উত্তর বঙ্গোপসাগরে ঘনীভুত নিম্নচাপের কারণে আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস মতো মঙ্গলবার সকাল থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছিল উপকূল এলাকা জুড়ে। কিন্তু ৫০-৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো বাতাসের সতর্কতা জারি করা হলেও বুধবার কোনও ঝড় হয়নি এলাকায়। তবে নিম্…
উত্তর বঙ্গোপসাগরে ঘনীভুত নিম্নচাপের কারণে আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস মতো মঙ্গলবার সকাল থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছিল উপকূল এলাকা জুড়ে। কিন্তু ৫০-৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো বাতাসের সতর্কতা জারি করা হলেও বুধবার কোনও ঝড় হয়নি এলাকায়। তবে নিম্নচাপের কারণে সমুদ্র ছিল উত্তাল। মঙ্গলবার থেকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দিঘা উপকূলে জারি করা হয়েছিল হলুদ সতর্কতা।আর তার জেরে সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকাগুলির পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে৷ঘনীভূত নিন্মচাপ ও প্রবল জলোচ্ছ্বাসের দীঘা-সহ উপকুলের বিস্তীর্ণ এলাকায় বৃহস্পতিবার জলোচ্ছ্বাসের জেরে সমুদ্রের বাঁধ ভেঙে গিয়েছে৷ফলে বাঁধ উপচে দ্রুত জল ঢুকে প্লাবিত হচ্ছে সমুদ্র পাশ্ববর্তী গ্ৰাম গুলি।
রামনগর ১ ব্লকের চাঁদপুর, তাজপুর, লছিমপুর, জলধা গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই এলাকার সমুদ্র বাঁধের অবস্থা ভালো নয়।
পাশাপাশি ওই এলাকায় বেশকয়েকটি মাটির বাড়ি ভেঙে পড়ায় আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে এলকার বাসিন্দাদের৷তাছাড়া মেরিন ড্রাইভের রাস্তা ভেঙেচুরে দফারফা হয়ে গিয়েছে।পাশাপাশি সেচ দপ্তরের সহায়তায় ব্ল্যাকষ্টোন ফেলা হলেও তা জলের স্রোতে সরে যাচ্ছে।ফলে এই বিপজ্জনক ঘটনায় এলাকায় তীব্র আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে গোটা সমুদ্র পাশ্ববর্তী এলাকায়।সংস্কারের অভাবে বাঁধ জীর্ণশীর্ণ হয়ে পড়ে।
প্রসঙ্গত,আমফানের আঘাতে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বাঁধগুলি।কংক্রিটের বাঁধ তৈরীর কথা ঘোষণা করেছিল সেচ দপ্তর।বরাদ্দ হয়েছিল অর্থও।কিন্তু তারপরেও বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু না হওয়ায় বিস্তীর্ণ এলাকায় ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে স্থানীয়দের।তবে ইতিমধ্যে সমুদ্র তীরবর্তী দীঘা, মন্দারমনি,তাজপুর, চাঁদপুর,উদয়পুর প্রভৃতি এলাকার গ্রামগুলি থেকে বেশ কিছু পরিবারকে সুরক্ষিত জায়গায় সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে।
এ বিষয়ে রামনগর ১ ব্লকের বিডিও বিষ্ণুপদ রায় বলেন, পুরো ঘটনার পরিস্থিতি আমাদের নজরে রয়েছে। নিচু এলাকা গুলি বেশ কিছু জায়গায় জোয়ারের জল ঢুকে পড়েছে।ফলে পুকুর ও জমিতে নোনা জল ঢুকে যাওয়ায় চাষে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।তবে আপৎকালীন বাঁধ মেরামতির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।বেশ কয়েকটি জায়গায় দ্রুত কংক্রিট বাঁধ তৈরির কাজ শুরু হবে। তবে দিন যত গড়াচ্ছে দিঘাতে আরও প্রবল জলোচ্ছাসে লক্ষ্য করা যাচ্ছে।তবে জলোচ্ছ্বাসের মাল এতটাই বেশি যে তা গাড়োয়াল টপকে প্রায় ৭ থেকে ৮ ফুট উচ্চতার ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছে স্থলভাগে।
কাঁথি সেচ দপ্তরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার স্বপন পন্ডিত বলেন, 'দিঘা ও শঙ্করপুর থেকে তাজপুর এলাকায় কিছু জায়গায় বাঁধ টপকে জল ঢুকে পড়েছিল জোয়ারের সময়। তবে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এই সময় জোয়ারের জলের উচ্চতা এমনিতে একটু বেশি হয়। তার উপর নিম্নচাপের কারণে উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ গার্ডওয়াল ও বাঁধ টপকে কিছু কিছু জায়গায় ঢুকে পড়ে।'
No comments