন ঘুরে দাঁড়ানোর সময়। পর্যটকরাও আসতে চাইছেন। তাই ট্রেন পরিষেবা চালু হলে সকলের কাজে আসবে।
No comments