*গেঁওখালিঃ* বর্তমান রাজ্যজুড়ে করোনার আবহে লকডাউন এর সময়সীমা ইতিমধ্যে বৃদ্ধি করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ একেবারে ঘর বন্দি হয়ে পড়েছেন। ফলে রুজি-রুটির একেবারে টান পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নদীতে দিনে দুই …
*গেঁওখালিঃ* বর্তমান রাজ্যজুড়ে করোনার আবহে লকডাউন এর সময়সীমা ইতিমধ্যে বৃদ্ধি করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ একেবারে ঘর বন্দি হয়ে পড়েছেন। ফলে রুজি-রুটির একেবারে টান পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নদীতে দিনে দুই বেলা মাছ ধরে কোনরকম দিন চলছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার গেঁওখালির গ্রামের একাংশ মানুষের।
গেঁওখালি পাশ দিয়ে বয়ে গেছে রূপনারায়ন নদী। যে নদীতে এখন সকাল থেকেই কয়েকশো মানুষ মাছ ধরে পেট চালানোর তাগিদে জাল নিয়ে নেমে পড়ছেন। আর সেই মাছ বিক্রি করেই কোনোমতে দিন চলছে গেঁওখালি প্রত্যন্ত গ্রামগুলির মানুষদের। নাটশাল, শুকলালপুর, ভাঙাগড়া রবিতে গেঁওখালি গ্রামগুলোর একাধিক মানুষ শ্রমিক শ্রেণী ভুক্ত। বর্তমানে করোনা আতঙ্কের আবহে কল কারখানা থেকে সমস্তকিছু একেবারে বন্ধ। লকডাউনের শুরু থেকে রোজগার একেবারে উঠেছে লাটে। ফলে খাবে কি? সঞ্চয়ে যেটুকু ছিল তাও আজ শেষ। দিন আনা দিন খাওয়া মানুষরা এখন করুণ হয়ে রূপনারায়ণ নদীতে হাতে জাল নিয়ে নেমে পড়ছেন মাছ ধরতে। সকালে সূর্য উঠলে নেমে পড়েন নদীতে, দুপুরবেলা বাড়িতে গিয়ে নাওয়া-খাওয়া সেরে ফের নদীই সঙ্গী হয়ে ওঠে গ্রামের এই সকল গরীব দুঃখী মানুষের। সরকারের তরফ থেকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু তা দিয়েও বা কদিন ভরবে পেট? মাঠে পড়ে রয়েছে চাষের ধান। তা কাটতেও এখন করোনা আতঙ্কে শ্রমিক মিলছে না। ফলে নদী থেকে আহরণ করা মাছ বিক্রি করে যেটুকু অর্থ পাওয়া যাচ্ছে তা দিয়েই চাল-ডাল কিনে কোনরকম পেটের এক কোণে জুটছে খাদ্য। মাছ ধরতে আসা এক মহিলা চন্দনা সী বলেন, "বাড়ির সবাই একন বেকার হয়ে গেছে। চাল- ডালও শেষ। তাই কোনোরকম এভাবে বাড়ির সবাই মাছ ধরে সংসার চালাচ্ছি"। গ্রামের মাঝবয়সী অ্যালয় শা বলেন, "এখন একেবারে বেকার হয়ে গিয়েছি। পরিবারের মুখে খাত তুলে দিতে এখন আমি এভাবে নদীতে নেমে মাছ ধরছি"।
সবমিলিয়ে বলা চলে লকডাউনে এক শ্রেণীর মানুষ ছুটির আমেজে উপভোগ করলেও দিন আনা দিন খাওয়া মানুষের অন্ন জোগাড় করতে ছুটছে রাত।
No comments