মান্দারমনি সমুদ্র সৈকতে ভেসে এলো বিশালাকার মৃত তিমি। তা দেখতে ইতিমধ্যেই ভিড় জমিয়েছেন স্থানীয়রা। সোমবার সকালে বালিয়াড়িতে আটকে যাওয়া এই তিমির খবর অবশ্য পৌঁছে গিয়েছে প্রশাসনের অন্দরমহলে। স্থানীয় বাসিন্দারা দলে দলে দেখতে যাচ…
মান্দারমনি সমুদ্র সৈকতে ভেসে এলো বিশালাকার মৃত তিমি। তা দেখতে ইতিমধ্যেই ভিড় জমিয়েছেন স্থানীয়রা। সোমবার সকালে বালিয়াড়িতে আটকে যাওয়া এই তিমির খবর অবশ্য পৌঁছে গিয়েছে প্রশাসনের অন্দরমহলে। স্থানীয় বাসিন্দারা দলে দলে দেখতে যাচ্ছেন গভীর সমুদ্রের এই অতিকায় প্রাণীটিকে।
গত ১৫ ই জুন থেকে সমুদ্রে ইলিশ ধরার মরশুম শুরু হয়েছে। ফলে প্রচুর ট্রলার মাঝ সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছে। পরিবেশপ্রেমীদের মতে, এমতবস্থায় সম্ভবত কোনো ট্রলারের ধাক্কায় আহত হয়ে অবশেষে মৃত্যুর মুখোমুখি এই বিরল প্রজাতির বৃহদাকার স্ত্রী তিমিটি।
সম্ভবত এটি বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় Sei Whale। এটি Balaenoptera গণের অন্তর্গত। এটি আসলে ব্লু হোয়েল এবং ফিন হোয়েলের পর বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তিমি। বলা হয় Baleen Whale। প্রায় ৭০ বছর ধরে বেঁচে থাকার ক্ষমতা ধারী এই তিমি। এই তিমির বেশ কিছু প্রজাতির সন্ধান মেলে। যেমন Balaenoptera borealis, Balaenoptera schlegelli, Rudolphius laticeps, Balaenoptera laticeps, Physalus laticeps, Balaena rostrata, Sibbaldius laticeps ইত্যাদি। তবে মান্দারমনিতে পাওয়া তিমিটি ঠিক কোন প্রজাতির তা পরিস্কার নয়।
এর আগে ২০১২ এর ১০ ই ডিসেম্বর দীঘাতে এই ধরনের একটি তিমির মৃতদেহ মিলেছিলো। সমুদ্র উপকূল থেকে ৪০ নটিক্যাল মাইল দূরে প্রশান্ত মহাসাগরীয় এই তিমিটি ছিল ৪৫ ফুট লম্বা এবং ১০ ফুট চওড়া। ১৮ টন ওজন ছিল। মাঝসাগরে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের জালে আটকে গিয়েছিলো সেটি। তাঁরাই নিয়ে আসে উপকূলে। সেসময় সমুদ্র উপকূলেই বালি খুঁড়ে কবর দেওয়া হয়েছিল সেই মৃত তিমিটিকে। পরে তাঁর কঙ্কালগুলিকে সংগ্রহ করে প্রায় লক্ষাধিক টাকা খরচ করে দীঘাতে বিশেষ উপায়ে সংরক্ষিত করা হয়েছে ২০১৭ এর ১৩ ই জুন। আজও দীঘায় আগত পর্যটকরা তা দেখতে পান।
কিন্তু মান্দারমনিতে ভেসে আসা মৃত তিমির কপালে কি জুটবে, কেউ জানে না। এই ধরনের তিমিকে বলা হয় 'কোলফিস'। অনেকটা 'কডফিস' এর সমগোত্রীয়। জাপানিরা বলে Iwashi kujira এবং Sanriku। সার্ডিন হোয়েল নামেও চেনে অনেকেই। পরিনত পুরুষ তিমির দৈর্ঘ্য ৪৫ ফুট এবং স্ত্রী তিমির দৈর্ঘ্য ৪৯ ফুট হয়।
এঁরা একা একা ঘুরতে পছন্দ করে। সমুদ্রের উপরিতলে এঁরা খাদ্য সন্ধান করে। প্রতিদিন প্রায় ৯০০ কেজি খাবারের প্রয়োজন হয় এঁদের। মূলতঃ আটলান্টিক মহাসাগরের এই তিমি ভারত মহাসাগর সহ শ্রীলঙ্কা উপকূলেও পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন তিমি বিশেষজ্ঞরা। প্রধানত বিপুল পরিমাণ খাবারের প্রয়োজনে এঁরা এক স্থান থেকে অন্যস্থানে যায়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে কোনোভাবে বঙ্গোপসাগরে এসে গিয়েছিল। সেখানে হয় খাদ্যের অভাবে কিংবা কোনো মাছ ধরা ট্রলার বা জাহাজের প্রপেলারের ধাক্কায় মারা গিয়েছে অবশেষে।
No comments