মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে শিক্ষকদের মাস পয়লা বেতনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ব্যতিক্রমী কিছু ঘটনা ছাড়া তা এতদিন কার্যকর হয়েও এসেছে। তবে, আধিকারিকদের একাংশের গাফিলতিতে এ মাসে এখনও পর্যন্ত বেতন পাননি কয়েক হাজার শিক্…
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে শিক্ষকদের মাস পয়লা বেতনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ব্যতিক্রমী কিছু ঘটনা ছাড়া তা এতদিন কার্যকর হয়েও এসেছে। তবে, আধিকারিকদের একাংশের গাফিলতিতে এ মাসে এখনও পর্যন্ত বেতন পাননি কয়েক হাজার শিক্ষক। ৭ এপ্রিলের আগে তা পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবে, আগেভাগে ব্যবস্থা নিলে এই ঘটনা এড়ানো যেত বলেই মনে করছেন শিক্ষকরা। ব্যাঙ্কের সংযুক্তিকরণের ফলে নতুন অ্যাকাউন্টের তথ্য হাতে না থাকায় ট্রেজারি থেকে যায়নি বেতন। তবে, এই আশঙ্কায় আগেই সরব হয়েছিলেন শিক্ষকরা।
কেন্দ্রীয় সরকার ছোট ব্যাঙ্কগুলিকে বড় ব্যাঙ্কের সঙ্গে সংযুক্তিকরণ সেরে ফেলেছে। এর ফলে ছোট ব্যাঙ্কগুলির আইএফএসসি এবং এমআইসিআর কোড পরিবর্তন হয়েছে। তবে, যথাসময়ে তা আইওএসএমএস পোর্টালে তোলা হয়নি। এই পোর্টালের মাধ্যমেই শিক্ষকদের বেতন হয়ে থাকে। সরাসরি বেতনের টাকা ঢুকে যায় শিক্ষকদের অ্যাকাউন্টে। সে কারণেই মাস-পয়লা বেতন নির্বিঘ্নে পান তাঁরা। আগে, স্কুলের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকত। সেখান থেকে যেত শিক্ষকদের কাছে। এই প্রক্রিয়ায় বেতন ঢুকতে কিছুটা দেরি হতো।
শিক্ষক সংগঠন এসটিইএ-র দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সম্পাদক অনিমেষ হালদার কয়েক মাস আগেই এই আশঙ্কা করেছিলেন। তিনি সেই সময় স্কুলশিক্ষা কমিশনার এবং ডিআই অফিসে চিঠি পাঠান। তাঁর অনুরোধ ছিল, ক্যাম্প করে শিক্ষকদের তথ্য সংগ্রহ করা হোক। না হলে মার্চের বেতন পেতে সমস্যা হবে শিক্ষকদের। কারণ, মার্চেই সংযুক্তি শেষ করছে ব্যাঙ্কগুলি। তবে, তাঁকে তখন বলা হয়, স্কুল শিক্ষা ডিরেক্টরেট থেকে কেন্দ্রীয় নির্দেশ না এলে ডিআইরা একতরফা এই পদক্ষেপ করতে পারেন না। তবে, এই কেন্দ্রীয় নির্দেশ শেষ পর্যন্ত আসেনি। কিছু কিছু জেলায় ডিআইরা বিচ্ছিন্নভাবে ব্যাঙ্ক ডিটেলস আপডেট করেছেন ঠিকই। তবে, প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই অপ্রতুল। বেতনের দায়িত্বে থাকা ডিডিও বা ড্রয়িং অ্যান্ড ডিসবার্সিং অফিসার (ক্ষেত্রে বিশেষে কোনও এডিআই কোথাও এআই)-রাও এক্ষেত্রে আগ বাড়িয়ে পদক্ষেপ করতে যাননি।
ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া এবং ওরিয়েন্টাল ব্যাঙ্ক অব কমার্স যুক্ত হয়েছে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের সঙ্গে। সিন্ডিকেট ব্যাঙ্ক জুড়েছে কানাড়া ব্যাঙ্কে। অন্ধ্র ব্যাঙ্ক ইউনিয়ন ব্যাঙ্কের সঙ্গে এবং এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে। জানা যাচ্ছে, ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট হোল্ডার শিক্ষকদের সংখ্যাই বেশি। বিভিন্ন জেলায় দু’-তিন হাজার এমন শিক্ষক রয়েছেন। এছাড়াও অন্যান্য ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট হোল্ডার রয়েছেন অল্প কিছু। বেতন না হওয়ায় শোরগোল পড়েছে। এবার নড়েচড়ে বসেছেন বিকাশভবনের কর্তারা। অন্যতম শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, শিক্ষকদের কোথাও যেতে হবে না। কেন্দ্রীয়ভাবে সমস্ত তথ্য ব্যাঙ্কগুলিকে জানিয়ে দেওয়া হবে। মঙ্গলবারের মধ্যে বেতন শিক্ষকদের অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাবে বলে তিনি আশ্বাসও দিয়েছেন। মাঝে গুডফ্রাইডে এবং রবিবার ব্যাঙ্ক ছুটি, শনিবার রাজ্য সরকারের ছুটি না থাকলে আগেই এই কাজ হয়ে যেত বলে তিনি আক্ষেপও করেন।
No comments