@ ২১ শে ফেব্রুয়ারী র রক্তাক্ত ইতিহাস মনে পড়ে/পাকিস্তানের সেনার বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বাংলাদেশের তরুণ ছাত্র- যুব সমাজ ও আপামর জনসাধারণের যে অসম লড়াই/ঢাকার মাটি হয়েছিল লালেলাল/মাতৃভাষা বাংলা করার দাবীতে/ আজও আমরা এপ…
@ ২১ শে ফেব্রুয়ারী র রক্তাক্ত ইতিহাস মনে পড়ে/পাকিস্তানের সেনার বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রাঙ্গণে বাংলাদেশের তরুণ ছাত্র- যুব সমাজ ও আপামর জনসাধারণের
যে অসম লড়াই/ঢাকার মাটি হয়েছিল লালেলাল/মাতৃভাষা বাংলা করার দাবীতে/ আজও আমরা
এপার বাংলার প্রতিটি জনগন
সালাম ,আদাব,কুর্নিশ জানাই/
এ লড়াইয়ে শরিক হতে পারিনি ঠিকই/ তবে আমরা মনে মনে ভাবি এ লড়াইয়ের যোদ্ধা আমরাও/
@২১ শে ফেব্রুয়ারি বিশ্ব মাতৃভাষা
দিবসের স্বীকৃতি পায়/
@ আর একটি ঘটনা ভারতবর্ষের
আসামের বরাক উপত্যকায় ঘটে
ছিল/
আজ সেই ঘটনা বোলবো
@ ১৯৬১- র ১৯ শে মে/ ভরদুপুর/বেলা-১২ টা/আসামের বরাক উপত্যকায় মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার
প্রশ্নে বাংলাভাষী প্রতিবাদকারীদের
উপর দুমদাম করে গুলি চালিয়ে দিয়ে ছিল পুলিশ/পুলিশের গুলিতে লড়াইয়ের ময়দানে জীবন উৎসর্গ করে শহীদ হলেন মোট এগারো জন/# কমলা ভট্টাচার্য (ভাষা আন্দোলনের প্রথম মহিলা শহীদ)
# বীরেন্দ্র সূত্রধর
# চণ্ডী চরণ সূত্রধর
# সুনীল সরকার
# শচীন্দ্র পাল
# কানাইলাল নিয়োগী
# সত্যেন্দ্র দেব
# সুকোমল পুরকায়স্থ
# কুমুদ রঞ্জন দাস
# হীতেশ বিশ্বাস
# তরনী দেবনাথ
এই হত্যাকাণ্ডের খবর ছড়িয়ে পড়ল
সারা বিশ্বে/রক্তে রাঙা বরাক উপত্যকার লালমাটি থেকেই ২০শে
মে-র ভোরের সূর্যের লাল আভা ছড়িয়ে পড়ল সারা আসামে/
জেগে উঠল আসামের সমস্ত স্তরের
মানুষজন/বরাক উপত্যকায় জারি
হোল ১৪৪ ধারা/ ওই দিন সন্ধ্যায় আইন অমান্য করে হাজার হাজার মানুষ চেতনার রাজপথে হেঁটে নদী তীরে এসে ১১জন শহীদের শেষ যাত্রায় চিতা জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা জানাল/
# ২৪-শে মে ধিক্কার সমাবেশের
সভাপতি হলেন বিখ্যাত সাহিত্যিক,
সাংবাদিক ও সম্পাদক বিবেকানন্দ
মুখোপাধ্যায়/পরের দিনই তাঁর কাগজে 'যুগান্তরে'বড় বড় করে ছাপা
হোলঃ'তাহারা ১১টি প্রাণের অনির্বাণ
প্রদীপ জ্বালাইয়াছে/আমরা সেই
প্রদীপের আলোয় পথ চিনিয়াছি/'
# ২৩ শে মে প্রায় ৭৫ হাজার নগ্নপদ
মানুষের মহামিছিল আদি গঙ্গায়
চিতাভস্ম বিসর্জ্জন দিয়ে আলোর
পথে জানান দিয়ে গিয়েছিল/
# ২৪ শে মে তারিখের হিন্দুস্থান
স্ট্যান্ডার্ড সম্পাদকীয়তে লিখলঃ
' স্বাধীন ভারতে এই প্রথম ভাষার
জন্য মানুষের মৃত্যু ঘটল/'
বিষয়গত দিক দিয়ে এবং জাতিগত দিক দিয়ে,আমরা বাঙালীরা এর সঙ্গে জড়িত----- এর থেকে দুঃখ যেমন আছে,আনন্দই বা কম কিসে?
পূর্ব বঙ্গ ( বাংলাদেশ) আর পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষে বাঙলা ভাষার প্রতিষ্ঠাকল্পে আত্মবলিদানের মাধ্যমে ২১ শে ফেব্রুয়ারীকে "আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস"হিসেবে আদায় করে নিতে পেরেছি বিশ্ববাসীর কাছ থেকে,এতেই বা আনন্দ কম কিসের যতই থাক রক্তঝরার হাহাকার/
বরাক উপত্যকার শিলচরে বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠার জন্য ১১জনের যে আত্মবলিদান আজকের পুণ্যদিনে,তা আমাদের নতুন মন্ত্রে উদ্বোধিত করে/মায়ের জঠর থেকে যে ভাষার উৎপত্তি তার প্রতি আমাদের যেমন শ্রদ্ধাশীল থাকা দরকার,তেমনি তার প্রয়োগের দিকেও বিশেষ যত্নবান হওয়া দরকার/বিষয়টি বড়ই দুঃখের,আমাদের এই প্রাণের ভাষা,মুখের ভাষা নিখুঁতভাবে প্রয়োগের ক্ষেত্রে আমরা অনেকেই বড় বেশী উদাসীন /সমস্ত বিপদের আশঙ্কা এখান থেকেই সৃষ্টি হয়,১৯শে মে,বা ২১শে ফেব্রুয়ারী পালনের উদ্দেশ্যও বিঘ্নিত হয়/
# আসুন, আজকের এই পুণ্য দিনে সেই ভাষা শহীদদের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা ও আভূমি প্রনাম জানাই/
### পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষিত মানুষও এঁদের খবর রাখে না/মিডিয়া ও এ সম্পর্কে নীরব/ এ ইতিহাস জানা থাকলে বাংলার মানুষের কাছে ভাষা চেতনার প্রতীক হতে পারত ২১ শে ফেব্রুয়ারি নয়- ১৯ শে মে /
বাংলাভাষার সম্মান রক্ষার জন্য আসুন সবাই হাতে হাত মিলাই/
সনৎকুমার বটব্যাল
(হরিপদ কেরানী)
সম্পাদক- পৃথ্বী (সাহিত্য পত্রিকা)
২১/১১ তেঘরিয়া, নন্দনকানন
কলকাতা-৭০০১৫৭, পশ্চিমবঙ্গ
ভারত ।
No comments